বাজিস-১ : কুমিল্লার রাজগঞ্জ বাজারে মাছ কেটে চলে তাদের সংসার

174

বাজিস-১
কুমিল্লা-মাছ কেটে সংসার
কুমিল্লার রাজগঞ্জ বাজারে মাছ কেটে চলে তাদের সংসার
॥ কামাল আতাতুর্ক মিসেল ॥
কুমিল্লা (দক্ষিণ), ৮ নভেম্বর, ২০২০ (বাসস) : নগরীর রাজগঞ্জ মাছ বাজার। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ক্রেতা-বিক্রেতায় সরগম থাকে। মাছ নিয়ে ক্রেতা বিক্রেতা দর কষাকষি চলে। তখন পাশে দাঁড়িয়ে দেখে কয়েকজন যুবক। মাছ কেনা হলে ক্রেতাকে বলেন, ভাই মাছ কাটাবেন। ক্রেতা যখন হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়েন, ওই যুবকরা মাছের ব্যাগটি নিয়ে যায়। ব্যাগ থেকে মাছ নামিয়ে নেয়। পাশে দাঁড়িয়ে থাকেন মাছ ক্রেতা। কেউ বটি নিয়ে বসেন। কেউ বা মাছের আঁশ ছাড়ানোর যন্ত্রটা হাতে নেন। আঁশ ছাড়ানো শেষ হলে কেউবা মাছটি টুকরো করেন। কখনো ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী কাটতে হয়। মাছ কাটা শেষ হলে ব্যাগে তুলে দেন। এভাবে পালা করে মাছ কেটে মাসে অন্তত ৫০ হাজার টাকা আয় করেন। এখানে ১৫ জন যুবক মাছ কাটার সাথে জড়িত। রয়েছে তাদের কয়েকজন সহযোগী। মাছ কেটে যে উপার্জন হয় তা দিয়েই চলে তাদের সংসার।
দীর্ঘ সাত বছর ধরে কুমিল্লা রাজগঞ্জ বাজারে মাছ কাটেন জাকির হোসেন। কথা হয় জাকির হোসেনের সাথে। তিনি বাসসকে জানান, প্রতি কেজি মাছ কাটার জন্য ১০ টাকা করে নেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অন্তত গড়ে আড়াই’শ কেজি মাছ কাটেন।
জাকির হোসেনের পাঁচজন সহকারী রয়েছে। তারা প্রত্যেকেই বেতনভুক্ত। সহকারী যারা আছে তারা যদি একবেলা মাছ কাটে তাহলে তিনশ’ টাকা পান। কেউ যদি পুরো দিন মাছ কাটে তাকে ছয়শ’ টাকা পান। প্রতি কেজি মাছ কেটে দিলে ১০ টাকা পাই। সে হিসেবে দৈনিক আড়াই’শ কেজি মাছ কাটার বিনিময়ে গড়ে আড়াই হাজার টাকা আয় হয়। দিনে আড়াই হাজার হলে মাসে অন্তত ৭৫ হাজার টাকা মাছ কাটি। সহকারীদের বেতন ও বাজারের খাজনা দেন গড়ে ২৫ হাজার টাকা। বাকি ৫০ হাজার টাকা তার আয় হয়।
জাকির হোসেন আরো জানান, এখনো বিয়ে করেননি। মা বাবার সাথেই থাকেন। বেকার থাকতে ভালো লাগে না বলেই বাজারে মাছ কাটা শুরু করেন। নিজের আয় দিয়ে বাবা-মাকে নিয়ে ভালোই আছেন।
নগরীর ঝাউতলা এলাকার গৃহবধূ ছালমা বেগম। একটি প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরি করেন। রোববার সকালে রাজগঞ্জ বাজারে এসেছেন। ১০ কেজি রুই মাছ কিনেছেন। ছালমা বেগম বাসসকে বলেন, মাছ কাটা অনেক ধৈর্যের কাজ। ঘরে মাছ কাটতে ছাঁই প্রয়োজন। তবে ছাঁই সব সময় থাকে না। পুরো মাসের জন্য একবারেই মাছ কিনে নেই । তাই চাকরি ফেলে এত মাছ কাটা সম্ভব হয় না। রাজগঞ্জ বাজারে মাছ কেনার পর তিনি জাকির হোসেনের কাছে মাছ কাটেন। ছালমা বেগম আরো বলেন, যারা বাজারে মাছ কাটেন তারা অবশ্যই কর্মজীবী ব্যস্ত মানুষদের উপকারই করেন। এভাবে তারা যেমনিভাবে আয় রোজগার করতে পারেন, তেমনিভাবে ব্যস্ত মানুষদের জন্য উপকারও করেন।
রাজগঞ্জ দৈনিক বাজার ব্যবসায়ী সমিতির কোষাধ্যক্ষ বাহাউদ্দিন বাসসকে বলেন, রাজগঞ্জ বাজারে অন্তত ১৫ জন যুবক মাছ কাটার সাথে জড়িত। তাদের রয়েছে অনেক সহযোগী। মাছ কেটে যে উপার্জন হয় তা দিয়েই তাদের সংসার চলে।
বাসস/সংবাদদাতা/১১০০/নূসী