নবাগত কাডিজের কাছে পরাজিত রিয়াল মাদ্রিদ, গেতাফের কাছে হেরেছে বার্সেলোনা

269

মাদ্রিদ, ১৮ অক্টোবর, ২০২০ (বাসস) : বিরতির পর দলে চারটি পরিবর্তন করে রিয়াল মাদ্রিদের ভাগ্য ফেরাতে পারেননি কোচ জিনেদিন জিদান। কাল লা লিগায় এবারের মৌসুমে নতুন উন্নীত কাডিজের কাছে ১-০ গোলের পরাজয় মেনে নিতে হয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের।
এ দিকে দিনের আরেক ম্যাচে গেতাফের কাছে একই ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে বার্সেলোনা। ৫৬ মিনিটে ফ্রেংকি ডি জংয়ের বিপক্ষে পেনাল্টি আদয় করে নেন গেতাফের রাইট-ব্যাক ডিয়েনে ডাকোনাম। স্পট কিক থেকে গেতাফেকে এগিয় দিতে ভুল করেননি স্ট্রাইকার জেইম মাতা। লিওনেল মেসি প্রথমার্ধে পোস্টে বল লাগিয়েছেন, আঁতোয়ান গ্রীজম্যান খুব কাছে থেকে বল জালে জড়াতে পারেননি। ম্যাচ শেষের পাঁচ মিনিট আগে হুয়ান হার্নান্দেজ গেতাফের হয়ে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ নষ্ট করেন। তার জোড়ালো শটটি পোস্টে লেগে ফেরত আসে।
আলফ্রেডো ডি স্টিফানোতে এন্থনি লোজানোর গোলে ১৬ মিনিটেই এগিয়ে গিয়েছিল কাডিজ। ম্যাচে ফিরে আসতে মরিয়া মাদ্রিদ কোচ জিদান তাই দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে সার্জিও রামোস, লুকাস ভাসকুয়েজ, ইসকো ও লুক মড্রিচকে বদলী বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। মাদ্রিদ অধিনায়ক রামোস অবশ্য বাম হাঁটুর ইনজুরিতে ভুগছেন। বদলী বেঞ্চে পুরোটা সময়ই তাকে হাঁটুকে বরফ লাগাতে দেখা গেছে। যদিও মাদ্রিদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ইনজুরির মাত্রা ততটা গুরুতর নয়। কিন্তু বুধবার শাখতার দোনেস্কর বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রথম ম্যাচ ছাড়াও তিন দিন পর মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকোতে তার খেলা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
আগামী সপ্তাহে মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকোতে ক্যাম্প ন্যুতে যখন মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা মুখোমুখি হবে তখন দুই দলই পরাজয়ের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে বেরিয়ে আসার মানসিকতা নিয়েই মাঠে নামবে।
দিনের শুরুতে এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ ২-০ গোলে পরাজিত করেছে সেল্টা ভিগোকে। লুইস সুয়ারেজ ম্যাচের ৬ মিনিটে এ্যাথলেটিকোকে এগিয়ে দেন। এরপর ইনজুরি টাইমে ব্যবধান দ্বিগুন করার পাশাপাশি দলের জয় নিশ্চিত করেন ইয়ানিক কারাসকো।
গত ১৪ বছরে এই প্রথমবারের মত স্প্যানিশ শীর্ষ লিগ লা লিগায় খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে কাডিজ। আর ২৯ বছরে এটাই রিয়ালের বিপক্ষে তাদের প্রথম জয়। এই জয়ে রিয়াল মাদ্রিদ ও গেতাফের সাথে সমান ১০ পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে পিছিয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থানে রয়েছে কাডিজ।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ম্যাচে সমতা ফেরানোর লক্ষে জিদান মাঠে নামান এডার মিলিটাও, ক্যাসেমিরো, ফেডে ভালভার্দে ও মার্কো এ্যাসেনসিওকে। এছাড়া টনি ক্রুস ও লুকা জোভিচকে জায়গা ছেড়ে দিয়ে ৭৮ মিনিটে বদলী বেঞ্চে চলে যান। কিন্তু তারপরেও মাদ্রিদের পারফরমেন্সে কোন পার্থক্য চোখে পড়েনি। ম্যাচের শেষের দিকে তারা মাত্র দুটি শট করতে সমর্থ হয়েছিলেন। অন্যদিকে প্রথম ২৫ মিনিটেই কাডিজ অন্তত তিনটি গোলের ভাল সুযোগ হাতছাড়া করেছে। রামোস আলভারো নেগরেডোর প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেন। যদিও এই নেগরেডোর সহায়তায় গোলের দেখা পায় সফরকারীরা। তার হেডে এন্থনি লোপেজ মাদ্রিদের আগোছালো রক্ষনভাগকে ফাঁকি দিয়ে থিবো কোর্তোয়াকে পরাস্ত করেন। দ্বিতীয়ার্ধে সমতা ফেরানোর সুযোগ নষ্ট করেন ভিনসিয়াস জুনিয়র ও করিম বেনজেমা। ভিনসিয়াস জুনিয়রের হেড পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়, বেনজেমার দুর পাল্লার শট ক্রসবারে লেগে ফেরত আসে।
এর আগে দিনের শুরুতে সুয়ারেজ প্রথমবারের মত দিয়েগো কস্তার সাথে জুটি বেঁধে খেলেতে নেমেছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ইনজুরির কারনে কস্তা মাঠ ত্যাগ করলে এই জুটি বেশীক্ষন স্থায়ী হয়নি। বদলী বেঞ্চে বসে কস্তা অবশ্য শেষ পর্যন্ত দলের জয়ের জন্যই প্রার্থনা করেছেন। বুধবার বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রথম ম্যাচ কস্তার খেলা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এই জয়ে এ্যাথলেটিকো রিয়াল মাদ্রিদের থেকে দুই পয়েন্ট পিছিয়ে ও বার্সেলেনোর থেকে এক পয়েন্ট এগিয়ে টেবিলের ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। এদিকে সেল্টা ৬ ম্যাচে মাত্র একটি জয় নিয়ে টেবিলের ১৩তম স্থানে অবস্থান করছে।
টানা দুই ম্যাচে গোলশুন্য ড্র করার পর এই ম্যাচে জয়টা জরুরী ছিল এ্যাথলেটিকোর। হুয়েসকা ও ভিয়ারিয়ালের সাথে ড্র করার আগে অবশ্য গ্রানাডাকে ৬-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল দিয়েগো সিমিওনের দল। ঐ ম্যাচে এ্যাথলেটিকোর হয়ে অভিষেক হয়েছিল সুয়ারেজের। বদলী বেঞ্চ থেকে উঠে এসে তিনি দুটি গোলও করেছিলেন। প্রথম তিন ম্যাচে কস্তা ও সুয়ারেজের মধ্যে যেকোন একজনকে বদলী বেঞ্চে বসিয়ে মূল একাদশ সাজিয়েছিলেন সিমিওনে। কালই হুয়াও ফেলিক্সকে বদলী বেঞ্চে পাঠিয়ে কস্তা-সুয়ারেজ জুটি দিয়ে ম্যাচ শুরু করেন সিমিওনে। মানু সানচেজের পুল-ব্যাকে ২০ গজ দুর থেকে ৬ মিনিটে এ্যাথলেটিকোকে এগিয়ে দেন সুয়ারেজ। আর্সেনাল থেকে ধারে খেলতে আসা উরুগুয়ের মিডফিল্ডার লুকাস টোরেইরার কাল এ্যাথলেটিকোর জার্সি গায়ে অভিষেক হয়েছে।