দেশে করোনা শনাক্তের হার কমেছে, বেড়েছে সুস্থতা

238

ঢাকা, ৭ অক্টোবর, ২০২০ (বাসস) : দেশে গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে শনাক্তের হার কমেছে, বেড়েছে সুস্থতা।
গত ২৪ ঘন্টায় ১৩ হাজার ৩২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৫২০ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ১২ হাজার ৩৪৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৪৯৯ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ১২ দশমিক ১৪ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ৪৮ শতাংশ কম।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ২০ লাখ ২৬ হাজার ৮০৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ লাখ ৭৩ হাজার ১৫১ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ৪১ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৭৯৮ জন। গতকালের চেয়ে আজ ১৪৭ জন বেশি সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ১ হাজার ৬৫১ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ৮৪ হাজার ৮৩৩ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭৬ দশমিক ৮১ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৭৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ১৭ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকালের চেয়ে আজ ৫ জন বেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ৩০ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ হাজার ৪৪০ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৬ শতাংশ। গত ২ অক্টোবর থেকে গতকাল পর্যন্ত মৃত্যুর এই হার ছিল ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৩ হাজার ৮৮ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১২ হাজার ৩৯৮ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৬৯০টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ১০৯টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৩ হাজার ৩২ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১২ হাজার ৩৪৫ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৬৮৭টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২১৯১ দশমিক ০৬ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ১৬৮৩ দশমিক ০৩ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৩১ দশমিক ৯৪ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ৩৫ জনের মধ্যে পুরুষ ২৫ জন, আর নারী ১০ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ২০০ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ২৪০ জন। শতকরা হিসাবে পুরুষ ৭৭ দশমিক ২১ শতাংশ; নারী ২২ দশমিক ৭৯ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ৩৪ জন হাসপাতালে ও ১ জন বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেছেন ।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে ১ জন, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ১ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৮ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ২২ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৬ জন; যা দশমিক ৪৮ শতংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৪৫ জন; যা দশমিক ৮৩ শতাংশ। ২১ থেকে ৩১ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১২৪ জন; যা ২ দশমিক ২৮ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩০৪ জন; যা ৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৬৯৩ জন; যা ১২ দশমিক ৭৪ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৪৫৯ জন; যা ২৬ দশমিক ৮২ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ২ হাজার ৭৮৯ জন; যা ৫১ দশমিক ২৭ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ১৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৬ জন, রাজশাহী ও বরিশাল বিভাগে ২ জন করে, খুলনায় ৩ জন এবং সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে মৃত্যুবরণ করেছেন ১ জন করে। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ২ হাজার ৭৪৮ জন; যা ৫০ দশমিক ৫১ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ১০২ জন; যা ২০ দশমিক ২৬ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৩৫৭ জন; যা ৬ দশমিক ৫৬ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪৪৫ জন; যা ৮ দশমিক ১৮ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ১৯৩ জন; যা ৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৩৫ জন; যা ৪ দশমিক ৩২ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ২৪৭ জন; যা ৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১১৩ জন; যা ২ দশমিক ০৮ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ৫১৯টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৮০১ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ৭১৮টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩১৪টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ১৬৫ জন ও শয্যা খালি আছে ১৪৯টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৮২টি, ভর্তিকৃত রোগী ১৩২ জন ও শয্যা খালি আছে ৬৫০টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৫ জন ও শয্যা খালি আছে ২৪টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৩৮৬টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৬৪৮ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৭৩৮টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২১১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৮৪ জন ও শয্যা খালি আছে ১২৭টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১১ হাজার ৬৮৭টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৫৮১ জন এবং শয্যা খালি আছে ৯ হাজার ১০৬টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৬৪টি, রোগী ভর্তি আছে ২৬৪ জন এবং খালি আছে ৩০০টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১২ হাজার ৯৮৭টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৫৩৯টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৩৪৪টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ১ হাজার ৭৯৮ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ৮৯০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৭৬ জন, রংপুর বিভাগে ২৫৯ জন, খুলনা বিভাগে ১০৯ জন, বরিশাল বিভাগে ৪০ জন, রাজশাহী বিভাগে ৮৯ জন, সিলেট বিভাগে ১৪৩ জন এবং ময়মনসিংহে ১ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ১৮৬ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৩২৫ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৮২ হাজার ৫৮৫ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৬৮ হাজার ৫৯০ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৪ হাজার ৯৯৫ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৬৮৪ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার ১১৮ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৩৮ হাজার ৫২৮ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৪ লাখ ৯৭ হাজার ২৯৫ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪১ হাজার ২৩৩ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৬৮৯টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪০ হাজার ৬টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ১৫৬টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪৬ হাজার ৮৪১টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ১৪ লাখ ৬১ হাজার ৬৩৭টি।
এছাড়া ২৪ ঘন্টায় কোভিড বিষয়ক টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন ৪ হাজার ৯৫৪ জন। এ পর্যন্ত শুধু কোভিড বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেছেন ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৪২২ জন। প্রতিদিন ৩৫ জন চিকিৎসক ও ১০ জন স্বাস্থ্য তথ্যকর্মকর্তা দুই শিফটে মোট ৯০ জন টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৩ হাজার ৮৩৭ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ১০ লাখ ৯ হাজার ৫৭৩ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৬ অক্টোবর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৭৪ লাখ ৮৮ হাজার ৬০৫ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ২১ হাজার ৩০১ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৬ অক্টোবর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩ কোটি ৫৩ লাখ ৪৭ হাজার ৪০৪ জন এবং ১০ লাখ ৩৯ হাজার ৪০৬ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।