বাসস দেশ-৩৫ : রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধান না হলে আঞ্চলিক অনিশ্চয়তার আশঙ্কা মোমেনের

261

বাসস দেশ-৩৫
মোমেন-রোহিঙ্গা
রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধান না হলে আঞ্চলিক অনিশ্চয়তার আশঙ্কা মোমেনের
ঢাকা, ৭ অক্টোবর, ২০২০ (বাসস): পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসন না করা হলে ‘পুরো অঞ্চলে’ অনিশ্চিত পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
তিনি আজ তার দপ্তরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা রোহিঙ্গা শিবিরের চারপাশে কাঁটাতারের বেড়া তৈরি করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু কিছু আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং এনজিওর বিরোধিতার কারণে আমরা তা করতে পারিনি… আমরা এখন এটি করতে চাই (শিবিরগুলো সুরক্ষিত রাখার জন্য)।’
গত পাঁচ দিনে কক্সবাজার রোহিঙ্গা শিবিরে আধিপত্য প্রতিষ্ঠাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে কমপক্ষে সাতজন রোহিঙ্গা নিহত হওয়ার প্রেক্ষাপটে মন্ত্রী এই মন্তব্য করেন।
মোমেন দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী রোহিঙ্গা গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, ‘এটা দু:খজনক, খুবই দু:খজনক (রোহিঙ্গা শিবিরে হত্যাকান্ড)। আমরা দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছি যে, রোহিঙ্গা সংকট সমাধান না হলে এই অঞ্চলে অনিশ্চয়তা তৈরি হতে পারে।’
তিনি বলেন, জাপান, চীন, ভারত ও কোরিয়ার মতো দেশগুলো মিয়ানমারে বিনিয়োগ করছে। রোহিঙ্গা সঙ্কট জিইয়ে রাখা হলে পুরো অঞ্চলে অনিশ্চয়তা তৈরি হতে পারে। ফলে তারা তাদের বিনিয়োগের কাক্সিক্ষত রিটার্ন পাবে না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা মিয়ানমারে বিনিয়োগ করছেন। কিন্তু অনিশ্চয়তা দেখা দিলে আপনারা প্রত্যাশিত রিটার্ন পাবেন না। সুতরাং, আসুন রোহিঙ্গা সঙ্কটের টেকসই সমাধান সন্ধানে একযোগে কাজ করি।’
রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে বাংলাদেশের আহ্বানের সাথে কোনো দেশই অসম্মত নয় উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের শান্তিপূর্ণভাবে তাদের মূল বাসভূমি রাখাইন রাজ্যে প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে একটি টেকসই সমাধানের জন্য মিয়ানমারে বিনিয়োগকারী দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মানব পাচারকারী একটি চক্র দ্রুত গতির ইন্টারনেট ব্যবহার করে স্মার্টফোনের মাধ্যমে রোহিঙ্গা মহিলাদের ছবি শেয়ার করায় সরকার রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে মাদক এবং নারী ও শিশু পাচার রোধে ফোরজি ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক নিষিদ্ধ করতে চেয়েছিল।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কিন্তু আন্তর্জাতিক এনজিওগুলো এর বিরোধিতা করেছে এবং এটিকে তাদের মূল ইস্যু করেছে।
মঙ্গলবার রাতের বেলা কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালংয়ের লম্বাশিয়া ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে চার জন নিহত হয়েছে। এর আগে ৪-৫ অক্টোবর পর্যন্ত সংঘর্ষের সময় তিন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছিল।
এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে শিবিরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সদস্যরা মোতায়েন রয়েছেন এবং পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলায় মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নেয়। তাদের বেশিরভাগ মিয়ানমারের সামরিক অভিযানের পরে সেখানে পৌঁছে। এ ঘটনাকে জাতিসংঘ ‘জাতিগত নিধনের পাঠ্যপুস্তক উদাহরণ’ এবং অন্যান্য অধিকার গোষ্ঠী ‘গণহত্যা’ বলে অভিহিত করেছে।
মিয়ানমার তাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হলেও কার্যত গত তিন বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি।
বাসস/টিএ/অনুবাদ-এইচএন/২১৫৫/-শআ