জয়পুরহাটে ৪০ হাজার ৫শ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ

789

জয়পুরহাট, ১৯ নভেম্বর, ২০২০ (বাসস)ঃ আলু উৎপাদনে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা হিসেবে পরিচিত জয়পুরহাটে চলতি মৌসুমে ৪০ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। আলু চাষ সফল করতে ব্যাপক কর্মসূচী হাতে নিয়েছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র বাসস’কে জানায়, নিবিড় বার্ষিক ফসল উৎপাদন কর্মসূচীর আওতায় চলতি ২০২০-২১ মৌসুমে জেলায় ৪০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলু লাগানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতো মধ্যে ৪৫ ভাগ অর্থাৎ ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে আলু লাগানো সম্পন্ন হয়েছে বলে জানায় কৃষি বিভাগ। উপজেলা ভিত্তিক আলু লাগানোর লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রয়েছে জয়পুরহাট সদর উপজেলায় ৭ হাজার ২০০ হেক্টর, পাঁচবিবি উপজেলায় ৭ হাজার হেক্টর, ক্ষেতলাল উপজেলায় ৯ হাজার হেক্টর, কালাই উপজেলায় ১১ হাজার ১০০ হেক্টর ও আক্কেলপুর উপজেলায় ৬ হাজার ২০০ হেক্টর জমি। এতে আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১০ লাখ ১২ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন। যা জেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্যান্য জেলায় পাঠানো সম্ভব হয়ে থাকে।
কৃষি বিভাগ জানায়, আলু চাষ সফল করতে জেলায় সারের মজুত পর্যাপ্ত রয়েছে। নভেম্বর মাসের মজুত সারের পরিমান ছিল ইঊরিয়া ৩ হাজার ৭৫৭ মে. টন, টিএসপি ২ হাজার ৩৬৬ মে.টন, এমওপি ৩ হাজার ৩৫০ মে. টন ও ডিএপি ২ হাজার ১৭৫ মে. টন। এর সঙ্গে ডিসেম্বর মাসের চাহিদার মধ্যে রয়েছে ইঊরিয়া ৫ হাজার ৩৪৫ মে. টন, টিএসপি এক হাজার ৩১৮ মে. টন, এমওপি এক হাজার ৯৩১ মে. টন ও ডিএপি এক হাজার ৭৮৮ মে. টন সার। জেলায় আলু বীজ নিয়ে অধিক মুনাফালোভী কিছু ব্যবসায়ী সংকট সৃষ্টির চেষ্টা করলেও সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপে তা বন্ধ হয়ে যায়। কৃষি বান্ধব সরকারের বিভিন্ন ধরনের আগাম প্রস্তুতি গ্রহণের ফলে রাসায়নিক সারের কোন প্রকার সংকট সৃষ্টি হয়নি। বিএডিসি’র বীজ বিপণন বগুড়া ও জয়পুরহাট অঞ্চলের উপ-পরিচালক মোহা: শহিদুল্লাহ আল মামুন বলেন, উন্নত জাতের ‘এ’ গ্রেড আলুবীজ প্রতিমণ ১ হাজার ৮৮০ এবং বি গ্রেড ১ হাজার ৮৪০ টাকা কৃষকের কাছে বিক্রির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলায় মোট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ডিলার পর্যায়ে ১ হাজার ৮০০ এবং কৃষক পর্যায়ে ৪০০ টন। বাজারে পর্যাপ্ত বিএডিসি আলুবীজ সরবরাহ রয়েছে। ভালো মানের কারণে বিএডিসির আলুবীজের যে পরিমাণ চাহিদা থাকে মজুত না থাকায় তা সরবরাহ করা যায় না। তবে আগামীতে বরাদ্দ বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হবে।।
জেলায় আলু চাষ সফল করতে কৃষক পর্যায়ে প্রশিক্ষণসহ উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক মনিটরিং ও কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করছেন বলে জানান, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক স.ম মেফতাহুল বারি। জয়পুরহাটের আলু উন্নত মানের হওয়ায় গত বছর দেশের গন্ডি পেরিয়ে ৯ টি দেশে রপ্তানী করা হয়। দেশ গুলো হচ্ছে মালেশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, জাপান, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, কুয়েত, নেপাল ও রাশিয়া। প্রাচীন বরেন্দ্র অঞ্চল হিসেবে পরিচিত জয়পুরহাট জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক পরিমাণ জমিতে আলুর চাষ হয়ে থাকে। গত বছর ৩৮ হাজার ৫শ ৩০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছিল। এতে আলু উৎপাদন হয় ৮ লাখ ১৫ হাজার মে: টন। ফলন ভােলা হওয়ায় জেলায় গ্যানোলা, মিউজিকা, ডায়মন্ড, এস্টোরিকস, কার্ডিনাল, ও রোজেটা জাতের আলু বেশি চাষ করে থাকেন কৃষকরা। জেলার ১৫ টি কোল্ড ষ্টোরেজে প্রায় দেড় লাখ মে: টন আলু সংরক্ষণ করা সম্ভব হয় বলে জানায়, কৃষি বিভাগ।