দেশে ২৪ ঘন্টায় করোনায় মৃত্যু ও সংক্রমণ কমেছে, বেড়েছে সুস্থতা

720

ঢাকা, ৬ নভেম্বর, ২০২০ (বাসস) : দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ২৪২তম দিনে ২৪ ঘন্টায় এই ভাইরাসে মৃত্যু ও সংক্রমণ কমেছে, পাশাপাশি বেড়েছে সুস্থতার হার।
গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১৫ জন মারা গেছে। গতকালের চেয়ে আজ মৃত্যু ২ জন কম। গতকাল মারা যায় ২৪ জন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ৬ হাজার ৩৬ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ। গত ২৬ অক্টোবর থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে। আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৩ হাজার ৫২১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৪৬৯ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ৩৭৩ জন কম শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ১৫ হাজার ২২৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৮৪২ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১০ দশমিক ৮৬ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১২ দশমিক ১০ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ শনাক্তের হার ১ দশমিক ২৬ শতাংশ কম।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ২৪ লাখ ১৮ হাজার ৪২৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪ লাখ ১৭ হাজার ৪৭৫ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৭ দশমিক ২৬ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৭ দশমিক ৩০ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় সুস্থ হয়েছে ১ হাজার ৪৩৬ জন। দেশে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে ৩ লাখ ৩৫ হাজার ২৭ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮০ দশমিক ২৫ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৮০ দশমিক ১৯ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার শূন্য দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৩ হাজার ৭৪৭ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৫ হাজার ৪০ জনের। গতকালের চেয়ে ১ হাজার ২৯৩টি নমুনা কম সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ১১৪টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৩ হাজার ৫২১ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৫ হাজার ২২৫ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ১ হাজার ৭০৪টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২৪৫১ দশমিক ৩২ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ১৯৫৭ দশমিক ২০ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছে এ পর্যন্ত ৩৫ দশমিক ৪৪ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ১৫ জনের মধ্যে পুরুষ ১১ জন, আর নারী ৪ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মারা গেছে ৪ হাজার ৬৪৬ জন, আর নারী মারা গেছে ১ হাজার ৩৯০ জন। শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৬ দশমিক ৯৭ শতাংশ, নারী ২৩ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ১৫ জনই হাসপাতালে মারা গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ২১ থেকে ৩০ বছরের ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের বছরের ৪ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৫ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ৫ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৯ জন, যা দশমিক ৪৮ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৪৭ জন, যা দশমিক ৭৮ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৩৮ জন, যা ২ দশমিক ২৯ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৩০ জন, যা ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৭৫১ জন; যা ১২ দশমিক ৪৪ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৫৯০ জন, যা ২৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ৩ হাজার ১৫১ জন, যা ৫২ দশমিক ২০ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫ জন, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে ১ জন করে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছে ৩ হাজার ১৪৫৪ জন, যা ৫২ দশমিক ২৫ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ১৯৪ জন, যা ১৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৩৭৩ জন, যা ৬ দশমিক ১৮ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪৭৩ জন, যা ৭ দশমিক ৮৪ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ২০১ জন, যা ৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৫০ জন, যা ৪ দশমিক ১৪ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ২৬৫ জন, যা ৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১২৬ জন, যা ২ দশমিক ০৯ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ৫১৯টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৮০২ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ৭১৭টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩১৪টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ১৯১ জন ও শয্যা খালি আছে ১২৩টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৮২৫টি, ভর্তিকৃত রোগী ১৩৯ জন ও শয্যা খালি আছে ৬৮৬টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১১ জন ও শয্যা খালি আছে ২৮টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ২৬৪টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৪৭৯ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৭৮৫টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২১১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৭১ জন ও শয্যা খালি আছে ১৪০টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১১ হাজার ৬০৮টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৪২০ জন এবং শয্যা খালি আছে ৯ হাজার ১৮৮টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৬৪টি, রোগী ভর্তি আছে ২৭৩ জন এবং খালি আছে ২৯১টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ৯৫টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৫৭৪টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৩৬৩টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ১ হাজার ৪৩৯ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ৯৬৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩৪১ জন, রংপুর বিভাগে ১৮ জন, খুলনা বিভাগে ১৩ জন, বরিশাল বিভাগে ৩১ জন, রাজশাহী বিভাগে ১৮ জন, সিলেট বিভাগে ৫১ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ২ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ১৮১ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ১৪৬ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৮৭ হাজার ৭৯ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৭৪ হাজার ৯৬৫ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১২ হাজার ১১৪ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৪৮ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৭০৮ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৫৯ হাজার ২৮১ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫ লাখ ১৯ হাজার ২৭১ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪০ হাজার ১০ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৫ হাজার ৩১৬ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ১১ লাখ ৪১ হাজার ১৬০ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৫৯৬টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ২২১টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৮১৭টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ২৪ লাখ ২৫ হাজার ৯১২টি।
কোভিড বিষয়ে হটলাইনে ২৪ ঘন্টায় ফোন করে স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছেন ২ হাজার ৪২৮ জন, এবং এ পর্যন্ত ৫ লাখ ২৬ হাজার ৪৩৮ জন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৫ নভেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯৪ লাখ ৬৮ হাজার ৫১ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৪৭ হাজার ৬৩ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৫ নভেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৪ কোটি ৭৯ লাখ ৩০ হাজার ৩৯৭ জন এবং ১২ লাখ ২১ হাজার ৭৮১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।