চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাঁচ মাসে সর্বোচ্চ

319

চট্টগ্রাম, ২৩ নভেম্বর, ২০২০ (বাসস) : সংখ্যা ও হার দু’ক্ষেত্রেই চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ রেকর্ড হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ২৪২ জন জীবাণুবাহক শনাক্ত হন। সংক্রমণ হার ১৯ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। এ সময়ে কোনো করোনা রোগীর মৃত্যু হয়নি।
উল্লেখ্য, রোববার শনাক্ত জীবাণুবাহকের সংখ্যা ও হার গত জুন মাসের পর একদিনের সর্বোচ্চ রেকর্ড। এর আগে ১৯ নভেম্বর এ সময়ের সর্বোচ্চ ১৯৭ জনের সংক্রমণ ধরা পড়ে। ১৬ নভেম্বর সংক্রমণ হার সবচেয়ে বেশি ১৭ দশমিক ১৪ শতাংশ নির্ণিত হয়। এছাড়া, সংক্রমণের ক্রমবর্ধমান ধারায় ১৬ নভেম্বর ১৮১ জন, ১৮ নভেম্বর ১৭৮ জন, ১৯ নভেম্বর ১৬১ জন ও ১৭ নভেম্বর সংক্রমিত ১৫৭ জন আক্রান্ত হওয়ার তথ্য মেলে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সর্বশেষ রিপোর্টে বলা হয়, রোববার নগরীর সাতটি ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামের ১ হাজার ২৭০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে নতুন ২৪২ জনের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। সংক্রমণ হার ১৯ দশমিক ০৫ শতাংশ। এতে শহরের বাসিন্দা ২০০ জন এবং এগারো উপজেলার ৪২ জন। ফলে এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ২৩ হাজার ৮৭০ জন। সংক্রমিতদের মধ্যে শহরের ১৭ হাজার ৮৫১ জন ও গ্রামের ৬ হাজার ১৯ জন। উপজেলা পর্যায়ে গতকাল শনাক্ত ৪২ জনের মধ্যে হাটহাজারীতে ১১ ও ফটিকছড়িতে ১০ জন, রাউজানে ৮ জন, পটিয়ায় ৩ জন, চন্দনাইশ, সীতাকু- ও সন্দ্বীপে ২ জন করে এবং রাঙ্গুনিয়া, লোহাগাড়া, বাঁশখালী ও আনোয়ারায় ১ জন করে রয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় কারো মৃত্যু হয়নি। ফলে জেলায় মোট মৃতের সংখ্যা ৩১৩ জনই রয়েছে। এর মধ্যে ২১৯ জন শহরের ও ৯৪ জন বিভিন্ন উপজেলার। সুস্থতার ছাড়পত্র দেয়া হয় ৩৭৬ জনকে। ফলে মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা ১৯ হাজার ৪৯৫ জনে উন্নীত হলো। হোম আইসোলেশন বা কোয়ারেন্টাইনে যুক্ত হন ৩০ জন ও ছাড়পত্র নেন ১৬ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে আছেন ১২১৩ জন।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ৩৫৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এখানে ৫৯ জন জীবাণুবাহক চিহ্নিত হন। ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে ২৭৭ নমুনায় ১৪ জনের রেজাল্ট পজিটিভ আসে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ল্যাবে ১৪৮টি নমুনার ৫৮টিতে করোনারভাইরাস পাওয়া যায়। ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে (সিভাসু) ৪২ জনের নমুনায় ৯ জন আক্রান্ত শনাক্ত হন। নগরীর বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরিতে (আরটিআরএল) কোনো নমুনা পরীক্ষার জন্য দেয়া হয়নি।
বেসরকারি তিন ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরনে ২৭৩, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ১৩৭ এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ৩১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে যথাক্রমে ৫০, ৪৬ ও ৬ জনের শরীরে ভাইরাস থাকার প্রমাণ মেলে।
চট্টগ্রামের ৬টি নমুনা এদিন কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হলে পরীক্ষায় সবক’টিরই রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে চমেকে ১৬ দশমিক ৫৭, বিআইটিআইডি’তে ৫ দশমিক ০৫ শতাংশ, চবি’তে ৩৯ দশমিক ১৯, সিভাসু’তে ২১ দশমিক ৪৩, ইম্পেরিয়ালে ৩৩ দশমিক ৬৭, মা ও শিশুতে ১০ দশমিক ৩৫ এবং শেভরনে ১৮ দশমিক ৩১ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়। কক্সবাজার মেডিকেলের সংক্রমণ হার শূন্য শতাংশ।