টাঙ্গাইলে মাদরাসা ছাত্রী ধর্ষণ মামলায় ৫ জনের মৃত্যুদন্ড

471

টাঙ্গাইল, ১৫ অক্টোবর, ২০২০ (বাসস) : টাঙ্গাইলের ভুঞাপুর উপজেলায় এক মাদরাসা শিক্ষার্থীকে অপহরণের পর সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় পাঁচ জনকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক খালেদা ইয়াসমীন এ রায় ঘোষনা করেন। রায়ে সাজাপ্রাপ্ত প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানাও করা হয়।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তরা হলো- সাগর চন্দ্র, সুজন মনি ঋষি, রাজন, সঞ্জিত ও গোপী চন্দ্র শীল।
আজ সঞ্জিত ও গোপী চন্দ্র শীল আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি তিন আসামি সাগর চন্দ্র, সুজন মনি ঋষি ও রাজন পলাতক রয়েছে।
টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (বিশেষ পিপি) এডভোকেট একেএম নাসিমুল আকতার বলেন, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সাগর চন্দ্রের সাথে মাদরাসা ছাত্রীর সর্ম্পক হয় । এরই সূত্র ধরে সাগর চন্দ্র ও তার সঙ্গীরা ২০১২ সালের ১৫ জানুয়ারি ভূঞাপুর উপজেলার সালদাইর ব্রীজ এলাকা থেকে মাদরাসা ছাত্রীকে অপহরণ করে মধুপুরের অপর আসামি রাজনের বাড়িতে নিয়ে যায় । সেখানে দু’দিন আটকিয়ে রেখে ওই মাদরাসা ছাত্রীকে তারা গণধর্ষণ করে। পরে ১৮ জানুয়ারি ওই এলাকার বংশাই নদীর পাড়ে অর্ধ উলঙ্গ ও অজ্ঞান অবস্থায় মাদরাসা ছাত্রী পড়ে থাকে। এরপর স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে। ওই ছাত্রীর জ্ঞান ফিরলে সে তার ভাইকে ফোন দেয়। ছাত্রীর ভাই মধুপুর থেকে আহত অবস্থায় ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে ভুঞাপুর থানায় নিয়ে আসে। পরে ওই ছাত্রী বাদি হয়ে ৫ ধর্ষকের নামে ভূঞাপুর থানায় একই বছরের ১৯ জানুয়ারি মামলা দায়ের করেন। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ধর্ষিতার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট একেএম নাসিমুল আকতার আরও বলেন, এ মামলায় ম্যাজিস্ট্রট, চিকিৎসক, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ভিকটিমসহ মোট ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ এ রায় ঘোষনা করা হয়।
আদালত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সংশোধনী ২০০৩ এর ধারা ৯(৩)/৩০ ধারায় এই রায় দিয়েছেন।
মামলায় বিবাদী পক্ষের আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক ও গোলাম মোস্তফা মিঞা এ রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘রায়ে ন্যায় বিচার পাইনি, ‘আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো’।
এদিকে দুপুরে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় সাংবাদিকদের বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ সঠিকভাবে তদন্ত করে আসামিদের গ্রেফতার করেছে। পুলিশের সঠিক পদক্ষেপের কারণে ধর্ষিতা আজ ন্যায় বিচার পেয়েছে। এটি একটি যুগান্তকারী রায়। এতে করে ধর্ষকরা সাবধান হয়ে যাবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।