দেশে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে, বেড়েছে সুস্থতা

354

ঢাকা, ১৫ অক্টোবর, ২০২০ (বাসস) : দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা কমেছে এবং বেড়েছে সুস্থতার হার।
গত ২৪ ঘন্টায় ১৪ হাজার ১০৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৬০০ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ৮৪ জন কম শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ১৪ হাজার ৪১১ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৬৮৪ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১১ দশমিক ৩৪ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১১ দশমিক ৬৯ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ৩৫ শতাংশ কম।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ২১ লাখ ২৬ হাজার ৫৫২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৫৫৯ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ০৮ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৮ দশমিক ১৩ শতাংশ।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৭৮০ জন। গতকালের চেয়ে আজ ২০৪ জন বেশি সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ১ হাজার ৫৭৬ জন। দেশে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ৯৯ হাজার ২২৯ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭৭ দশমিক ৮১ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৭৭ দশমিক ৬৭ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ১৪ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকালের চেয়ে আজ ১ জন কম মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ১৬ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ হাজার ৬০৮ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৬ শতাংশ। গত ৭ অক্টোবর থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৪ হাজার ২৬১ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৪ হাজার ১৬৯ জনের। গতকালের চেয়ে ৯২টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ১০৯টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৪ হাজার ১০৪ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৪ হাজার ৪১১ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৩০৭টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২২৫৮ দশমিক ০৪ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ১৭৫৭ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৩২ দশমিক ৯৩ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ১৫ জনের মধ্যে পুরুষ ৯ জন, আর নারী ৬ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ৩১৪ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ২৯৪ জন। শতকরা হিসাবে পুরুষ ৭৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ; নারী ২৩ দশমিক ০৭ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ১৫ জনই হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন ।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৩১ থেকে ৪০ বছরের ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের বছরের ৩ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ১০ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৭ জন; যা দশমিক ৪৮ শতংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৪৫ জন; যা দশমিক ৮০ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১২৬ জন; যা ২ দশমিক ২৫ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩১৪ জন; যা ৫ দশমিক ৬০ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৭০৮ জন; যা ১২ দশমিক ৬২ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৪৯৭ জন; যা ২৬ দশমিক ৬৯ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ২ হাজার ৮৯১ জন; যা ৫১ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪ জন, খুলনা এবং সিলেট বিভাগে ১ জন করে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ২ হাজার ৮৬৩ জন; যা ৫১ দশমিক ০৫ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ১২৮ জন; যা ২০ দশমিক ১১ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৩৬০ জন; যা ৬ দশমিক ৪২ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪৫৩ জন; যা ৮ দশমিক ০৮ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ১৯৩ জন; যা ৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৩৯ জন; যা ৪ দশমিক ২৬ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ২৫৪ জন; যা ৪ দশমিক ৫৩ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১১৮ জন; যা ২ দশমিক ১০ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ৫১৯টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৭৮৮ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ৭৩১টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩১৪টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ১৭৩ জন ও শয্যা খালি আছে ১৪১টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৮২টি, ভর্তিকৃত রোগী ১৫৭ জন ও শয্যা খালি আছে ৬২৫টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৭ জন ও শয্যা খালি আছে ২২টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৩৮৬টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৫৩৪ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৮৫২টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২১১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৮০ জন ও শয্যা খালি আছে ১৩১টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১১ হাজার ৬৮৭টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৪৭৯ জন এবং শয্যা খালি আছে ৯ হাজার ২০৮টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৬৪টি, রোগী ভর্তি আছে ২৭০ জন এবং খালি আছে ২৯৪টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১২ হাজার ৯৮৭টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৫৩৯টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৩৪৪টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ১ হাজার ৭৮০ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ১১৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৮৮ জন, রংপুর বিভাগে ৫৭ জন, খুলনা বিভাগে ১৩৯ জন, বরিশাল বিভাগে ১৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ১১৫ জন, সিলেট বিভাগে ৩৬ জন এবং ময়মনসিংহে ১৬ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ১৬০ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ২৫৮ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৮৩ হাজার ৮০০ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৭১ হাজার ৪৭১ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১২ হাজার ৩২৯ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৮৩৬ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৮৪৯ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৪৪ হাজার ১৯৬ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫ লাখ ৪ হাজার ১০৯ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪০ হাজার ৮৭ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৩৮৫টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৩৫ হাজার ৬৬৭টি আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ১৬৫টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪০ হাজার ২১৭টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ১৭ লাখ ৬৮ হাজার ২০৭টি।
এছাড়া ২৪ ঘন্টায় কোভিড বিষয়ক টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন ৩ হাজার ৮৩২ জন। এ পর্যন্ত শুধু কোভিড বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেছেন ৪ লাখ ৭৮ হাজার ৭০০ জন। প্রতিদিন ৩৫ জন চিকিৎসক ও ১০ জন স্বাস্থ্য তথ্যকর্মকর্তা দুই শিফটে মোট ৯০ জন টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৪ হাজার ৮৭৫ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ১০ লাখ ৪৩ হাজার ৯৫১ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮১ লাখ ২৭ হাজার ১০৬ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ২৯ হাজার ৬৫৩ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩ কোটি ৮০ লাখ ২ হাজার ৬৯৯ জন এবং ১০ লাখ ৮৩ হাজার ২৩৪ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।