শিক্ষার্থীদের শেখ রাসেলের জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত : আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক

516

ঢাকা, ১৮ অক্টোবর, ২০২০ (বাসস) : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও বাসস পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান আধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেছেন , বর্তমান শিক্ষার্থীদের শেখ রাসেলের জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত। তিনি বলেন, “ছোট্ট একটা শিশু হয়েও রাসেল কিভাবে শিক্ষকদের সাথে ব্যবহার করতেন এবং সকলকে সম্মান দিতেন তা উপলব্দি করা উচিত। বঙ্গবন্ধু নিজেও শিক্ষকদের আলাদা মর্যাদা দিতেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমাদের ভাবতে হবে, বঙ্গবন্ধু কোন আদর্শে চলতেন। আমাদের সেই আদর্শ মেনে চলা খুব প্রয়োজন”
আরেফিন সিদ্দিক আজ হাসুমণির পাঠশালা আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠপুত্র শহীদ শেখ রাসেলের জন্মদিনে দেশরত্ন শেখ হাসিনা রচিত ‘আমাদের ছোট রাসেল সোনা’ অবলম্বনে গোলটেবিল আলোচনা ও শেখ রাসেল ভার্চুয়াল গ্যালারী উদ্বোধন করেন্ । একইসাথে, দেশরত্ন শেখ হাসিনার ৭৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ‘আঁক তোমার স্বপ্ন’ শীর্ষক শিশুতোষ চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী ক্ষুদে শিল্পীদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করা হয়।
হাসুমণির পাঠশালা এর সভাপতি মারুফা আক্তার পপির সভাপতিত্বে জাতীয় জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী গ্যালারীতে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এবং প্রধান আলোচক ছিলেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম ।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসাবে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও অসুস্থ্য থাকার কারণে তিনি ছোট্ট সোনমণিদের জন্য শুভেচ্ছা প্রেরণ করেন ও হাসুমণির পাঠশালার জন্য শুভকামনা করেন।
আরেফিন সিদ্দিক বলেন, আমার ছোট বোন ও শেখ রাসেল একই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার থেকে একাধিকবার শেখ রাসেলের কথা শুনেছি। শেখ রাসেল বঙ্গবন্ধুর ছেলে হয়েও তার চলাফেরা ছিল খুব সহজ সরল। তার বুদ্ধিদীপ্ত আচরণ ও আন্তরিকতা সকলকে মুগ্ধ করতো। শেখ রাসেলের বিভিন্ন শিক্ষকরাও বলেছেন, তাদের শিক্ষক জীবনে শেখ রাসেলের মতো শিক্ষার্থী পাওয়া ছিল ভাগ্যের ব্যাপার। তিনি বলেন, পনেরই আগস্ট ঘাতকের বুলেট ১০ বছরের ছোট্ট রাসেলকেও রেহাই দেয়নি। আগস্টের হত্যাকান্ডে জড়িত অপরাধী যারা এখনো বিদেশ পালিয়ে আছে, তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে দ্রুত বিচার সম্পন্ন করা এখন সময়ের দাবি।
এনামুল হক শামীম বলেন, ধানমন্ডির ৩২ নাম্বার বাড়ির প্রতিটি মানুষ মানবিকবোধে গুণান্বিত। শেখ রাসেল মাত্র ১০ বছরের শিশু হয়েও সেই মূল্যবোধে তাদের একজন হয়ে উঠেছিলেন। তবে ঘাতকেরা ভেবেছিল বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে হত্যা করলেই বাংলাদেশ আর বাংলাদেশ থাকবে না। সেই প্রত্যাশায় তারা বঙ্গবন্ধুর পরিবারের ছোট্ট শিশুটিকেও ছাড় দেয়নি।
শরীফ আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু এবং শেখ হাসিনা উভয়েই শেখ রাসেলকে খুব ভালোবাসতেন। সেই ভালোবাসা থেকেই আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। আমরা চাই আমাদের প্রজন্ম যেন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় বেড়ে উঠে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডীন অধ্যাপক নিসার হোসেন, সিনিয়র ফটো সাংবাদিক পাভেল রহমান, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ফওজিয়া রেজওয়ান, যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জুনায়েদ হালিম প্রমূখ।
সকালে জাতীয় সঙ্গীত দিয়ে শুরু হয় মূল আয়োজন। এরপর ১৫ আগস্ট নিহত বঙ্গবন্ধু, শেখ রাসেল ও তার পরিবারের সদস্যসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে নিহত সকল শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
‘আঁক তোমার স্বপ্ন’ চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার বিচারক হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিল্পী তরুণ ঘোষ, শিল্পী সঞ্জীব দাস অপু, শিল্পী কিরিটি রঞ্জণ বিশ্বাস, শিল্পী জাকির হোসেন পুলক এবং সূচি শিল্পী ইলোরা পারভীন।
অনুষ্ঠানে ‘আঁক তোমার স্বপ্ন’ শীর্ষক এই প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা। বিজয়ীদের পুরস্কার হিসেবে বই, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।