বাসস দেশ-২৭ : ১৯৭৫ ও ৭৫-পরবর্তী ঘটনাবলি তদন্তে বিচারিক কমিশন গঠনের দাবি

214

বাসস দেশ-২৭
ওয়েবিনার-বিচার-কমিশন
১৯৭৫ ও ৭৫-পরবর্তী ঘটনাবলি তদন্তে বিচারিক কমিশন গঠনের দাবি
ঢাকা, ১১ নভেম্বর, ২০২০ (বাসস) : বক্তারা ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর যারা ক্ষমতা দখল করে জাতিকে বিভ্রান্ত করেছিল এবং মুক্তিযোদ্ধা ও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের হত্যার মাধ্যমে তাদের শাসন দীর্ঘায়িত করেছিল তাদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে উল্লেখ করে এ বিষয়ে একটি বিচারিক কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছেন।
সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)-এর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আজ বলা হয়, বক্তারা ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারের অভ্যন্তরে চার জাতীয় নেতার হত্যার বিষয়ে গবেষণা চালানোর এবং এর মূলহোতাদের আসল চেহারা উন্মোচন করার আহ্বান জানান।
শুক্রবার রাতে ‘রক্তাক্ত নভেম্বর: কিছু ঐতিহাসিক বাস্তবতা’ শীর্ষক একটি ওয়েবিনারে এসব সুপারিশ আসে।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, লেখক ও গবেষক সৈয়দ বদরুল আহসান, সৈয়দ নজরুল ইসলামের পুত্র মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ শাফায়াত ইসলাম ও সাংবাদিক জাহিদুল হাসান পিন্টুর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সাংবাদিক ও সাবেক ছাত্রনেতা সুভাষ সিংহ রায়।
সৈয়দ শাফায়াত ইসলাম বলেন, ‘১৫ আগস্ট থেকে ৭ নভেম্বর বাংলাদেশের ইতিহাসের রক্তাক্ত অধ্যায়। সেই পর্বের ষড়যন্ত্রকারীরা এখনো বেঁচে আছেন। তারা সব কিছুর মূলপরিকল্পনাকারী ছিলেন। এ ঘটনাগুলি যতই পুরানো হোক না কেন, এগুলো উৎঘাটন করতে হবে।’ ‘আমরা কি আজকের বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে সেই দিনের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েছি? আমরা কি সত্যিকার অর্থে সেই ঘটনাটি উপলব্ধি করেছি? আমরা কি সেই শিক্ষাকে এই ্রএ প্রজন্মের সামনে আনতে পেরেছি? আমাদের এটাই চিন্তা করা উচিত,’ তিনি যোগ করেন।
সৈয়দ শাফায়াত ইসলাম ১৯৭৫ সালে সশস্ত্র বাহিনীতে যোগদানের পরে নব্বইয়ের দশকে মেজর জেনারেল হন এবং ১৯৭৫ সালের হত্যাকা-ের বিষয়ে আলোকপাত করতে পারে এমন নথিপত্র খুঁজে পেতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। তবে ততক্ষণে সমস্ত নথিপত্র গায়েব করে ফেলা হয়েছে।
ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার জের হিসাবে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। ঘাতকরা এটা ভাল করেই বুঝতে পেরেছিল যে দেশের জন্য বঙ্গবন্ধুর পাশাপাশি যে চার নেতা লড়াই করেছিলেন তারা বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ তার লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে। তিনি ইতিহাসবিদদের প্রতি ১৯৭৫ সালের ইতিহাসের মশালকে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেয়ার আহ্বান জানান।
‘সত্যের আগুনকে অবশ্যই ছাই থেকে উঠতে হবে। আসল ইতিহাস অবশ্যই প্রকাশ পাবে। আমু ভাই, সেলিম ভাই, তোফায়েল ভাই লিখছেন। আমরা যদি এতে আমাদের পর্যবেক্ষণ যুক্ত করতে পারি, তরুণ প্রজন্ম পর্যাপ্ত পরিমাণ রসদ পাবে,’ তিনি যোগ করেন।
সৈয়দ বদরুল আহসান বলেন, ‘খন্দকার মোশতাক ও জিয়াউর রহমান ছাড়াও তাহেরউদ্দিন ঠাকুর এবং মাহবুব আলম চাষী কী ভূমিকা পালন করেছেন তা বিশ্লেষণ করতে হবে। ১৫ আগস্টের মাস্টারমাইন্ডদের অনেকে ৩ ও ৭ নভেম্বর মারা গিয়েছেন। তাদের অবশ্যই মরণোত্তর বিচার হতে হবে। সেই হত্যাকা-ে জড়িত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের কখনোই ছাড় দেয়া যায় না। আমাদের অবশ্যই তাদের সম্পর্কে গবেষণা করতে হবে। তাদের অবশ্যই বিচার করতে হবে।’
জাহিদুল হাসান পিন্টু বলেন, বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার হত্যার ঠিক পর সশস্ত্র বাহিনীর ১২ জন সদস্যের হত্যার মূল পরিকল্পনাকারীরা কারা ছিলেন? কারা বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানানোর পরিকল্পনা করেছিল আমাদের অবশ্যই তাদের চিহ্নিত করতে হবে। তিনি ‘জিয়াউর রহমানের শাসনামলে গণমৃত্যুদন্ডের শিকার হওয়া লোকদের প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে একটি বিচারিক কমিশন গঠন করা উচিত।’
বাসস/সবি/এমকেডি/অনুবাদ-এইচএন/২১৩০/-কেএমকে