চ্যাম্পিয়ন্স লিগ: মোরাতার শেষ মুহূর্তের গোলে জুভেন্টাসের জয়

183

তুরিন, ২৫ নভেম্বর ২০২০ (বাসস) : আলভারো মোরাতার শেষ মুহূর্তের গোলে হাঙ্গেরিয়ান ক্লাব ফেরেনভারোসকে ২-১ গোলে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ১৬ নিশ্চিত করেছে জুুেভন্টাস। মঙ্গলবার তুরিনের আলিয়াঁজ এরিনাতে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোর গোলে সমতায় ফিরেছিল জুভরা।
এর আগে ১৯ মিনিটে মিরটো উজুনি গোল করে ফেরেনভারোসকে এগিয়ে দিলে পুরো জুভেন্টাস শিবিরে হতাশা নেমে আসে। কিন্তু আরো একবার দলের ত্রাতা হয়ে দেখা দেন রোনাল্ডো। মৌসুমে এটি ছিল চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তার প্রথম গোল। এ নিয়ে প্রতিযোগিতায় পর্তুগীজ এই তারকার গোলসংখ্যা দাঁড়ালো ১৩১। বদলী বেঞ্চ থেকে উঠে এসে মোরাতা ইনজুরি টাইমে জয়সূচক গোলটি করেছেন। এবারের মৌসুমে এনিয়ে গ্রুপ পর্বে পঞ্চম গোল করলেন স্প্যানিশ এই তারকা।
ম্যাচ শেষে তারকা এই স্প্যানিয়ার্ড বলেছেন, ‘আমার গোলটির পিছনে আজ ভাগ্য সহায় ছিল। কিন্তু কেউই আসলে ভাগ্যের কথা মনে রাখে না। সবাই গোলটি কথাই মনে রাখে। ম্যাচটা বেশ কঠিন ছিল। আর এ কারনেই এটা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রতিযোগিতা।’
গত মৌসুমে লিঁওর কাছে পরাজিত হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ১৬ থেকে বিদায় নিতে হয়েছিল জুভেন্টাসকে। যে কারনে তৎকালীন কোচ মরিজিও সারিরও বিদায় ঘটেছিল। জুভেন্টাসের নতুন কোচ হিসেবে আন্দ্রে পিরলোর জন্য নক আউট পর্বে প্রথম সাফল্য। এ সম্পর্কে পিরলো বলেছেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ছিল একটি ভিন্ন আবহ নিয়ে আমরা ম্যাচটি শুরু করবো। কিন্তু হঠাৎ করেই দেখা গেল ম্যাচটি আমাদের জন্য ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে। আমরা আজ অনেক ধীরে খেলেছি, খুব একটা আক্রমনাত্মক ছিলাম না। অনেকগুলো ম্যাচের পরে এই উপলব্দি হয়েছে, সব ম্যাচে একই আবহ বজায় রাখা সম্ভব নয়। এক গোলে পিছিয়ে থেকে দারুনভাবে দল লড়াইয়ে ফিরে এসেছে এবং শেষ পর্যন্ত জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে। আমরা জিতেছি, এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’
বুদাপেস্টে ঘরের মাঠে আগের ম্যাচের ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত হবার পর ১৯৯৫ সালের পর প্রথমবারের মত গ্রুপ পর্বে জয়ের স্বপ্নে বিভোর ছিল ফেরেনভারোস। ১৯ মিনিটে এগিয়ে গিয়ে সেই স্বপ্ন আরো জোড়ালো হয়। ম্যাচ শেষে কোচ শেরি রেব্রোভ বলেছেন, ‘এই ধরনের ফলাফল শুধুমাত্র হতাশাই বাড়ায়। খেলোয়াড়রাও হতাশ হয়ে পড়েছে। কিন্তু তারপরেও আমি বলবো যেভাবে তারা খেলেছে তাতে গর্বিত হওয়া উচিত।’
গিওর্গিও চিয়েলিনি ও লিওনার্দো বনুচ্চি ইনজুরির কারণে দলে ছিলেন না। তবে আগস্টে কাঁধের ইনজুরির পর দলে ফিরেছিলেন মাথিয়াস ডি লিট। ডাচ ডিফেন্ডার ডানিলোর সাথে সেন্টার হাফে খেলেছেন। এ্যালেক্স সান্দ্রো ও হুয়ান কুয়াড্রডো খেলেছেন ফুল-ব্যাক পজিশনে। অধিনায়কের দায়িত্ব পেয়েছিলেন আর্জেন্টাইন তারকা পাওলো দিবালা। পিরলো বলেছেন, দিবালা খুব একটা ভাল খেলতে পারছে না। কিন্তু ক্রমেই সে উন্নতি করছে। তার মানের খেলোয়াড়ের জন্য বিষয়টা হতাশার হলেও দ্রুতই সে ফিরে আসবে বলে আমার বিশ্বাস।’
১৫ মিনিটে রোনাল্ডোর সহয়তায় দিবালা একটি গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু তার শট রুখে দেন গোলরক্ষক ডেনেস ডিবাস। চার মিনিট পর টোমকাচ এনগুয়েনের ডিফ্লেকটেড ক্রসে বল জালে জড়িয়ে ফেরেনভারোসকে এগিয়ে দেন উজুনি। ৩৩ মিনিটে অফসাইডের কারনে রোনাল্ডোর গোল বাতিল হয়ে যায়। কিন্তু পরের মিনিটে তিনি আর কোন ভুল করেননি। বাম পায়ের শক্তিশালী শটে তিনি ডিবাসকে কোন সুযোগই দেননি। করোনাভাইরাসের কারনে এই পর্তুগীজ তারকা প্রথম দুটি ম্যাচ খেলতে পারেননি। ঘরের মাঠে এটি তার ৭০তম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ গোল। এর মাধ্যমে তিনি লিওনেল মেসির রেকর্ড স্পর্শ করেছেন।
ঘন্টখানেক পর পিরলো তিনটি পরিবর্তন করে দল সাজান। দিবালা, বার্নারডেশী ও ওয়েস্টন ম্যাককেনির স্থানে মাঠে নামেন মোরাতা, ফেডেরিকো চিয়েসা ও ডিয়ান কুলুসেভিস্কি। ম্যাচ শেষের ১০ মিনিট আগে মোরাতা চিয়েসার ক্রস থেকে বল পোস্টে লাগান। কিন্তু কুয়াড্রাডোর ক্রস থেকে ইনজুরি টাইমে জুভেন্টাসকে গুরুত্বপূর্ণ তিন পয়েন্ট উপহার দিতে ভুল করেননি।