বাজিস-০১ বরগুনা-লেপ -তোশক শীতের শুরুতে লেপ-তোশক তৈরিতে ব্যস্ত বরগুনার কারিগররা

225

বাজিস-০১
বরগুনা-লেপ -তোশক
শীতের শুরুতে লেপ-তোশক তৈরিতে ব্যস্ত বরগুনার কারিগররা
বরগুনা, ২৪ নভেম্বর, ২০২০ (বাসস) : শীত এসে গেছে। এখনো দিনে গরম অনুভূত হয় তবে রাতে ঠান্ডা। আর ভোরে শীতল স্নিগ্ধ বাতাস, সাত-সকালে ঘাস-পাতার ওপর জমে থাকা শিশিরকণা জানিয়ে দেয় শীতের আগমনী বার্তা।
শীতের আগমনী বার্তার সাথে সাথে বরগুনায় লেপ-তোশক প্রস্তুতকারী ধুনকারদের মাঝে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। লেপ-তোশক প্রস্তুতকারী ধুনকাররা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। একইসঙ্গে গ্রামের বিভিন্ন পরিবারে পড়ে গেছে কাঁথা সেলাইয়ের ধুম।
লেপ-তোশক প্রস্তুতকারী বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা গেছে, মালিক-শ্রমিক, ধুনকাররা এখন তুলাধোনায়, লেপ-তোশক তৈরির সেলাইয়ের কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। তারা জানান, শীত মৌসুমের শুরুতেই ক্রেতারা লেপ-তোশকের দোকানে পছন্দমতো লেপ-তোশক তৈরির অর্ডার দিয়ে রেখেছেন।
ধুনকার, ব্যবসায়িদের কাছ থেকে জানা যায়, ভালো মুনাফা এবং বেশি বিক্রির আশায় দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। ক্রেতারাও লেপ-তোশক তৈরির জন্য ভিড় করছেন। শহরসহ উপজেলার ছোট-বড় হাটবাজারগুলোয় জাজিম, বালিশ, লেপ, তোশক তৈরি ও বিক্রির কাজে শতাধিক ধুনকার ব্যবসায়ি নিয়োজিত রয়েছেন।
ব্যবসায়িরা জানান, শীতের তীব্রতা বাড়লে লেপ-তোশক তৈরি ও বিক্রি হয় বেশি। বরগুনা জেলা শহরসহ ছয়টি উপজেলায় ৩ শ টির বেশী লেপ-তোশকের দোকান রয়েছে। এসব দোকানের কারিকররা এখন খুবই কর্মব্যস্ত।
আমতলী শহরের লেপ-তোশক দোকানের মালিক বশির মিয়া জানান, সময়মতো লেপ-তোশক ডেলিভারি দেয়ার জন্য তারা এখন ব্যতিব্যস্ত। সারা বছরের মধ্যে এ শীত মৌসুমেই তারা কাজের বেশি অর্ডার পান। ফলে এ সময় তাদের কাজ বেশি করতে হয়। এক মৌসুমের আয় দিয়েই তাদের পুরো বছর চলতে হয়।
ইসরাফিল মিয়া নামের বেতাগী শহরের অন্য এক দোকান মালিক জানান, কাপড়ের মান বুঝে লেপ-তোশকের দাম নির্ধারণ করা হয়। তারা ৪-৫ হাত লেপ-তোশক ১০০০ থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি করে থাকেন। গত বছরগুলোর তুলনায় এ বছর লেপ-তোশকের দাম একটু বেশি পড়বে। কেননা করোনা পরিস্থিতিতে এ বছর কাপড় ও তুলা বাড়তি দামে কিনতে হয়েছে।
বরগুনার কারিগর সিদ্দিক মিয়া জানান, শীত শুরু হতে না হতেই তাদের কর্মব্যস্ততা বেড়ে গেছে। তারা ৪-৫ হাতের একটি লেপ ২ ঘণ্টায় তৈরি করে দিতে পারেন। লেপ-তোশকের দোকানের মালিকরা আরও জানান, শীত মৌসুমে প্রত্যেকটি দোকানে ২ শতাধিক লেপ তোশক ও জাজিম কেনা-বেঁচা হয়।
এদিকে শীত মৌসুম শুরুতেই জেলার বিভিন্ন গ্রামের গৃহবধূরা কাঁথা সেলাই শুরু করে দিয়েছেন। অনেক পরিবারই রয়েছে যারা কাঁথা সেলাইয়ের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। বৈঠাকাঠা গ্রামের মরিয়ম বেগম জানান, শহরের অনেক মধ্যবিত্ত পরিবার শীত মৌসুম আসার সঙ্গে সঙ্গেই তাদের কাছে কাঁথা সেলাই করে দেয়ার জন্য কাপড় সরবরাহ করেন। নকশা ভেদে এক একটি কাঁথা সেলাই করতে মজুরি বাবদ দেয়া হয় ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। সাংসারিক ঝক্কিঝামেলা থাকলেও তার মতো অনেক গৃহবধু কাজের ফাঁকে ফাঁকে এভাবে প্রতিবছর ১০ থেকে ১৫ টি কাঁথা সেলাই করে নগদ আয় করছেন।
বাসস/সংবাদদাতা/১০২৫/নূসী