বাসস দেশ-২৪ : এএসপি শিপন হত্যা : মাইন্ড এইড হাসপাতালের পরিচালক ফাতেমা রিমান্ডে

439

বাসস দেশ-২৪
শিপন হত্যা-রিমান্ড
এএসপি শিপন হত্যা : মাইন্ড এইড হাসপাতালের পরিচালক ফাতেমা রিমান্ডে
ঢাকা, ১৫ নভেম্বর, ২০২০ (বাসস) : সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার আনিসুল করিম শিপন হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত মাইন্ড এইড হাসপাতালের পরিচালক ফাতেমা খাতুনের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ রোববার তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তার বিরুদ্ধে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম বাকি বিল্লাহ চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) ঢাকা মহানগর হাকিম দেবদাস চন্দ্র অধিকারীর আদালতকে ফাতেমা খাতুনের অসুস্থ হওয়ার বিষয়টি অবহিত করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদাবর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) ফারুক মোল্লা। এ সময় ফাতেমা খাতুনকে আদালতে হাজির করতে হাজতি পরোয়ানা ইস্যুর আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। চিকিৎসা শেষে সুস্থতা সাপেক্ষে আদালতে সোপর্দ করলে ফাতেমা খাতুনের বিরুদ্ধে হাজতি পরোয়ানা ইস্যুর আদেশ দেন আদালত।
আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ফাতেমা খাতুনকে গ্রেফতারের পর ১২ নভেম্বর আদাবর থানায় আনা হয়। আগে থেকে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত। থানা হেফাজতে থাকাকালীন ১৩ নভেম্বর দুপুর ১২টার দিকে বুকে ব্যথা অনুভব করলে তাকে চিকিৎসার জন্য জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে নেয়া হয়। অধ্যাপক ডাক্তার গোলাম আজমের অধীনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।
এদিকে মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) হাসপাতালের মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জয়সহ ১০ জনের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
তারা হলেন- হাসপাতালের মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জয়, কো-অর্ডিনেটর রেদোয়ান সাব্বির, কিচেন শেফ মো. মাসুদ, ওয়ার্ডবয় জোবায়ের হোসেন, ফার্মাসিস্ট মো. তানভীর হাসান, ওয়ার্ডবয় মো. তানিম মোল্লা, সজীব চৌধুরী, অসীম চন্দ্র পাল, মো. লিটন আহাম্মদ ও মো. সাইফুল ইসলাম পলাশ।
এএসপি শিপনকে মারধরের ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে এই ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
গত সোমবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে মানসিক সমস্যার কারণে মাইন্ড এইড হাসপাতালে আসেন এএসপি আনিসুল করিম। অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তির কিছুক্ষণ পর তিনি মারা যান। হাসপাতালের অ্যাগ্রেসিভ ম্যানেজমেন্ট রুমে তাকে মারধরের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।
দীর্ঘক্ষণ অচেতন থাকা অবস্থায়ও তাকে ভর্তি কার্যক্রম করা হয়নি। পরে দুপুর ১২টার দিকে তাকে হাসপাতালের লোকজন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নিয়ে যায়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে নেয়ার আগেই শিপনের মৃত্যু (ব্রট ডেথ) হয়।
এ ঘটনায় আদাবর থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়। মঙ্গলবার আনিসুল করিম শিপনের বাবা বাদি হয়ে ১৫ জনকে আসামি করে এ মামলা করেন।
হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সকালে আনিসুল করিম শিপন হাসপাতালে ঢোকার পরই ৬ থেকে ৭ জন তাকে টানাহেঁচড়া করে একটি কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মাটিতে ফেলে চেপে ধরেন। এ সময় মাথার দিকে থাকা দ’ুজন হাতের কনুই দিয়ে তাকে আঘাত করছিলেন। হাসপাতালের ব্যবস্থাপক আরিফ মাহমুদ তখন পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। একটি নীল কাপড়ের টুকরা দিয়ে শিপনের হাত পেছনে বাঁধা হয়। ৪ মিনিট পর তাকে যখন উপুড় করা হয়, তখনই ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়েন শিপন।
আনিসুল করিম শিপন ৩১তম বিসিএসে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান। সর্বশেষ তিনি বরিশাল মহানগর পুলিশে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়ায়। তিনি এক সন্তানের জনক। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ৩৩ ব্যাচের ছাত্র ছিলেন এ পুলিশ কর্মকর্তা।
বাসস/সংবাদদাতা/এফএইচ/১৯১৫/কেকে