ছয় গোলের নাটকীয় ম্যাচে জিততে পারেনি চেলসি, ড্র করেছে লিভারপুলও

319

লন্ডন, ১৮ অক্টোবর, ২০২০ (বাসস) : ম্যাচের শেষ মুহূর্তে জর্ডান হেন্ডারসনের একটি গোল বিতর্কিত অফসাইডের কারনে বাতিল হয়ে গেলে প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষে থাকা এভারটনের সাথে শেষ পর্যন্ত জয়ী হতে পারেনি লিভারপুল। আন্তর্জাতিক বিরতিতে যাবার আগে এ্যাস্টন ভিলার কাছে ৭-২ গোলে বিধ্বস্ত হওয়া জার্গেন ক্লপের দল আত্মবিশ^াস ফিরিয়ে আনার জন্য মরিয়া ছিল। কিন্তু গুডিসন পার্কে ঘটনাবহুল ম্যাচটিতে শেষ পর্যন্ত পেরে উঠেনি লিভারপুল।
এ দিকে স্ট্যামফোর্ড ব্রীজে ছয় গোলের নাটকীয় ম্যাচে চেলসিকে জিততে দেয়নি সাউদাম্পটন।
দিনের সব চেয়ে আকর্ষণীয় ম্যাচে আর্সেনালকে ১-০ গোলে পরাজিত করেছে ম্যানচেস্টার সিটি। ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ২৩ মিনিটে জয়সূচক গোলটি করেছেন রাহিম স্টার্লিং। এই জয়ে চার ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে প্রিমিয়ার লিগ টেবিলের নবম স্থানে রয়েছে পেপ গার্দিওলার দল। আন্তর্জাতিক বিরতির আগে লিগের দুই ম্যাচে পয়েন্ট হারিয়েছে সিটিজেনরা। আবারো এই ম্যাচে অনুপস্থিত ছিলেন দলের দুই সেরা পারফরমার কেভিন ডি ব্রুইনা ও অমারিক লাপোর্তে। ম্যাচ শেষে গার্দিওলা বলেছেন, ‘আমি মনে করি এই জয় আমাদের কিছুটা হলেও আত্মবিশ্বাস বাড়াবে ও দলকে এগিয়ে নেবে।’
এবারের মৌসুমে এখনো পর্যন্ত অপরাজিত থাকা এভারটন তিন পয়েন্টের ব্যবধানে এগিয়ে থেকে টেবিলের শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্তই কাল লিভারপুলের বিপরীতে গেছে। বিশেষ করে ভিএআর হেন্ডারসনের যে গোলটি বাতিল করেছে সে সম্পর্কে ক্লপ বলেছেন, ‘আজকের ম্যাচে বেশ কয়েকটি ভুল সিদ্ধান্তের শিকার আমরা হয়েছি। কিন্তু একটিমাত্র ঘটনাই আমি উল্লেখ করতে চাই, সেটা হলো হেন্ডারসনের গোল। এখানে আমি কোন অফসাইড দেখিনি। কিন্তু তারপরেও এটাকে অফসাইড ধরা হয়েছে। কারন কেউ একজন এসব কিছুর সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে।’
এভারটন ম্যানেজার কার্লো আনচেলত্তি তার দলের পারফরেমেন্স দারুন খুশী। যদিও তার দল এবারের লিগে টানা পঞ্চম জয় থেকে কাল বঞ্চিত হয়েছে। আনচেলত্তি বলেছেন, ‘আমরা তাদের সাথে দারুন প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছি। ১-০ গোলে পিছিয়ে থেকে সমতা আনি, আবার ২-১ গোলে পিছিয়ে থেকে সমতায় ফিরেছি। এটা দারুন একটি পরীক্ষা ছিল। আমি দারুন অনুভব করছি। বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের সাথে এভাবে লড়াই করাটা আমাদের আত্মবিশ^াস অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে যা ভবিষ্যতে কাজে আসবে।’
করোনা পজিটিভ হওয়ায় ভিলা পার্কে আগের দিন খেলতে পারেননি লিভারপুল তারকা সাদিও মানে। পুরো ম্যাচেই এই সেনেগালিজের অভাব দারুনভাবে অনুভূত হয়েছে। কাল এভারটনের মাঠে তৃতীয় মিনিটে এন্ডি রবার্টসনের কাট-ব্যাক থেকে মানেই লিভারপুলকে এগিয়ে দেন। ভার্জিল ফন ডিককে ডি বক্সের ভিতর বিপদজনক ভাবে ফাউল করে বসে এভারটন গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ড। কিন্তু ভিএআর রিভিউ পর্যালোচনা করে কোন পেনাল্টি দেয়া হয়নি লিভারপুলকে। কারন ফন ডিককে অল্পের জন্য অফসাইড পজিশনে পাওয়া গিয়েছিল। এই ঘটনায় পিকফোর্ড সৌভাগ্যবশত: লাল কার্ড পাননি। উল্টো ১৯ মিনিটে এভারটনের হয়ে সমতা ফেরান মাইকেল কিন। ম্যাচ শেষের ১৮ মিনিট আগে মোহাম্মদ সালাহ দুর্দান্ত স্ট্রাইকে আবারো লিভারপুলকে এগিয়ে দেন। ৮১ মিনিটে ডোমিনিক কালভার্ট-লুইনের হাত ধরে সমতা ফেরায় এভারটন। ম্যাচের একেবারে শেষ মিনিটে থিয়াগো আলচানতারাকে ফাউলের অপরাধে লাল কার্ড পেয়েছেন স্বাগতিক ফরোয়ার্ড রিচারলিসন। কিন্তু তখনো ম্যাচের নাটকীয়তা শেষ হয়নি। ইনজুরি টাইমে মানের ক্রস থেকে হেন্ডারসন গোল করলেও অফসাইডের কারনে তা বাতিল হয়ে যায়। এবারও লিভারপুলের সৌভাগ্যে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় ভিএআর।
স্ট্যামফোর্ড ব্রীজে ম্যাচর ২৮ মিনিটের মধ্যে টিমো ওয়ার্নারের দুই গোলে সাউদাম্পটনের বিপক্ষে ২-০ গোলে এগিয়ে গিয়েছিল চেলসি। সে কারনে পুরো ম্যাচের নিয়ন্ত্রনর নিজেদের করে নিয়েছিল স্বাগতিকরা। কিন্তু বিরতির ঠিক আগে ড্যানি ইনগিসের এবং ৫৭ মিনিটে চে এ্যাডামসের গোলে সমতা ফেরায় সফরকারীরা। দুই মিনিট পরেই ওয়ার্নারের এসিস্টে কেই হাভার্টজ আবারো ফ্রাংক লাম্পার্ডের দলকে এগিয়ে দেন। কিন্তু সাউদাম্পটনও ছেড়ে কথা বলেনি। ইনজুরি টাইমে ফ্রি-কিক থেকে সেইন্টদের হয়ে তৃতীয়বারের মত সমতা ফেরান জানিক ভাস্টারগার্ড।