২৪ ঘন্টায় দেশে করোনায় সংক্রমণ ও মৃত্যু কমেছে, বেড়েছে সুস্থতা

471

ঢাকা, ৩ নভেম্বর, ২০২০ (বাসস) : দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ২৩৯তম দিনে এই ভাইরাসে সংক্রমণ হার ও মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে, বেড়েছে সুস্থতার হার।
গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১৭ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকালের চেয়ে আজ ৮ জন কম মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল মৃত্যুবরণ করেছেন ২৫ জন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ হাজার ৯৮৩ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ। গত ২৬ অক্টোবর থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৪ হাজার ৬১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৬৫৯ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ৭৭ জন কম শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল ১২ হাজার ৮৯১ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৭৩৬ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ১৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার ১ দশমিক ৬৭ শতাংশ কম।
দেশে এ পর্র্যন্ত মোট ২৩ লাখ ৭৫ হাজার ৭৬৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪ লাখ ১২ হাজার ৬৪৭ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৭ দশমিক ৪০ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৮৮৬ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ২৯ হাজার ৭৮৭ জন। আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭৯ দশমিক ৯২ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৭৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার শূন্য দশমিক ১৪ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৪ হাজার ৭৩২ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১২ হাজার ৭৮৫ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ১ হাজার ৯৪৭টি নমুনা বেশি সংগ্রহ হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ১১৩টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৪ হাজার ৬১ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১২ হাজার ৮৯১ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ১ হাজার ১৭০টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২৪২২ দশমিক ৯৭ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ১৯৩৬ দশমিক ৪৩ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৩৫ দশমিক ১৩ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ১৭ জনের মধ্যে পুরুষ ১৬ জন, আর নারী ১ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ৬০৪ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৩৭৯ জন। শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ; নারী ২৩ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ১৭ জনই হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন ।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ১১ থেকে ২০ বছরের ১ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ৪ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের বছরের ৩ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ৮ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৯ জন; যা দশমিক ৪৮ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৪৭ জন; যা দশমিক ৭৯ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৩৬ জন; যা ২ দশমিক ২৭ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৩০ জন; যা ৫ দশমিক ৫২ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৭৪২ জন; যা ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৫৮১ জন; যা ২৬ দশমিক ৪২ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ৩ হাজার ১১৮ জন; যা ৫২ দশমিক ১১ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগ ভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ১১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ২ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৩ হাজার ১১৯ জন; যা ৫২ দশমিক ১৩ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ১৮৩ জন; যা ১৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৩৭২ জন; যা ৬ দশমিক ২২ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪৭২ জন; যা ৭ দশমিক ৮৯ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ২০০ জন; যা ৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৫০ জন; যা ৪ দশমিক ১৮ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ১৬৩ জন; যা ৪ দশমিক ৪০ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১২৪ জন; যা ২ দশমিক ০৭ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ৫১৯টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৭১৩ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ৮০৬টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩১৪টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ১৮৩ জন ও শয্যা খালি আছে ১৩১টি।
চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৮২৫টি, ভর্তিকৃত রোগী ১৪১ জন ও শয্যা খালি আছে ৬৮৪টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৩ জন ও শয্যা খালি আছে ২৬টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ২৬৪টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৫০৬ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৭৫৮টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২১১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৬৮ জন ও শয্যা খালি আছে ১৪৩টি ।
সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১১ হাজার ৬০৮টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৩৬০ জন এবং শয্যা খালি আছে ৯ হাজার ২৪৮টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৬৪টি, রোগী ভর্তি আছে ২৬৪ জন এবং খালি আছে ৩০০টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ৯৫টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৫৭৪টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৩৬৩টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ১ হাজার ৮৮৬ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ২৫২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩১২ জন, রংপুর বিভাগে ৩০ জন, খুলনা বিভাগে ১০১ জন, বরিশাল বিভাগে ২৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩৪ জন, সিলেট বিভাগে ১০৯ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ২২ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ১৫১ জন, আর ছাড়া পেয়েছেন ১৮৬ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৮৬ হাজার ৫৬০ জন, আর ছাড়া পেয়েছেন ৭৪ হাজার ৫১৫ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১২ হাজার ৪৫ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৭৬৯ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৫৯৯ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৫৬ হাজার ৬৪৬ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন ৫ লাখ ১৭ হাজার ১২২ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৩৯ হাজার ৫২৪ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৪ হাজার ৭৯ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ১১ লাখ ২৬ হাজার ২৭৮ জনকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৫৬৮টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ফোন কল এসেছে ৪০ হাজার ২৩৫টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ৩৪১টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪৭ হাজার ১৪৪টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ২৩ লাখ ৭১ হাজার ৫৯৪টি।
কোভিড বিষয়ে হটলাইনে ২৪ ঘন্টায় ফোন করে স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছেন ২ হাজার ৬২৪ জন, এবং এ পর্যন্ত ৫ লাখ ১৮ হাজার ৯০৮ জন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২ নভেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯৩ লাখ ৫ হাজার ২৫৩ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৪৪ হাজার ৮২৭ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২ নভেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী, সারা বিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৪ কোটি ৬৪ লাখ ৩ হাজার ৬৫২ জন এবং ১১ লাখ ৯৮ হাজার ৫৬৯ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।