স্বাস্থ্যবিধি পরিপূর্ণভাবে মেনে ধর্মীয় বিধিবিধান সমুন্নত রেখে দুর্গাপূজার আয়োজনের আহবান

556

ঢাকা , ১৭ অক্টোবর, ২০২০ (বাসস) : বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ পূজা উদযাপন পরিষদের এবং সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি পরিপূর্ণভাবে মেনে ধর্মীয় বিধিবিধান সমুন্নত রেখে দুর্গাপূজার আয়োজন ও অংশগ্রহণের জন্য সনাতন সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে শ্রীশ্রী ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির প্রাঙ্গণে আজ সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় নেতৃবৃন্দ এ আহবান জানান।
সংগঠনের সভাপতি মিলন কান্তি দত্তের সভাপতিত্বে বক্তব্য উপস্থাপন করেন সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জী। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শ্রী জে এল ভৌমিক, শ্রী শৈলেন্দ্রনাথ মজুমদার, অ্যাড. শ্যামল রায়, শুভাশিষ বিশ্বাস সাধন, বিপ্লব দে প্রমুখ।
মিলন কান্তি দত্ত দুর্গাপূজার নানাদিক নিয়ে আলোচনা করে আরো বলেন, “করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে এবছর ঢাকায় কোনো মন্ডপে কুমারী পূজা উদযাপন করা হবে না। তবে ঢাকার বাইরে কয়েকটি জায়গায় কুমারী পূজা হতেও পারে।”
মহামারীর কারণে করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে এবছর বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করা হচ্ছে উল্লেখ করে নির্মল কুমার চ্যাটার্জী বলেন, ‘করোনা অতিমারীর কারণে এবার উৎসব সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো পরিহার করে সাত্ত্বিক পূজায় সীমাবদ্ধ রাখতে হবে বিধায় এবারের দুর্গোৎসবকে ‘দুর্গাপূজা’ হিসেবে অভিহিত করছি।’ তবে সপ্তমী তিথিতে বিশ্ববাসীর করোনামুক্ত হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারার জন্য বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি।
এবার মহালয়া ছিল ১৭ সেপ্টেম্বর। মহালয়ার ৬ দিন পর সাধারণত দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হলেও পঞ্জিকার হিসাবে এবার আশ্বিন মাস ‘মল মাস’, মানে অশুভ মাস হওয়ার কারনে এবার কার্তিক মাসে পুজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে । পঞ্জিকা অনুযায়ী, ২২ অক্টোবর মহাষষ্ঠী তিথিতে শুরু হবে দুর্গাপূজা। ২৬ অক্টোবর মহাদশমীতে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে কীভাবে এবার পূজা করতে হবে, সে বিষয়ে গত ২৬ অগাস্ট পূজা উদযাপন পরিষদ ২৬ দফা দিক-নির্দেশনা দেয়। পরে ৪ অক্টোবর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে পূজাকেন্দ্রিক সভার সিদ্ধান্তের আলোকে অতিরিক্ত ৭ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নির্মল কুমার চ্যাটার্জী বলেন, নির্দেশনা মেনে এবারের পূজায় সাংস্কৃতিক আয়োজন থাকবেনা। অঞ্জলি দানের সময় ফেইসবুক লাইভের সহযোগিতা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। “যেসব জায়গায় সরাসরি অঞ্জলি হবে, সেখানে ২৫ থেকে ৫০ জনের বেশি আসতে পারবেন না। সন্ধ্যা আরতির পর রাত ৯টার মধ্যে অবশ্যই পূজা মন্ডপ বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছি”।
তিনি বলেন, “সপ্তমী তিথিতে বিশ্ববাসীর করোনামুক্ত হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার জন্য প্রার্থনা করা হবে। জনসমাগমের কারনে সাস্থ্যবিধি যাতে ভঙ্গ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। দুর্গা পূজায় আগেই প্রসাদ বিতরণ ও বিজয়া দশমীর শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ।
এছাড়াও নির্দেশনায় ভক্তিমূলক সংগীত ছাড়া অন্য কোনো গান যেন বাজানো, মাইক বা পিএ সেট যেন ব্যবহার করা, পূজামন্ডপে ‘প্রয়োজনের অতিরিক্ত দীর্ঘ সময়’ কোনো দর্শনার্থীদের থাকা এবং সন্ধ্যার বিরতির পর দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সর্বশেষ দেওয়া তথ্য অনুসারে, এ বছর সারাদেশে ৩০ হাজার ২শ ২৩টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গত বছর সারাদেশে দুর্গাপূজার মন্ডপের সংখ্যা ছিল ৩১ হাজার ৩৯৮টি। গতবছরের তুলনায় এবার ১হাজার ১শ ৭৫ টি মন্ডপে পূজা কম হচ্ছে।