দেশে করোনায় সুস্থতা সোয়া ৩ লাখ ছাড়িয়েছে

327

ঢাকা, ১ নভেম্বর, ২০২০ (বাসস) : দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ২৩৭তম দিনে সুস্থ মানুষের সংখ্যা সোয়া ৩ লাখ ছাড়িয়েছে। হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ২৫ হাজার ৯৪০ জন।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৭৯৫ জন। গতকালের চেয়ে আজ ৩৫৩ জন বেশি সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ১ হাজার ৪৪২ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৭৯ দশমিক ৫১ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ১৩ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১৮ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকালও ১৮ জন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ হাজার ৯৪১ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ। গত ২৬ অক্টোবর থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় ১২ হাজার ৫৪৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৫৬৮ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ২৪৮ জন বেশি শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ১১ হাজার ৫৩২ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৩২০ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ শনাক্তের হার ১ দশমিক ০৫ শতাংশ বেশি।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ২৩ লাখ ৪৮ হাজার ৮১১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪ লাখ ৯ হাজার ২৫২ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৭ দশমিক ৪২ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১২ হাজার ৬২০ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১১ হাজার ২০৯ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ১ হাজার ৪১১টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ১১৩টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১২ হাজার ৫৪৯ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১১ হাজার ৫৩২ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ১ হাজার ১৭টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২৪০৩ দশমিক ০৩ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ১৯১৩ দশমিক ৮৪ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৩৪ দশমিক ৮৮ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ১৮ জনের মধ্যে পুরুষ ১৫ জন, আর নারী ৩ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ৫৬৮ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৩৭৩ জন। শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ; নারী ২৩ দশমিক ১২ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ১৮ জনই হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন ।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ২১ থেকে ৩০ বছরের ২ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ১ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের বছরের ৬ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ৯ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৯ জন; যা দশমিক ৪৯ শতংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৪৬ জন; যা দশমিক ৭৭ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৩৬ জন; যা ২ দশমিক ২৯ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩২৭ জন; যা ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৭৩৬ জন; যা ১২ দশমিক ৩৯ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৫৭২ জন; যা ২৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ৩ হাজার ৯৫ জন; যা ৫২ দশমিক ১৭ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ১৪ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩ সিলেট বিভাগে ১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৩ হাজার ৯৩ জন; যা ৫১ দশমিক ০৬ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ১৭৬ জন; যা ১৯ দশমিক ৭৯ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৩৭১ জন; যা ৬ দশমিক ২৪ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪৭০ জন; যা ৭ দশমিক ৯১ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ২০০ জন; যা ৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৪৭ জন; যা ৪ দশমিক ১৬ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ২৬২ জন; যা ৪ দশমিক ৪১ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১২২ জন; যা ২ দশমিক ০৫ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ৫১৯টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৬৮৮ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ৮৩১টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩১৪টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ১৭২ জন ও শয্যা খালি আছে ১৪২টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৮২৫টি, ভর্তিকৃত রোগী ১৩২ জন ও শয্যা খালি আছে ৬৯৩টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৫ জন ও শয্যা খালি আছে ২৪টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ২৬৪টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৪৮৯ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৭৭৫টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২১১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৭৭ জন ও শয্যা খালি আছে ১৩৪টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১১ হাজার ৬০৮টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৩০৯ জন এবং শয্যা খালি আছে ৯ হাজার ২৯৯টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৬৪টি, রোগী ভর্তি আছে ২৬৪ জন এবং খালি আছে ৩০০টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ৯৫টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৫৭৪টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৩৬৩টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ১ হাজার ৭৯৫ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ২৭৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৯৬ জন, রংপুর বিভাগে ১২ জন, খুলনা বিভাগে ৭৮ জন, বরিশাল বিভাগে ২১ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩৭ জন, সিলেট বিভাগে ৭১ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৪ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ১২৮ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ১৩৪ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৮৬ হাজার ২৫১ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৭৪ হাজার ১২৭ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১২ হাজার ১২৪ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৬২৭ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৭৮০ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৫৫ হাজার ১৫ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫ লাখ ১৫ হাজার ৯২২ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৩৯ হাজার ৯৩ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৪ হাজার ১৯৫ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ১১ লাখ ১৮ হাজার ২২৬ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৬৭১টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ৩৯ হাজার ২২টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ২৩৭টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪৫ হাজার ৯৩০টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ২৩ লাখ ১৭ হাজার ৭৭৭টি।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯১ লাখ ৯৬ হাজার ৩৮৪ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৪৩ হাজার ৫৮২ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৪ কোটি ৫৪ লাখ ২৮ হাজার ৭৩১ জন এবং ১১ লাখ ৮৫ হাজার ৭২১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।