বিএনপি নিরাপদ সড়কের আন্দোলনকে নিরাপদ ক্ষমতার পথ হিসেবে ব্যবহার করতে চায় : ওবায়দুল কাদের

263

ঢাকা, ৫ আগস্ট, ২০১৮ (বাসস) : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি নিরাপদ সড়কের আন্দোলনকে নিরাপদ ক্ষমতার পথ হিসেবে ব্যবহার করতে চায়। সেই এজেন্ডা নিয়ে তারা এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপদ সড়কের দাবিতে অরাজনৈতিক আন্দোলনকে কারা নোংরা রাজনীতির দিকে নিয়ে যেতে চায়, সেটা পরিষ্কার হয়ে গেছে। শনিবার রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে হামলা ও ভাঙচুরের মধ্যদিয়ে তা দিবালোকের মতো পরিষ্কার হয়ে গেছে।
কাদের বলেন, বিএনপি এবং তাদের উগ্র সাম্পদায়িক শক্তির দোসররা কীভাবে এই নিরীহ কোমলমতি আন্দোলনের মধ্যে অনুপ্রবেশ করে আন্দোলনকে নোংরা রাজনীতির খেলায় পরিণত করতে তৎপরতা চালিয়েছে, তাও দেশবাসী লক্ষ্য করেছে।
ওবায়দুল কাদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় ছেলে শেখ কামালের জন্মদিন উপলক্ষে আজ রোববার সকালে বনানীতে তাঁর কবরস্থানে শ্রদ্ধা জানান। পরে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
বিএনপি‘র এক নেতার ফোনালাপ প্রসঙ্গে কাদের বলেন, তিনি কুমিল্লা থেকে ঢাকায় লোক পাঠানোর জন্য ষড়যন্ত্র করেছেন। ফোনালাপে পরিষ্কার হয়ে গেছে। সে আহ্বান কি অশুভ শক্তির চক্রান্তের প্রমাণ করে না?
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগ কারও বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র না করলেও এ দলটির ইতিহাস হচ্ছে বারবার ষড়যন্ত্রের শিকার হওয়া।
এ দলটির বিরুদ্ধে এখনো ষড়যন্ত্র চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ইতিহাস হচ্ছে বারবার ষড়যন্ত্রের শিকার হওয়া। আওয়ামী লীগ কারও বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে এ ইতিহাস নেই। এই আগষ্ট মাসেও ষড়যন্ত্রের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। বাতাসে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। অশুভ শক্তির আস্ফালনের গন্ধ, পদধ্বনি পাওয়া যাচ্ছে।’
ওবায়দুল কাদের অভিযোগ করেন, বিএনপি এবং উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তিরা ছাত্রছাত্রীদের পোশাক পরে ভুয়া পরিচয়পত্র বানিয়ে ধোঁকাবাজির নোংরা রাজনীতি করেছে। বিধ্বংসী রাজনীতির সূচনা করেছে বিএনপি।
‘একটি মেয়ে কাঁদতে কাঁদতে মুখ ঢাকা আহাজারি করছে। আমি আওয়ামী লীগ অফিসে ধর্ষিত হচ্ছি, আওয়ামী লীগ অফিসে আমাকে রেপ করা হচ্ছে, আমাকে বাঁচান। আমাকে রক্ষা করুন এসব কথা বলেছে’- ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া এ অপপ্রচারের জবাবে তিনি বলেন, এই নোংরা রাজনীতি যে বিএনপি করতে পারে, তাদের দোসররা করতে পারে। তা শনিবার স্পষ্ট হয়ে গেছে।
মুখ ঢাকা মেয়েটি আটক হয়েছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গভীর রাতে সেই মেয়েটি উত্তরায় ধরা পড়েছে। অনেক ঘটনাই ফাঁস হয়ে যাবে। সবার ছবি আছে। সবার কার্যক্রম আমরা নিরবে লক্ষ্য করেছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কোনো প্রকার বলপ্রয়োগে যায়নি এবং এই বলপ্রয়োগ আমরা করিনি।’
কাদের বলেন, ‘অশুভ শক্তি ছাত্রদের আন্দোলনে ঢুকে আমাদের ওপর আক্রমণ চালিয়ে আমাদের ১৭ জন নেতা-কর্মীকে আহত করেছে। তারা হাসপাতালে আহত অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, এই অশুভ শক্তি যত দিন এই দেশে রাজনীতিতে থাকবে, এরা অশান্তি করবে। এই দেশে কোনো দিনই শান্তি আসবে না যত দিন এই অশান্তির হোতা বিএনপি এবং তাদের দোসররা রাজনীতিতে থাকবে।
‘এই অশান্তির রাজনৈতিক শক্তিকে যেকোনো মূল্যে প্রতিরোধ করতে হবে’ উল্লেখ করে অওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সাত দিন ধরে ধৈর্য ধরা হয়েছে , আজকে পুলিশ, সরকারি কর্মকর্তা, এমপি-মন্ত্রী দলের নেতাদের হয়রানি, নাজেহাল করা হয়েছে। তারপরও আমরা হাসিমুখে সহনশীলতার সঙ্গে ধৈর্যের সঙ্গে মেনে নিয়েছি।’
ওবায়দুল কাদের কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে আবারো ঘরে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরে যাওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, তাদের সব দাবি দাওয়া মেনে নেয়া হয়েছে।
শেখ কামালের প্রতিভার কথা তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তিনি প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেছেন। তিনি ছিলেন ক্রিকেটের একজন সংগঠক। বাংলাদেশে আধুনিক ফুটবলের জনক, সেতার বাদক, নাট্যকর্মী এবং একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা।
এর আগে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা বনানী কবরস্থানে শেখ কামালের জন্মদিন উপলক্ষে তার সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এ ছাড়াও এসময় কবর জিয়ারত ও মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেখ কামালের মাগফেরাত কামনা করা হয়।
এসময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বাহা উদ্দিন নাছিম, এনামুল হক শামীম, আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ এমপি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।