বাসস প্রধানমন্ত্রী-২ : আওয়ামী লীগ সরকার সবসময়ই জ্বালানি নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

212

বাসস প্রধানমন্ত্রী-২
প্রধানমন্ত্রী- জ্বলানি নিরাপত্তা
আওয়ামী লীগ সরকার সবসময়ই জ্বালানি নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে : প্রধানমন্ত্রী
ঢাকা, ২৮ আগস্ট ২০১৮ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আওয়ামী লীগ সরকার সবসময়ই দেশের জ্বালানি নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে।
আগামীকাল ৯ আগস্ট জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস উপলক্ষে আজ এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
প্রতি বছরের মতো এবারও ৯ আগস্ট জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস, ২০১৮ পালন করা হচ্ছে জেনে প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর জ্বালানি খাতের উন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তিনি ১৯৭৫ সালের ৯ আগস্ট ব্রিটিশ তেল কোম্পানি শেল অয়েল-এর কাছ থেকে ৫টি গ্যাসক্ষেত্র ক্রয় করে রাষ্ট্রীয় খাতে অন্তর্ভুক্ত করেন। ফলে দেশের সম্পদের ওপর জনগণের ব্যবহারের অধিকার নিশ্চিত হয়। তাঁর দূরদর্শী সিদ্ধান্ত জাতীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক ও সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলে। এ গ্যাসক্ষেত্রগুলো রাষ্ট্রীয় মালিকানায় নেয়ার পর থেকে জ্বালানি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা রাখছে। দেশের অর্থনৈতিক বিকাশ ত্বরান্বিত করছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বিগত সাড়ে নয় বছরে নতুন নতুন কূপ খননসহ গ্যাস সেক্টরে প্রভূত উন্নয়নমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে গ্যাস উৎপাদন ও সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে দৈনিক গ্যাস উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৭৪৪ মিলিয়ন ঘনফুট, যা বর্তমানে ২ হাজার ৭৫০ মিলিয়ন ঘনফুটে উন্নীত হয়েছে। এতে দেশে শিল্পায়ন দ্রুততর হচ্ছে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে মোট ৯টি নতুন গ্যাস স্ট্রাকচার আবিষ্কারসহ ৪টি নতুন গ্যাস ক্ষেত্র সুন্দলপুর, শ্রীকাইল, রূপগঞ্জ ও ভোলা নর্থ-১ আবিষ্কৃত হওয়ায় বর্তমানে গ্যাসক্ষেত্রের সংখ্যা ২৭ এ উন্নীত হয়েছে। বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ড সম্প্রসারণ এবং বিবিয়ানা-ধনুয়া গ্যাস সঞ্চালন পাইপ লাইনে গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে। হবিগঞ্জের মুচাই, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে এবং টাঙ্গাইলের এলেঙ্গায় কম্প্রেসর স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে। গ্যাস নেটওয়ার্ক রাজশাহীতে সম্প্রসারণ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাপেক্সের কারিগরি সক্ষমতা বৃদ্ধিতে গভীর কূপ খননের ক্ষমতাসম্পন্ন ৪টি আধুনিক ও প্রযুক্তিসম্পন্ন রিগ ক্রয় করাসহ অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ক্রয় করা হয়েছে। রশিদপুরে দৈনিক ৩ হাজার ৭৫০ ব্যারেল ক্ষমতাসম্পন্ন কনডেনসেট ফ্রাকসনেশন প্লান্ট নির্মাণের ফলে আহরিত গ্যাস উপজাত কনডেনসেট প্রক্রিয়াকরণ করে পেট্রোলিয়াম পণ্য উৎপাদন করা হচ্ছে। এছাড়া, রশিদপুরে আরো একটি দৈনিক ৪ হাজার ব্যারেল ক্ষমতাসম্পন্ন ফ্রাকসনেশন প্লান্ট শিগগিরই উৎপাদনে আসবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দেশজ প্রাকৃতিক গ্যাস ও কয়লার ব্যবহারের পাশাপাশি এলএনজি আমদানি করে গ্যাসের ঘাটতি পূরণের পদক্ষেপ নিয়েছি। ২০৪১ সাল পর্যন্ত গ্যাসের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে স্থল ও ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। দেশীয় গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ২০২১ সালের মধ্যে ১০৮টি গ্যাসকূপ খননের পরিকল্পনাও হাতে নেয়া হয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার বঙ্গোপসাগরের বিশাল সমুদ্র এলাকায় গ্যাস ও তেল অনুসন্ধান এবং উৎপাদন কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। ‘ব্লু-ইকোনমি সেল’ গঠন এবং গভীর ও অগভীর সমুদ্রের ৪টি ব্লকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণের লক্ষ্যে কয়েকটি বিদেশি তেল কোম্পানির সাথে ইতিমধ্যে পিএসসি স্বাক্ষরিত হয়েছে এবং সেসব ব্লকে অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
প্রাকৃতিক গ্যাসসহ সকল জ্বালানির অপচয় রোধ করে এর যথাযথ ও সাশ্রয়ী ব্যবহার নিশ্চিত করে রূপকল্প ২০২১ ও রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে অবদান রাখতে তিনি সকলকে আহ্বান জানান।
বাসস/তবি/এমআর/১৮১০/কেএমকে