বাসস ক্রীড়া-১৩ : করোনায় রক্ষা সাকিবের

109

বাসস ক্রীড়া-১৩
ক্রিকেট-সাকিব-সিরিজ-বঞ্চিত
করোনায় রক্ষা সাকিবের
ঢাকা, ২৮ অক্টোবর ২০২০ (বাসস) : গত বছর বাংলাদেশের ভারত সফরের এক সপ্তাহ আগে দেশ সেরা অল রাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে নিষিদ্ধ করেছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। ওই সময় ভারত সফরে টি-২০ ও টেস্ট সিরিজের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু সাকিবের ওই আকষ্মিক নিষেধাজ্ঞার ফলে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে টাইগার দল।
তারপরও ভারতে গিয়ে স্বাগতিকদের বিপক্ষে একটি টি-২০ ম্যাচ জিতে নিয়েছিল টাইগাররা। তবে পরবর্তী টি-২০ ও দুই টেস্টের সব ক’টিতেই চরমভাবে পরাজিত হয়েছিল সফরকারী দল। এমন এক সময় সাকিবের ওই নিষেধাজ্ঞার আদেশ এসেছিল, যখন টাইগাররা আন্তর্জাতিক সুচির প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
নিষেধাজ্ঞার এক বছরে কম করে ৩৬টি ম্যাচে অংশগ্রহন থেকে বঞ্চিত হবার কথা ছিল সাকিবের। কিন্তু বিশ^ব্যাপী করোনা ভাইরাসের মহামারি সাকিবের জন্য সৌভাগ্য বয়ে এনেছে। মরনঘাতি এই ভাইরাসের কারণে আনুমানিক সাত মাস ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে রয়েছে টাইগাররা।
সাকিবের অনুপস্থিতির সময় বাংলাদেশ সর্বসাকুল্যে মাত্র চারটি টেস্ট, তিনটি ওয়ানডে ও সাতটি আন্তর্জাতিক টি-২০ ম্যাচ খেলেছে। নিষেধাজ্ঞার কারণে সাকিব যে ম্যাচগুলো খেলতে পারেননি।
ভারত সিরিজ: সাকিব নিষিদ্ধ হওয়ার পর বাংলাদেশ টেস্ট দলের নেতৃত্বে আনা হয় মোমিনুল হককে। তার প্রথম মিশনই ছিল ভারত। আর ওই টেস্ট সিরিজে স্বাগতিক ভারতের কাছে চরমভাবে নাস্তানাবুদ হয়েছে টিম টাইগার।
অপরদিকে সাকিবের অনুপস্থিতিতে টি-২০ দলের ঝান্ডা তুলে দেয়া হয়েছিল মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের হাতে। তার নেতৃত্বে স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে প্রথম টি-২০ ম্যাচে জয়লাভ করলেও পরের দুই ম্যাচেই হেরে গেছে বাংলাদেশ। ফলে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হারে সফরকারী দল।
পাকিস্তান সিরিজ: জানুয়ারিতে পাকিস্তান সফরে যায় টাইগাররা। সেখানে স্বাগতিকদের বিপক্ষে দুটি টি-২০ ম্যাচে অংশ নেয় বাংলাদেশ। দুর্ভাগ্যজনকভাবে দুটি ম্যাচেই হেরে যায় টাইগাররা। পরে আরেকটি টেস্ট খেলতে ফেব্রুয়ারিতে ফের পাকিস্তান সফরে যায় বাংলাদেশ। ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় ওই টেস্টেও পরাজিত হয় বাংলাদেশ।
জিম্বাবুয়ে সিরিজ: এই হোম সিরিজ দিয়ে আগের দুই সিরিজের ব্যর্থতা কাটায় বাংলাদেশ। অধিনায়ক মোমিনুল হকের নেতৃত্বে প্রথম টেস্টে জয়েয় স্বাদ পায় টাইগাররা। পরে টি-২০ সিরিজে সফরকারী জিম্বাবুয়েকে হোয়াইট ওয়াশ করে বাংলাদেশ। ওই সিরিজ জয়ের পরপরই ওয়ানডে অধিনায়কত্বের পদ থেকে সড়ে দাঁড়ান বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক মাশরাফি বিন মোর্তাজা।
করোনার কারণে যে সব সিরিজ থেকে বঞ্চিত হতে হয়নি সাকিবকে:
পাকিস্তান সিরিজ: পাকিস্তানের সঙ্গে আরো একটি টেস্ট ও একটি ওয়ানডে ম্যাচ খেলার কথা ছিল টাইগারদের। এপ্রিলে অনুষ্ঠিত হবার কথা ছিল ওই ম্যাচ। কিন্তু মার্চের মধ্যভাগে কোভিড-১৯ এর সংক্রমন বিশ^ব্যাপী ছড়িয়ে পড়লে স্থগিত হয়ে যায় ওই সুচি।
আয়ারল্যান্ড সিরিজ: আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিনটি ওয়ানডে ও সম সংখ্যাক টি-২০ ম্যাচের সিরিজ খেলতে মে মাসে যুক্তরাজ্য সফরের কথা ছিল বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের। কিন্তু করোনার কারণে অনিদ্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হয়ে গেছে ওই সফরসুচি।
অস্ট্রেলিয়া সফর: বিশ^ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের অংশ হিসেবে দুটি টেস্ট খেলতে জুনে বাংলাদেশ সফরে আসার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়ার। করোনার কারণে ওই সিরিজও থমকে গেছে অনিদ্দিষ্ট কালের জন্য।
শ্রীলংকা সিরিজ: জুলাইয়ে শ্রীলংকায় তিনটি টেস্ট ম্যাচ খেলার কথা ছিল বাংলাদেশ দলের। ওই সুচিও স্থগিত হয় করোনার কারণে। তবে করোনা সংকট কেটে যাবার পর সিরিজটি আয়োজনের প্রস্তুতি অনেকদূর এগিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু নানামুখি জটিলতার কারণে শেষ পর্যন্ত স্থগিত হয়ে যায় ওই সিরিজও।
টি-২০ বিশ^কাপ: চলতি বছর ১৫ অক্টোবর অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হবার কথা ছিল টি-২০ বিশ^কাপ ক্রিকেট। নির্ধারিত সুচিতে যদি টুর্নামেন্ট আয়োজন হতো তাহলে সেখানে প্রথম রাউন্ডের অন্তত তিনটি ম্যাচে অংশ নিতে পারতেন না নিষিদ্ধ সাকিব। কিন্তু করোনার কারণে এক বছরের জন্য স্থগিত হয়ে গেছে ওই টুর্নামেন্ট। যে কারণে নিষেধাজ্ঞার কারণে টুর্নামেন্টে অন্তত এক ম্যাচের জন্যও বসে থাকতে হবে না সাকিব আল হাসানকে।
বাসস/এসএমপি-অনুএমএইচসি/১৯০০/স্বব