বাসস দেশ-১৬ : মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস পালিত

106

বাসস দেশ-১৬
দিবস-৭ নভেম্বর
মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস পালিত
ঢাকা, ৭ নভেম্বর, ২০২০ (বাসস) : ৭ নভেম্বরকে মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস এবং ‘সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান’ দিবস হিসেবে পালন করেছে বিভিন্ন সংগঠন।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ আজ ৭ নভেম্বর ‘ঐতিহাসিক সিপাহী-জনতার অভ্যূত্থান দিবস’ পালন করেছে। এ উপলক্ষে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যকারি কমিটির উদ্যোগে আজ সকাল ১১টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ শহীদ কর্ণেল তাহের মিলনায়তনে শহীদ কর্নেল তাহের বীর উত্তমের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা-উপজেলায়ও এ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়।
দলীয় সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি, স্থায়ী কমিটির সদস্য মীর হোসাইন আখতার, স্থায়ী কমিটির সদস্য ও শহীদ কর্নেল তাহেরের অনুজ অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন, সহ-সভাপতি ফজলুর রহমান বাবুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নইমুল আহসান জুয়েল প্রমুখ ।
আলোচনা সভায় হাসানুল হক ইনু বলেন, পঁচাত্তর সালের ৭ নভেম্বর কর্নেল তাহের বীরউত্তম ও জাসদের নেতৃত্বে সিপাহী-জনতার অভ্যূত্থান, বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা হত্যা, অবৈধ ক্ষমতা দখল ও সংবিধান লংঘন, ব্যক্তি ও গোষ্ঠী স্বার্থে সেনাবাহিনীর ব্যবহার, হত্যা-ক্যু-ষড়যন্ত্রের রাজনীতি এবং ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রকাঠামোর অবসানের লক্ষ্যে সংগঠিত একটি ঐতিহাসিক মহান ঘটনা। তিনি বলেন, ৭ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধা হত্যা বা অফিসার হত্যা বা সৈনিক হত্যা বা বিপ্লব ও সংহতি দিবস নয়। যারা এতদিন পর্যন্ত ৭ নভেম্বরকে ঐভাবে চিহ্নিত করতে চেয়েছে তারা ইতিহাসকে আড়াল এবং বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার খুনীসহ ষড়যন্ত্রকারী-খুনীদের আড়াল করতে চেয়েছে। তাদের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
হাসানুল হক ইনু এমপি ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যা, ৩ নভেম্বর জাতীয় চার নেতা হত্যা, ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার অভ্যূত্থান দমন, খালেদ মোশাররফ হত্যা, জিয়ার শাসনামলে কর্নেল তাহেরকে সাজানো মিথ্যা মামলায় বিচারের নামে প্রহসণে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা, সেনানিবাসগুলোতে শত শত অফিসার-সৈনিক হত্যার ঘটনার তদন্ত করে সত্য উদঘাটনে একটি ‘জাতীয় সত্য উদঘাটন কমিশন’ গঠন করার আহ্বান জানান।
শিরীন আখতার বলেন, ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার অভ্যূত্থানের চেতনা ও শহীদ কর্নেল তাহেরের আত্মবলিদানের মহান ইতিহাসকে ধারন করে জাসদ ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র কাঠামো, পাকিস্তানপন্থার রাজনীতি, জঙ্গিবাদ, উগ্রবাদ, সাম্প্রদায়িকতা মোকাবেলা করার পাশাপাশি সমানতালে দুর্নীতি ও বৈষম্যের অবসানে সুশাসন ও সমাজতন্ত্রের লক্ষ্যে সংগ্রামের পথে অবিচল আছে।
রাজনীতিবিদরা মনে করেন সিপাহী বিপ্লবের নামে এদিন (৭ নভেম্বর) থেকে শুরু হয় মুক্তিযোদ্ধা সেনা সদস্যদের হত্যা প্রক্রিয়া। ১৯৭৫ সালের এদিনে সিপাহী বিপ্লবের নামে প্রথমে হত্যা করা হয় তিন খ্যাতনামা মুক্তিযোদ্ধাকে। এরা হলেন, খালেদ মোশাররফ বীর উত্তম, কে এন হুদা বীর উত্তম এবং এটি এম হায়দার বীর বিক্রম। দশম বেঙ্গল রেজিমেন্টের সদর দপ্তরে অবস্থানকালে সকালে তাদের একেবারে কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করে কোম্পানি কমান্ডার আসাদ এবং জলিল।
সাংবাদিক অ্যান্থনি ম্যাসকারেনহ্যাস এ ব্যাপারে লিখেছেন, ‘এছাড়াও এদিন উচ্ছৃঙ্খল জওয়ানরা একজন মহিলা ডাক্তারসহ ১৩ জন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করে। এমন কি একজন সেনা কর্মকর্তার স্ত্রীকেও এ সময় হত্যা করা হয়।
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ৭ নভেম্বর বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কালো দিন এবং সৈনিক ও অফিসার হত্যা দিবস। তিনি আজ দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডে সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের সাত নভেম্বর নিয়ে এ মন্তব্য করে বলেন, ‘বিএনপি এই দিনকে বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসেবে পালন করে অথচ প্রকৃতপক্ষে ১৯৭৫ সালের এই দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ, বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল হুদা, বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল হায়দারসহ বহু সৈনিক ও অফিসারকে হত্যা করা হয়েছিল। এমনকি যে কর্নেল তাহের বন্দীদশা থেকে জিয়াউর রহমানকে মুক্ত করেছিলেন, সেই পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল তাহেরকেও জিয়া পরবর্তীতে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছিলেন বলে জানান ড.হাছাস মাহমুদ।
বাসস/কেসি/১৯২০/কেএমকে