জুনের পর চট্টগ্রামে করোনার সর্বোচ্চ সংক্রমণ

251

চট্টগ্রাম, ২০ নভেম্বর, ২০২০ (বাসস) : চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে সাড়ে চার মাসের সর্বোচ্চ সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার ১৯৭ জনের নমুনায় ভাইরাসের উপস্থিতি মেলে। সংক্রমণ হার ১৩ দশমিক ১৫ শতাংশ। এদিন করোনাক্রান্ত একজনের মৃত্যুও হয়।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার শনাক্ত জীবাণুবাহকের সংখ্যা জুন মাসের পর সর্বোচ্চ। এর আগে ১৬ নভেম্বর সংক্রমিতের সংখ্যা সাম্প্রতিক সময়ের সর্বোচ্চ ১৮১ জন হয়েছিল। সেদিন সংক্রমণ হারও ছিল সাড়ে চার মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি (১৭ দশমিক ১৪ শতাংশ)। ১৯ নভেম্বর প্রকাশিত রিপোর্টে ১৬১ জনের নমুনায় করোনাভাইরাস শনাক্তের তথ্য জানানো হয়। সংক্রমণ হার ছিল ১০ দশমিক ৭২ শতাংশ। ১৮ নভেম্বর ১৭৮ জনের সংক্রমণ ধরা পড়ে, হার ছিল ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশ। ১৭ নভেম্বর সংক্রমিত ১৫৭ জন ও হার ১১ দশমিক ৪২ শতাংশ নির্ণিত হয়।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সর্বশেষ রিপোর্টে বলা হয়, নগরীর আটটি ও কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামের ১ হাজার ৪৯৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে নতুন ১৯৭ জন পজিটিভ শনাক্ত হন। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ১৭৮ জন ও এগারো উপজেলার ১৯ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে হাটহাজারী ও পটিয়ার ৪ জন করে, ফটিকছড়ি ও সন্দ্বীপের ২ জন করে, সীতাকু-, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, বোয়ালখালী, আনোয়ারা, বাঁশখালী ও লোহাগাড়ার ১ জন করে রয়েছেন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ২৩ হাজার ৪১৯ জন। এর মধ্যে শহরের ১৭ হাজার ৪৭৩ ও গ্রামের ৫ হাজার ৯৪৬ জন।
বৃহস্পতিবার করোনাক্রান্ত একজনের মৃত্যু হয়। ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে এখন ৩১২ জন। এতে শহরের বাসিন্দা ২১৮ জন ও বিভিন্ন উপজেলার ৯৪ জন। সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন নতুন ৫০৫ জন। এতে মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা ১৮ হাজার ২৯৭ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৩ হাজার ৩৯৭ জন, ঘরে থেকে ১৪ হাজার ৯০০ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ২৮ জন, ছাড়পত্র নেন ২৫ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১ হাজার ১৭২ জন।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে ৫৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১১ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ৫১৩ জনের নমুনার মধ্যে ১০৫ জন করোনাক্রান্ত শনাক্ত হন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ল্যাবে ১২২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে ১৭ জন জীবাণুবাহক বলে চিহ্নিত হন। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ল্যাবে ৩২ টি নমুনার ৩ টিতে ভাইরাস পাওয়া যায়। নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ ২ টি নমুনার ১ টির রেজাল্ট পজিটিভ আসে।
নগরীর তিন বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির মধ্যে ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ১৩৯ টি নমুনায় ৩৫, শেভরনে ৮৩ টির মধ্যে ১৬ এবং মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ১৮টি নমুনা পরীক্ষা করে ৯ টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এদিন চট্টগ্রামের একজনের নমুনা কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। এটির ফলাফল পজিটিভ আসে।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট পর্যবেক্ষণে বিআইটিআইডি’তে ১ দশমিক ৮৭ শতাংশ, চমেকে ২০ দশমিক ৪৭, চবিতে ১৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ, সিভাসু’তে ৯ দশমিক ৩৭, ইম্পেরিয়ালে ২৫ দশমিক ১৮, শেভরনে ১৯ দশমিক ২৮ এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ৫০ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়। এছাড়া, আরটিআরএলে ৫০ শতাংশ ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে শতভাগ সংক্রমণ রেকর্ড হয়।