বাসস প্রধানমন্ত্রী-২ (প্রথম কিস্তি) : সরকার দেশকে আরো মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী

120

বাসস প্রধানমন্ত্রী-২ (প্রথম কিস্তি)
শেখ হাসিনা-স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২০
সরকার দেশকে আরো মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী
ঢাকা, ২৯ অক্টোবর, ২০২০ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার মাধ্যমে প্রতিটি ক্ষেত্রে বিশেষ করে আর্থ-সামাজিকভাবে স্বাবলম্বী করে দেশকে বিশে^ আরো মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব নিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা অন্যের সহায়তা না নিয়ে আর্থ-সামাজিকভাবে স্বনির্ভরতা অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে আরও মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২০ প্রদান অনুষ্ঠানে দেয়া ভাষণে একথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতার যে স্বপ্ন, যে চেতনায় আমার লাখো শহীদ বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে স্বাধীনতা এনে দিয়ে গেছেন। তাঁদের এবং আমার লাখো মা-বোনের সেই আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করেই আমরা এই বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।’
তিনি বলেন, ’মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি হিসেবে বাংলাদেশ সারাবিশে^ মাথা উঁচু করে চলবে। আমরা কেন অন্যের কাছে হাত পেতে, মাথা নিচু করে চলবো। কিন্তু ’৭৫ এর পর আমরা সেই সম্ভাবনা এবং অধিকার হারিয়েছিলাম।’
তাঁর সরকারের পরিচালনায় বাংলাদেশ আজ তার হৃত গৌরব পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দেশকে দারিদ্র ও ক্ষুধা মুক্ত করে উন্নত সমৃদ্ধ করে গড়ে তোলার জন্যই আমরা আমাদের সমস্ত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি এবং যথেষ্ট অর্জনও করেছি।’
আসন্ন শীতে করোনার সেকেন্ড ওয়েভ সম্পর্কে সকলকে সতর্ক করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান পুণর্ব্যক্ত করে সরকার প্রধান বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে সমগ্র বিশে^র অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়লেও তাঁর সরকার এটা মোকাবেলায় প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছে, যেন, দেশের মানুষ এর থেকে সুরক্ষা পায় এবং দেশের অর্থনীতির গতিশীলতা না হারায়।’
প্রধানমন্ত্রী আজ সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
শেখ হাসিনার পক্ষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই পুরস্কার প্রদান করেন।
সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটি মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম পরিচালনা করেন এবং পুরস্কার বিজয়ীদের জীবন বৃত্তান্ত পড়ে শোনান। অনুষ্ঠানে পুরস্কার বিজয়ীদের পক্ষে প্রফেসর ডা. এ কে এম এ মুকতাদির নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তৃতা করেন।
এ বছর সরকার দু’জন মরণোত্তরসহ ৮ ব্যক্তি ও একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ, চিকিৎসা বিদ্যা, সংস্কৃতি ও শিক্ষাক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২০’ এ ভূষিত করে।
এ বছর স্বাধীনতা পুরস্কার বিজয়ীরা হচ্ছেন-স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের জন্য বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দাস্তগীর গাজী, বীর প্রতীক, প্রয়াত কমান্ডার (অব.) আবদুর রউফ (মরণোত্তর), প্রয়াত বুদ্ধিজীবী মুহম্মদ আনোয়ার পাশা (মরণোত্তর) ও আজিজুর রহমান। চিকিৎসা বিদ্যায় অধ্যাপক ডা. মো. উবায়দুল কবীর চৌধুরী ও অধ্যাপক ডা. এ কে এম এ মুকতাদির। সংস্কৃতিতে কালীপদ দাস ও ফেরদৌসী মজুমদার। শিক্ষায় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের ভারতেশ্বরী হোমস্। আজিজুর রহমান সম্প্রতি কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
পুরস্কার হিসেবে ১৮ ক্যারেট সোনার একটি ৫০ গ্রাম ওজনের পদক, সনদপত্র এবং ৫ লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয়।
প্রতিবছর ২৬ মার্চ, স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে সরকার এ পুরস্কার প্রদান করে আসলেও এ বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে যথাসময়ে অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হতে পারেনি। যা আজ অনুষ্ঠিত হলো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা যখন একটি যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তুলে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে যাত্রা শুরু করলেন এবং ক্ষমতাকে বিকেন্দ্রীকরণ করে গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পদক্ষেপ নিলেন ঠিক সেই মূহূর্তে ’৭৫ এর ১৫ আগষ্ট জাতির পিতাকে নির্মম ভাবে হত্যা করা হলো।
‘এরসঙ্গে বাঙ্গালি জাতিও তাদের সকল সম্ভাবনাকে হারিয়ে ফেলে,’ বলেন তিনি।
চলবে/বাসস/এএসজি-এফএন/এএইচজে/১৪৪৫/আরজি