সিলেটের রায়হান হত্যার প্রধান আসামি আকবর গ্রেফতার

489

সিলেট, ৯ নভেম্বর, ২০২০ ( বাসস) : সিলেটে আলোচিত রায়হান হত্যার প্রধান আসামী বরখাস্তকৃত পুলিশ সদস্য এস আই আকবর হোসেন ভুইঁয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আজ সোমবার সকাল ৯ টায় সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার বাংলাদেশ সীমান্তের ধনো এলাকা থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সাদা পোশাকধারী পুলিশ সদস্যরা তাকে গ্রেফতার করে।
পরে সন্ধ্যায় বিশেষ নিরাপত্তা প্রহরায় কানাইঘাট থেকে আকবরকে সিলেট জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়।
সন্ধ্যায় পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহমেদ।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, গতকাল বিশেষ তথ্যে আমরা জানতে পারি যে, বরখাস্তকৃত পুলিশ সদস্য এস আই আকবর হোসেন ভুইঁয়া আজ যেকোন সময় ওই এলাকার সীমান্ত দিয়ে ভারত পালিয়ে যেতে পারে। এ সংবাদ জানার পর পুলিশ সাথে সাথে জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট থানার দুই ওসির নেতৃত্বে বিশেষ টিম গঠনের মাধ্যমে সীমান্তবর্তী এলাকায় অতিরিক্ত সাদা পোশাকধারী পুলিশ মোতায়েন করে। এমতাবস্থায় সকাল নয়টার দিকে এস আই আকবর সীমান্তের ধনো এলাকা পারের সময় সাদা পোশাকধারী পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। এখন আকবরকে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় রায়হান হত্যা মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআই এর কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান পুলিশ সুপার।
এসময় তিনি সিলেটবাসীকে আশ্বস্ত করে বলেন, পুলিশের উপর আস্থা ও বিশ্বাস রাখুন। আলোচিত এ মামলাটি পুলিশ সংস্থার মর্যাদার বিষয়, তাই সুনির্দিষ্ট ভাবে যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পুলিশের পক্ষ থেকে যা যা করণীয় তার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে পুলিশ।
তিনি বলেন, সিলেটের মানুষের আবেগ অনুভূতির প্রতি পুলিশ শ্রদ্ধাশীল হয়ে রায়হান হত্যার পরপরই সিলেট জেলা পুলিশ পলাতক এস আই আকবরকে গ্রেফতার করতে নিরলসভাবে কাজ করছিল। অবশেষে এ হত্যাকান্ডের ২৯ তম দিনে আকবরকে গ্রেফতার করতে পুলিশ সক্ষম হয়েছে। অবশ্যই আইনি প্রক্রিয়ায় আকবরের বিচার নিশ্চিত করা হবে বলে জানান পুলিশ সুপার।
এর আগে বিকাল সাড়ে ৫ টায় কড়া নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে কানাইঘাট থেকে আকবরকে সিলেটের পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়।
গত ১১ অক্টোবর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে গুরুতর আহত হন রায়হান। তাকে ওইদিন সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে গুরুতর আহত অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন বন্দরবাজার ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা। সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান রায়হান।
এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ফাঁড়িতে পুলিশি নির্যাতনে প্রাণ হারান রায়হান।
পরে রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে সিলেট মহানগর পুলিশের তদন্ত কমিটি ঘটনার সত্যতা পেয়ে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবরসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করেন।
পরে এ ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য সহ তিনজনকে গ্রেফতার করে মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআই। আলোচিত এ মামলাটি পুলিশ সদরদফতরের নির্দেশে পিবিআইয়ের তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।