বাসস দেশ-৮ : একুশে আগস্ট মামলায় আসামী সালাম পিন্টুর পক্ষে যুক্তিতর্ক শেষ

118

বাসস দেশ-৮
২১ আগস্ট-মামলা-বিচার
একুশে আগস্ট মামলায় আসামী সালাম পিন্টুর পক্ষে যুক্তিতর্ক শেষ
ঢাকা, ৬ আগস্ট ২০১৮ (বাসস) : রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট ভয়াবহ বর্বরোচিত ও নৃশংস গ্রেনেড হামলা মামলার অন্যতম আসামী আবদুস সালাম পিন্টুর পক্ষে যুক্তিতর্ক পেশ শেষ হয়েছে।
রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালতে একুশে আগস্টের ঘটনায় আনা পৃথক মামলায় একই সঙ্গে বিচার চলছে।
মামলায় এ পর্যন্ত ৪৪ আসামীর পক্ষে যুক্তিতর্ক পেশ শেষ হয়েছে। আজ ছিল এ মামলার যুক্তিতর্ক পেশ করার ১০৫তম দিন।
এ মামলার অন্যতম আসামী সাবেক উপমন্ত্রী বিএনপি নেতা আবদুস সালাম পিন্টুর পক্ষে আজ আইনি পয়েণ্টে যুক্তিতর্ক পেশ করেন সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। এর আগে তার পক্ষে আরো সাত কার্যদিবসে তিনি নিজেসহ এডভোকেট এস এম শাহজাহান, রফিকুল ইসলাম যুক্তিতর্ক পেশ করেন।
আজ আসামী লৎফুজ্জামান বাবরের পক্ষে যুক্তিতর্ক পেশ শুরু করেন তার আইনজীববী নজরুল ইসলাম। এ আসামীর যুক্তিতর্ক পেশ শেষ হলে আসামীপক্ষে যুক্তিতর্ক পেশ সমাপ্ত হবে। আগামীকাল ৭ আগষ্ট ও পরদিন ৮ আগস্ট মামলার পরবর্তী ধার্য তারিখ।
পিন্টুর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমানিত হয়নি দাবী করে তাকে খালাসের আর্জি জানিয়ে যুক্তিতর্ক পেশ শেষ করেন তার আইনজীবী।
রাষ্ট্রপক্ষে প্রধান কৌঁসুলি সৈয়দ রেজাউর রহমান সাংবাদিকদের আজ বলেন, ভয়াবহ একুশে আগষ্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা দুই মামলার বিচার এখন শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আসামীপক্ষ উদ্দেশ্যমূলকভাবে সময় ক্ষেপন না করলে আরো আগেই এ মামলার বিচার ও নিস্পত্তি হতো। তিনি বলেন, আসামীপক্ষ এ মামলায় আইনে প্রদত্ত সব ধরণের সূযোগ-সুবিধা গ্রহণ করছেন। ভয়াবহ ওই গ্রেনেড হামলার শিকার বিচারপ্রার্থীগন ন্যায়বিচারের আশায় রয়েছেন। তিনি বলেন আসামী সালাম পিন্টুসহ অন্য আসামীদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষ্য দিয়ে প্রমান করতে সক্ষম হয়েছে। আসামীপক্ষের যুক্তির্ক শেষ হলে রাষ্ট্রপক্ষ আইনি পয়েণ্টে বক্তব্য পেশ করবে। আইন অনুযায়ি আসামীদের সর্বোচ্চ সাজা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এ মামলার প্রসিকিউশনের অন্যতম সদস্য আইনজীবী আকরাম উদ্দিন শ্যামল বাসস’কে জানান, ২১ আগষ্টের ঘটনায় পৃথক মামলায় মোট আসামীর সংখ্যা ৫২ জন। এর মধ্যে ৩ জন আসামীর অন্য মামলায় মৃত্যুদন্ড কার্যকর হওয়ায় তাদেরকে মামলা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। ৩ আসামী হলেন- জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নান ও শরীফ সাহেদুল আলম বিপুল। এখন ৪৯ আসামীর বিচার চলছে। এর মধ্যে এখনো তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরীসহ ১৮ জন পলাতক। বাবর, সালাম পিন্টুসহ ২৩ জন আসামী কারাগারে ও ৮ জন জামিনে রয়েছেন।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ২২৫ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেয়। আসামীপক্ষে সাক্ষিদের জেরা করেছে। গত বছরের ৩০ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আব্দুল কাহার আকন্দের জেরা শেষের মধ্য দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়।
বিচারের মুখোমুখি থাকা ৪৯ আসামির মধ্যে জামিনে রয়েছেন- বেগম খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লে. কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, সাবেক আইজিপি মো. আশরাফুল হুদা, শহুদুল হক ও খোদা বক্স চৌধুরী এবং মামলাটির তিন তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি’র সাবেক বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, সিআইডি’র সিনিয়র এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান, এএসপি আব্দুর রশীদ, সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার আরিফুল ইসলাম।
মামলার আসামী বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপি নেতা সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, সেনা কর্মকর্তা রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরীসহ অন্যরা কারাগারে রয়েছেন।
বিএনপি-জামায়াতের জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের এক সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। ওই নৃশংস হামলায় ২৪ জন নিহত ও নেতাকর্মী-আইনজীবী-সাংবাদিকসহ পাঁচ শতাধিক লোক আহত হন। নিহতদের মধ্যে ছিলেন তৎকালীন মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের পতœী আইভি রহমান।
তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের প্রথম সারির অন্যান্য নেতা এই গ্রেনেড হামলা থেকে বেঁচে যান। এতে অল্পের জন্য শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও গ্রেনেডের প্রচন্ড শব্দে তার শ্রবণশক্তিতে আঘাতপ্রাপ্ত হয়।
বাসস/এএসজি/ডিএ/১৬১৫/-কেকে