বাসস ক্রীড়া-৩ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার জন্য সবচেয়ে বড় দু:শ্চিন্তা ‘ইনজুরি’

89

বাসস ক্রীড়া-৩
ফুটবল-বিশ্বকাপ বাছাই
বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার জন্য সবচেয়ে বড় দু:শ্চিন্তা ‘ইনজুরি’
রিও জি জেনিরো, ১১ নভেম্বর ২০২০ (বাসস) : বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব সামনে রেখে চলতি সপ্তাহে দক্ষিণ আমেরিকান অঞ্চলের দুই দল ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা শিবিরে ইনজুরির তালিকা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। যে কারনে এই মুহূর্তে এই অঞ্চলের ফেবারিট দুই দলের সামনে সবচেয়ে বড় দু:শ্চিন্তার নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘ইনজুরি’। শুক্রবার সাও পাওলোতে ভেনেজুয়েলাকে আতিথ্য দিবে কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। বলিভিয়া ও পেরুর বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচে জয়ের পর তৃতীয় ম্যাচটিতেও ঘরের মাঠে জয় পেতে উন্মুখ হয়ে আছে তিতে বাহিনী। কিন্তু তারকা ফরোয়ার্ড নেইমারের ইনজুরি কিছুটা হলেও সেলেসাওদের পিছিয়ে দিয়েছে। গত মাসে তুরষ্কে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে পিএসজির হয়ে খেলতে গিয়ে থাইয়ের ইনজুরিতে পড়ে জাতীয় দল থেকে ছিটকে গেছেন নেইমার। বিশ^কাপ বাছাইপর্বে সর্বশেষ লিমাতে অনুষ্ঠিত ম্যাচে ব্রাজিল ৪-২ গোলে জয়ী হয়েছিল। ম্যাচটিতে হ্যাটট্রিক করে নেইমার সাবেক ব্রাজিলিয়ান তারকা রোনাল্ডোকে ছাড়িয়ে ইতিহাসের পাতায় দেশের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে নাম লেখানোর কৃতিত্ব অর্জন করেন। সর্বকালের সর্বোচ্চ রেকর্ডের অধিকারী পেলের সংখ্যা থেকে ১৩ গোল পিছিয়ে নেইমারের সংগ্রহে আছে এখন ৬৪ গোল।
সাম্প্রতিক ইনজুরি সত্তেও নেইমার দলের সাথেই থাকবেন। আশা করা হচ্ছে আগামী ১৭ নভেম্বর উরুগুয়ে সফরে তিনি সুস্থ হয়ে দলে ফিরবেন।
এদিকে জাতীয় দলের সমন্বয়ক জুনিনহো পলিস্তা বলেছেন তিতে ইতোমধ্যেই পিএসজির স্পোর্টিং ডাইরেক্টর লিওনার্দোকে বলে দিয়েছেন তিনি কোন খেলোয়াড়ের সুস্থতা নিয়ে কোন ধরনের ঝুঁকি নিতে চাননা।
ইংল্যান্ডে আসার পর থেকে চেলসির রক্ষনভাগে নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড় হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা ৩৬ বছর বয়সী থিয়াগো সিলভা বলেছেন, ‘আমাদের অত্যস্ত আটসাট সূচীতে খেলতে হচ্ছে। কোভিড-১৯’এর কারনে কিছু খেলোয়াড়কে দলে পাচ্ছিনা, বেশ কয়েকজন ইনজুরিতে আছেন। কিন্তু হাতে রয়েছে অনেক ম্যাচ। আমরা যন্ত্র নই। সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গেছে প্রতি তিনদিনে একটি করে ম্যাচ খেললে এবং সেটা যদি চার কিংবা পাঁচবার হয় তবে একজন খেলোয়াড় ইনজুরিতে পড়তে বাধ্য। এটা আমাদের জন্য খুবই চিন্তার বিষয়।’
যদিও গোলরক্ষক এ্যালিসন বেকার ও ফরোয়ার্ড গাব্রিয়েল জেসুস ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফিরেছেন। তবে দলের বাইরে রয়েছেন কাসেমিরো, ফিলিপ কুটিনহো ও ফ্যাবিনহো।
ব্রাজিলের মতই প্রথম দুই ম্যাচে জয় তুলে নেয়া আর্জেন্টিনাও খুব একটা সুবিধাজনক অবস্থানে নেই। ইকুয়েডর ও বলিভিয়ার বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচে জয় পাওয়া আর্জেন্টিনা আশা করছে প্যারাগুয়ে ও পেরুর বিপক্ষে চলতি সপ্তাহের দুটি ম্যাচে লিওনেল মেসি যেন ফিট হয়ে উঠতে পারেন। বার্সেলোনার এই তারকা ফরোয়ার্ড গোঁড়লির ইনজুরিতে ভুগছেন। যে কারনে আর্জেন্টাইন কোচ লিওনেল স্কালোনিকে বিকল্প কিছু চিন্তা করতে হচ্ছে। দলীয় অধিনায়ক ছাড়াও পাওলো দিবালা অসুস্থতার কারনে ও সার্জিও এগুয়েরো ইনজুরির কারনে দলের বাইরে রয়েছে। অবশ্য প্রায় এক বছর পর প্রথমবারের মত দলে ডাক পেয়েছেন এ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া।
আক্রমনভাগে লটারো মার্টিনেজের উপরই মূল ভরসা করতে হচ্ছে স্কালোনিকে। বলিভিয়ার লা পাজে সর্বশেষ ম্যাচে বদলী হিসেবে মাঠে নেমে জয়সূচক গোল পাওয়া জোয়াকুইন কোরেয়াকে মূল দলে দেখার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
বুন্দেসলিগায় শেষ চারটি ম্যাচে বায়ার লেভারকুজেনের হয়ে সাত গোল করা লুকাস আলারিওকে নিয়ে স্কালোনি নতুন করে চিন্তা করছেন।
গত মাসে ইকুয়েডরের কাছে ৪-২ গোলে বিধ্বস্ত হবার পর কলম্বিয়ার বিপক্ষে ফিরে আসার লড়াইয়ে শুক্রবার মাঠে নামবে উরুগুয়ে। তিন গোল করে ইতোমধ্যেই বিশ^কাপ বাছাইর্বে শীর্ষ গোলদাতা হিসেবে আসীন হয়েছেন লুইস সুয়ারেজ। তিনটি গোলই এসেছে পেনাল্টি থেকে। এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের হয়ে ক্লাব পর্যায়ে দুর্দান্ত ফর্মে থাকার জেড়েই সুয়ারেজ জাতীয় দলেও নিজের নামের প্রতি সুবিচার করছেন। রিয়াল মাদ্রিদের মিডফিল্ডার ফেডে ভালভার্দে পায়ের ইনজুরি ভুগছেন। অন্যদিকে হাঁটুর সমস্যার কারনে ম্যাক্সি গোমেজকে পাচ্ছে না উরুগুয়ে।
২০১৮ সালে বিশ^কাপে খেলতে ব্যর্থ হওয়া ইকুয়েডরকে যেকোন মূল্যেই কাতারের মূল পর্বে দেখতে উদগ্রীব হয়ে আছেন আর্জেন্টাইন কোচ গুস্তাভো আলফারো। এ সম্পর্কে আলফারো বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে ইকুয়েডরের লক্ষ্য একেবারেই স্পষ্ট। আমি আগেও বলেছি আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে নিজেদের আশাকে বাস্তবে প্রমান করে দেখানো। আমি এখানে শুধুমাত্র দলকে কোচিং করতে আসিনি, বরং কিভাবে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে হবে সেটাই এখানে গুরুত্বপূর্ণ। পরবর্তী বিশ^কাপে খেলতে না পারলে সেটা অবশ্যই হতাশাজনক হবে।’
গত বছরের কোপা আমেরিকা রানার্স-আপ পেরু শুক্রবার চিলির বিপক্ষে মাঠে নামবে। ২০১৫ ও ২০১৬ সালে চিলি কোপা আমেরিকার শিরোপা জিতেছিল। প্রথম দুই রাউন্ডের ম্যাচ থেকে উভয় দলই মাত্র এক পয়েন্ট করে সংগ্রহ করেছে। এখন একে অপরকে ছাড়িয়ে সামনে এগিয়ে যাবার সুযোগ এসেছে।
বাসস/এএসজি/নীহা/১৭০১/স্বব