নওগাঁ, ২৯ অক্টোবর, ২০২০(বাসস) : জেলায় বস্তায় মাটি ভরাট করে আদা রোপণ করে লাভের প্রত্যাশা করছেন এক বয়লার চাতাল মালিক। প্রাথমিকভাবে একশ বস্তায় আদা চাষ করে খরচ বাদ দিয়েও প্রায় ২৭ থেকে ২৮ হাজার টাকা নীট লাভ করার আশা করছেন ঐ আদাচাষি। আগামীতে পুরো বয়লার চাতাল জুড়ে ৫শ বস্তায় মাটি ভরাট করে আদা চাষের পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর।
নওগাঁ সদর উপজেলায় বর্ষাইল ইউনিয়নে চক আতিথা গ্রামে মোনায়েম হোসেন বেশ কিছুদিন আগে একটি বয়লার চাতাল গড়ে তোলেন। কিন্তু বর্তমানে জেলার অন্যান্য হাস্কিং চাতালের মত তাঁর চাতালটিও বন্ধ রয়েছে। ফলে লোকসানের মুখে পড়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। ব্যাংকের ঋণ পর্যন্ত পরিশোধ করতে পারেন নি। ফলে ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে চিন্তিত তিনি।
এরই মধ্যে মোনায়েম হোসেনের ভোকেশনাল ইনষ্টিটিউটে পড়–য়া ছেলে হিমেল ইউটিউব-এ কোন এক দেশে বস্তায় মাটি ভরে আদা চাষের সফলতার কথা জানতে পেরে নিজেও এ উদ্যোগ গ্রহণ করে।
হিমেলের পরিকল্পনা অনুযায়ী বাবা মোনায়েম হোসেন ও মা হোসনে আরা মিলে তাদের বয়লার চাতালের একটি অংশে ১শটি বস্তায় অর্ধেক মাটি ভরাট করে আদা চারা রোপণ করেন। একেকটি বস্তায় ২/৩টি করে চারা রোপণ করেন। প্রাথিমকভাবে মাটির সাথে কেবলমাত্র জৈব সার ব্যবহার করা হয়েছে। কোন রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয় নি। পরিবারের সকল সদস্য মিলে পরিচর্যা করছেন। আদা গাছগুলো বেশ ডগমগে হয়েছে।
মোনায়েম হোসেন জানিয়েছেন এ ১শ বস্তা আদা চাষ করতে কেবলমাত্র বস্তা ও আদা চারা মিলে খরচ হয়েছে ১ হাজার ২শ টাকা। আগামী চৈত্র মাসে এ আদা উত্তোলন করা হবে। তিনি আশা করছেন প্রতিটি বস্তায় কমপক্ষে আড়াই কে জি করে আদা উৎপাদিত হবে। এতে ঐ ১শ বস্তা থেকে আড়াইশ কে জি আদা পাওয়া যাবে। বর্তমানে কমপক্ষে পাইকারী বাজার মূল্য প্রতি কেজি ১শ ২০ টাকা। সেই হিসেবে ঐ একশ বস্তায় উৎপাদিত আদার বাজার মূুল্য ৩০ হাজার টাকা। খরচ বাদ দিয়ে কমপক্ষে ২৭ হাজার থেকে ২৮ হাজার টাকা নীট লাভ করতে পারবেন।
এ সফলতার কারণে আগামী বছর তার পুরো বয়লার চাতাল জুড়ে ৫শ বস্তায় আদা চাষ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। এ হিসেবে ৫শ বস্তায় আদা চাষ করে দেড় লাখ টাকারও বেশী আয় করতে পারবেন যা অন্যদের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে।
নওগাঁ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারহানা নাজনীন জানিয়েছেন, বস্তায় মাটি ভরাট করে আদা চাষ করা কৃষকদের নিকট সম্পূর্ণ একটি নতুন ধারনা। চক আতিথা গ্রামের মোনায়েম হোসেনের বয়লার চাতালে এভাবে আদা চাষ করে মালিক মোনায়েম হোসেন সফলতা পেয়েছেন। এর অর্থ এ প্রক্রিয়ায় আদা চাষের সম্ভাবনা রয়েছে। যদি কেউ এভাবে আদা চাষে এগিয়ে আসেন কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে প্রযুক্তি ও প্রক্রিয়াগতভাবে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হবে।