উরুগুয়েকে ২-০ গোলে পরাজিত করেছে ব্রাজিল, জয়ে ফিরেছে আর্জেন্টিনা

293

সাও পাওলো, ১৮ নভেম্বর ২০২০ (বাসস) : উরুগুয়েকে ২-০ গোলে পরাজিত করে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে দক্ষিণ আমেরিকান অঞ্চলে নিজেদের শতভাগ জয়ের রেকর্ড ধরে রেখেছে ব্রাজিল। আরেক ম্যাচে পেরুকে একই ব্যবধানে পরাজিত করে জয়ের ধারায় ফিরেছেন আরেক ফেবারিট আর্জেন্টিনা।
আর্থার ও রিচারলিসনের প্রথমার্ধের দুই গোলে মন্টিভিডিওতে স্বাগতিক উরুগুয়ের বিপক্ষে ব্রাজিলের জয় নিশ্চিত হয়। ৭১ মিনিটে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের স্ট্রাইকার এডিনসন কাভানি লাল কার্ড পেলে ১০ জনের দলে পরিনত হয়েছিল স্বাগতিকরা। যে কারনে বাকিটা সময় তাদের ১০জন নিয়েই ব্রাজিলকে প্রতিরোধ করতে হয়েছে।
এদিকে লিমাতে ইন্টার মিলানের লটারো মার্টিনেজ ও নিকোলাস গঞ্জালেজের গোলে জয় নিশ্চিত করেছে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা। পুরো ম্যাচে কখনই তাদেরকে খুব একটা সমস্যায় ফেলতে পারেনি পেরু।
আরেক ম্যাচে ঘরের মাঠে কলম্বিয়াকে ৬-১ গোলে বিধ্বস্ত করেছে ইকুয়েডর। কঠিন লড়াইয়ের পর প্যারাগুয় ও বলিভিয়া ২-২ গোলের ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছে। একমাত্র দক্ষিণ আমেরিকান দল হিসেবে কখনই বিশ^কাপের মূল পর্বের টিকিট না পাওয়া ভেনেজুয়েলা চিলিকে ২-১ গোলে পরাজিত করে বাছাইপর্বে প্রথম পয়েন্ট তুলে নিয়েছে।
মন্টিভিডিওতে এই জয়ে চার ম্যাচে শতভাগ সাফল্যসহ ১২ পয়েন্ট নিয়ে ব্রাজিল টেবিলের শীর্ষে রয়েছে। পেরুকে হারিয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আর্জেন্টিনা। ৯ পয়েণ্ট নিয়ে বিস্ময়করভাবে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে ইকুয়েডর। ৬ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে রয়েছে উরুগুয়ে। গোল ব্যবধানে তাদের থেকে এগিয়ে রয়েছে প্যারাগুয়ে।
রাউন রবিন লিগ পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত এই বাছাইপর্ব থেকে শীর্ষ চারটি দল ২০২২ সালের কাতারে খেলার সরাসরি যোগ্যতা অর্জন করবে। ৫ম স্থানে দলটিকে মূল পর্বে যেতে হলে ওশেনিয়া অঞ্চলের বাছাই দলটির বিপক্ষে প্লে-অফ ম্যাচ খেলতে হবে।
পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল প্রথমার্ধে দুই গোল দিয়ে এগিয়ে থাকায় জয়টা হয়তো নিশ্চিত হয়েছে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে উরুগুয়ে দুটি শট পোস্টে লাগিয়ে সমতা ফেরাতে ব্যর্থ হয়েছে। একইসাথে এই জয়ের মাধ্যমে উরুগুয়ের বিপক্ষে ব্রাজিল তাদের জয়ের রেকর্ডও আরো বাড়িয়ে নিল। ২০০১ সালের পর থেকে উরুগুয়ের কাছে পরাজিত হয়নি সেলেসাওরা।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় কাল মাঠে ছিলেন না উরুগুইয়ান তারকা লুইস সুয়ারেজ। তার উপর ম্যাচ শেষের ২০ মিনিট আগে কাভানির মাঠ ত্যাগ উরুগুয়ের জন্য রাতটা আরো বেশী অস্বস্তিকর করে তুলেছিল। চিলিয়ান রেফারি রবার্তো টোবার রিবারলিসনকে গোঁড়ালিতে আঘাত করার অপরাধে কাভানিকে হলুদ কার্ড দেখিয়েছিলেন। কিন্তু ভিএআর পুনরায় পর্যবেক্ষন করে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে লাল কার্ড দেখালে মাঠ ত্যাগে বাধ্য হন কাভানি।
ম্যাচ শুরুর দুই মিনিটেই মধ্যেই এগিয়ে যাবার সুযোগ নষ্ট করে ব্রাজিল। গাব্রিয়েল জেসুসের শট দারুন দক্ষতায় রুখে দেন উরুগুয়ের গোলরক্ষক মার্টিন কাম্পানা। উরুগুয়ের ২১ বছর বয়সী বেনফিকা তারকা ডারউইন নানেজ ব্রাজিলের ফুল-ব্যাক ডানিলোকে কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত এডারসনকে পরাস্ত করতে পারেননি। ডানদিক থেকে ন্যাথান নানডেজের ক্রসে কাভানির হেড বারের উপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। ৩৪ মিনিটে আর্থারের শট ডিফেন্ডার হোসে গিমিনেজের পায়ে ডিফ্লেকটেড হলে কাম্পানা রক্ষা করতে ব্যর্থ হলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। দুই মিনিট পর লিভারপুল তারকা রবার্তো ফিরমিনোকে হতাশ করেন কাম্পানা। বিরতির ঠিক আগে রেনান লোডির লম্বা ক্রস থেকে এভারটন স্ট্রাইকার রিচারলিসন ব্যবধান দ্বিগুন করেন। ব্রাজিলের জার্সি গায়ে এটি রিচারলিসনের অষ্টম গোল।
লিমাতে প্রথমার্ধের দুই গোলে আর্জেন্টিনার সহজ জয় নিশ্চিত হয়। স্বাগতিক পেরুকে কাল একদিক থেকে সৌভাগ্যবান বলতেই হবে, দ্বিতীয়ার্ধে তাদের আরো বেশী গোল হজম করতে হয়নি। লিওনেল স্কালোনির অধীনে এনিয়ে ১১ ম্যাচ অপরাজিত থাকলো আর্জেন্টিনা।
১৭ মিনিটে গিওভানি লো সেলসোর চমৎকার এসিস্টে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেন নিকোলাস গঞ্জলেজ। ১১ মিনিট পর লিনার্দো পারেডেসের দুর্দান্ত পাসে ব্যবধান দ্বিগুন করেন লটারো মার্টিনেজ।
রিকার্ডো গার্সিয়ার অধীনে এ নিয়ে সাত ম্যাচে জয়বিহীন থাকলো পেরু। গার্সিয়ার নেতৃত্বেই ৩৬ বছর পর প্রথমবারের মত রাশিয়ায় বিশ^কাপ খেলার যোগ্যতা অর্জণ করেছিল পেরু।