দেশে গত ২৪ ঘন্টায় কোভিড-১৯ এ মৃত্যু ২২ জন, সুস্থ ১,৪৮২

237

ঢাকা, ১৩ অক্টোবর, ২০২০ (বাসস) : দেশে গত ২৪ ঘন্টায় কোভিড-১৯ এ ২২ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। আর সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৪৮২ জন।
গতকালের চেয়ে আজ ৯ জন কম মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ৩১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ হাজার ৫৭৭ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৬ শতাংশ। গত ৭ অক্টোবর থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৪৮২ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ৯৫ হাজার ৮৭৩ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭৭ দশমিক ৬০ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৭৭ দশমিক ৫২ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ০৮ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৩ হাজার ৮১৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৫৩৭ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ১৩ হাজার ২২৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৪৭২ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১১ দশমিক ১৩ শতাংশ। আগের দিনও এই হার ছিল ১১ দশমিক ১৩ শতাংশ।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ২০ লাখ ৯৮ হাজার ৩৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ লাখ ৮১ হাজার ২৭৫ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ১৭ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৮ দশমিক ২২ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৪ হাজার ২১ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৩ হাজার ২৮৩ জনের। গতকালের চেয়ে ৭৩৮টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ১০৯টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৩ হাজার ৮১৫ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৩ হাজার ২৮৭ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৫৮৮টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২২৩৮ দশমিক ৭৬ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ১৭৩৭ দশমিক ৩০ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৩২ দশমিক ৭৫ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ২২ জনের মধ্যে পুরুষ ১৭ জন, আর নারী ৫ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ২৯২ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ২৮৫ জন। শতকরা হিসাবে পুরুষ ৭৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ; নারী ২৩ দশমিক ০৪ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ২২ জনই হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন ।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের বছরের মধ্যে ৩ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ১৪ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৭ জন; যা দশমিক ৪৮ শতংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৪৫ জন; যা দশমিক ৮১ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১২৬ জন; যা ২ দশমিক ২৬ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩১৩ জন; যা ৫ দশমিক ৬১ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৭০২ জন; যা ১২ দশমিক ৫৯ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৪৯২ জন; যা ২৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ২ হাজার ৮৭১ জন; যা ৫১ দশমিক ৫০ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ১৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫ জন এবং রংপুর বিভাগে মৃত্যুবরণ করেছেন ২ জন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ২ হাজার ৮৪৪ জন; যা ৫১ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ১২২ জন; যা ২০ দশমিক ১২ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৩৫৯ জন; যা ৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪৪৯ জন; যা ৮ দশমিক ০৫ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ১৯৩ জন; যা ৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৩৮ জন; যা ৪ দশমিক ২৭ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ২৫৪ জন; যা ৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১১৮ জন; যা ২ দশমিক ১২ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ৫১৯টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৭৫৬ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ৭৬৩টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩১৪টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ১৫৭ জন ও শয্যা খালি আছে ১৫৭টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৮২টি, ভর্তিকৃত রোগী ১৩৭ জন ও শয্যা খালি আছে ৬৪৫টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৫ জন ও শয্যা খালি আছে ২৪টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৩৮৬টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৫২২ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৮৬৪টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২১১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৭৮ জন ও শয্যা খালি আছে ১৩২টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১১ হাজার ৬৮৭টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৪১৫ জন এবং শয্যা খালি আছে ৯ হাজার ২৭২টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৬৪টি, রোগী ভর্তি আছে ২৫০ জন এবং খালি আছে ৩১৪টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১২ হাজার ৯৮৭টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৫৩৯টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৩৪৪টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA  কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ১ হাজার ৪৮২ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ৬৩৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪০৫ জন, রংপুর বিভাগে ১৫ জন, খুলনা বিভাগে ১৭৫ জন, বরিশাল বিভাগে ৩০ জন, রাজশাহী বিভাগে ১৫১ জন, সিলেট বিভাগে ৩৬ জন এবং ময়মনসিংহে ৩১ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ২০২ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৪২২ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৮৩ হাজার ৪৬২ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৭০ হাজার ৯৬১ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১২ হাজার ৫০১জন।
গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৭৯৮ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৮৬৮ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৪২ হাজার ৭২৫ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫ লাখ ২ হাজার ১৪৯ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪০ হাজার ৫৭৬ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৪৩১টি, আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ১৫৫টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৬১৬ টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ১৬ লাখ ৮৫ হাজার ৩৬৫টি।
এছাড়া ২৪ ঘন্টায় কোভিড বিষয়ক টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন ৪ হাজার ৪৯ জন। এ পর্যন্ত শুধু কোভিড বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেছেন ৪ লাখ ৭০ হাজার ৯৮৯ জন। প্রতিদিন ৩৫ জন চিকিৎসক ও ১০ জন স্বাস্থ্য তথ্যকর্মকর্তা দুই শিফটে মোট ৯০ জন টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৪ হাজার ৩১৩ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ১০ লাখ ৩৪ হাজার ৫৮৪৪ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১২ অক্টোবর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৭৯ লাখ ৮৭ হাজার ৩০৬ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ২৭ হাজার ৯০৭ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১২ অক্টোবর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩ কোটি ৭৪ লাখ ২৩ হাজার ৬৬০ জন এবং ১০ লাখ ৭৪ হাজার ৮১৭ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।