দেশে করোনায় ২৪ ঘন্টায় মারা গেছেন ২১ জন, সুস্থ ১,৬২৭

274

ঢাকা, ১৯ অক্টোবর, ২০২০ (বাসস) : দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ২২৬তম দিনে ২৪ ঘন্টায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। আর সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৬২৭ জন।
গতকালের চেয়ে আজ ৭ জন বেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ১৪ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ হাজার ৬৮১ জন।করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৬ শতাংশ। গত ৭ অক্টোবর থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৬২৭ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ৫ হাজার ৫৯৯ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭৮ দশমিক ৩২ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৭৮ দশমিক ২৩ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার শূন্য দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৫ হাজার ১৪৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৬৩৭ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ১১ হাজার ৮৬৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ২৭৪ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১০ দশমিক ৮১ শতাংশ। আগের দিনও এই হার ছিল ১০ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ২১ লাখ ৭৮ হাজার ৭১৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ লাখ ৫ হাজার ৫৯৯ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৭ দশমিক ৯১ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৭ দশমিক ৯৬ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৫ হাজার ১৪৬ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১২ হাজার ১৮৯ জনের। গতকালের চেয়ে ২ হাজার ৯৫৭টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ১১০টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৫ হাজার ১৪৬ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১১ হাজার ৮৬৬ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৩ হাজার ২৮০টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছ
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২২৯১ দশমিক ২০ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ১৭৯৪ দশমিক ৪১ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৩৩ দশমিক ৩৬ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায মৃত্যুবরণকারী ২১ জনের মধ্যে পুরুষ ১৪ জন, আর নারী ৭ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ৩৭১ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৩১০ জন। শতকরা হিসাবে পুরুষ ৭৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ; নারী ২৩ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় ২৩ জন হাসপাতালে এবং ১ জন বাসায় মৃত্যুবরণ করেছেন ।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে শূন্য থেকে ১০ বছরের ১ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের বছরের ৫ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ১৩ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৯ জন; যা শূন্য দশমিক ৫১ শতংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৪৫ জন; যা শূন্য দশমিক ৭৯ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১২৭ জন; যা ২ দশমিক ২৪ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩১৯ জন; যা ৫ দশমিক ৬২ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৭০৯ জন; যা ১২ দশমিক ৪৮ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৫১৩ জন; যা ২৬ দশমিক ৬৩ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ২ হাজার ৯৩৯ জন; যা ৫১ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগে ১৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ১ জন এবং বরিশাল বিভাগে ১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ২ হাজার ৯০৮ জন; যা ৫১ দশমিক ১৯ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ১৩৮ জন; যা ২০ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৩৬৫ জন; যা ৬ দশমিক ৪২ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪৫৭ জন; যা ৮ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ১৯৭ জন; যা ৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৪০ জন; যা ৪ দশমিক ২২ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ২৫৭ জন; যা ৪ দশমিক ৫২ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১১৯ জন; যা ২ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ৫১৯টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৭৪১ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ৭৭৮টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩১৪টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ১৭৯ জন ও শয্যা খালি আছে ১৩৫টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৮২৫টি, ভর্তিকৃত রোগী ১২১ জন ও শয্যা খালি আছে ৭০৪টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৩ জন ও শয্যা খালি আছে ২৬টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৩৮৬টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৪৮০ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৯০৬টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২১১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৭৯ জন ও শয্যা খালি আছে ১৩২টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১১ হাজার ৭৩০টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৩৪২ জন এবং শয্যা খালি আছে ৯ হাজার ৩৮৮টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৬৪টি, রোগী ভর্তি আছে ২৭১ জন এবং খালি আছে ২৯৩টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ৭৯টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৫৬২টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৩৫৮টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হওয়া ১ হাজার ৬২৭ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ৩৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২০৩ জন, রংপুর বিভাগে ৪১ জন, খুলনা বিভাগে ৯৬ জন, বরিশাল বিভাগে ১৭ জন, রাজশাহী বিভাগে ১৩৬ জন, সিলেট বিভাগে ৬৮ জন এবং ময়মনসিংহে ২৮ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ১৩৮ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ১৯৬ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৮৪ হাজার ৩২৯ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৭২ হাজার ১২২ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১২ হাজার ২০৭ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫৯৫ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৭০১ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৪৬ হাজার ৪৫৯ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫ লাখ ৬ হাজার ৭৮৯ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৩৯ হাজার ৬৭০ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৪১৪টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ১৮০টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৫৯৪টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ১৮ লাখ ২৭ হাজার ৮৬৩টি।
এছাড়া ২৪ ঘন্টায় কোভিড বিষয়ক টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন ২ হাজার ৬৫৯ জন। এ পর্যন্ত শুধু কোভিড বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেছেন ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৮১ জন। প্রতিদিন ৩৫ জন চিকিৎসক ও ১০ জন স্বাস্থ্য তথ্যকর্মকর্তা দুই শিফটে মোট ৯০ জন টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৪ হাজার ৭৫ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ১০ লাখ ৬১ হাজার ৫৯৪ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৮৪ লাখ ২৪ হাজার ৪৮০ জন এবং এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৩৩ হাজার ৭৮১জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩ কোটি ৯৫ লাখ ৯৬ হাজার ৮৫৮ জন এবং এ পর্যন্ত ১১ লাখ ৭ হাজার ৩৭৪ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।