বাসস দেশ-১০
নদী-নৌখাত রক্ষা
নদী ও নৌখাত রক্ষায় সরকারের উদ্যোগ ইতিবাচক, আলোচনায় বিশিষ্টজনেরা
ঢাকা, ৩ অক্টোবর, ২০২০ (বাসস) : বর্তমান সরকার দেশের নদ-নদী রক্ষাসহ নৌ পরিবহন খাতের উন্নয়নে এ পর্যন্ত যেসব উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সেগুলো ইতিবাচক। তবে এসব উদ্যোগের কিছু কিছু কার্যকর হলেও অধিকাংশগুলোই বাস্তবায়নে ধীরগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন বিশিষ্টজনেরা।
পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিন ক্লাব অব বাংলাদেশ (জিসিবি) আয়োজিত ‘নদী রক্ষা ও নৌখাতের উন্নয়ন: বঙ্গবন্ধু থেকে শেখ হাসিনা’ শীর্ষক আজ এক অনলাইন আলোচনায় সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞসহ বিশিষ্টজনেরা এই অভিমত ব্যক্ত করেন।
নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সভাপতি হাজী মোহাম্মদ শহীদ মিয়ার সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মীর তারেক আলী, উন্নয়ন ধারা ট্রাস্টের সদস্যসচিব আমিনুর রসুল বাবুল, বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের মহাসচিব চৌধুরী আশিকুল আলম, আদি যমুনা বাঁচাও আন্দোলনের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক ও বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যসচিব মিহির বিশ্বাস, দৈনিক জনকন্ঠর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রাজন ভট্টাচার্য এবং জিসিবির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে।
ড. মীর তারেক আলী বলেন, আমাদের দেশের ভূ-প্রাকৃতিক অবস্থা ও অধিক জনসংখ্যার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে ভূমির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। সে ক্ষেত্রে প্রকৃতিপ্রদত্ত নদ-নদীগুলোর সুষ্ঠু ব্যবহারের মাধ্যমে নৌ পরিবহন ব্যবস্থাকে আরো সম্প্রসারিত করা প্রয়োজন। যাতে সাধারণ মানুষ নৌপথের ওপর অধিক নির্ভরশীল হয় এবং সড়কের ওপর নির্ভরশীলতা কমে আসে। এর ফলে ভূমির অপচয় কম হবে।
অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী বলেন, এ ভূখন্ডের মানুষের সভ্যতা গড়ে উঠেছে নদী ও নৌ পরিবহন ব্যবস্থাকে কেন্দ্র করে। বৃহত্তর খুলনা ও বরিশালসহ দেশের উপকূলীয় জনপদের মানুষের যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনের প্রধান মাধ্যম ছিল নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থা। কিন্তু নদীগুলো মরে যাওয়ায় নৌপথ বিলুপপ্ত হচ্ছে, আমাদের প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে।
“বর্তমান সরকার নদ-নদী রক্ষাসহ নৌ পরিবহন খাতের উন্নয়নে এ পর্যন্ত যেসব উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সেগুলো ইতিবাচক। তবে উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ধীরগতি পরিলক্ষিত হ”্ছ”ে বলেন তিনি। আশেক-ই-এলাহী পৃথক ‘নদী মন্ত্রণালয়’ গঠন অথবা নদী রক্ষা কমিশনকে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে ন্যস্ত করার দাবি জানান।
আমিনুর রসুল বাবুল বলেন, জনস্বার্থমূলক যেকোনো উদ্যোগ বাস্তবায়নের জন্য দরকার রাজনৈতিক সদিচ্ছা। বর্তমান সরকারের সেই সদিচ্ছা আছে। কারণ তারা দলীয় নির্বাচনী ইশতেহারে নদী রক্ষা ও নৌ পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি যুক্ত করেছে। নির্বাচন-পরবর্তীকালে সরকার গঠনের পর এ বিষয়ে অনেকগুলো ইতিবাচক উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কিন্তু সেগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতা দেখা যাচ্ছে।
মিহির বিশ্বাস বলেন, নদ-নদীসহ প্রাকৃতিক জলাভূমি রক্ষার ক্ষেত্রে বড় বাধা হচ্ছে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রশি টানাটানি। এসব প্রতিরোধে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন, ঢাকা ওয়াসা, জেলা প্রশাসন, বিআইডব্লিউটিএ, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মধ্যে সমন্বয় থাকতে হবে।
আশীষ কুমার দে বলেন, জাতীয় স্বার্থে নদী রক্ষাসহ নৌখাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে পথে হেঁটেছিলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও একই পথে হাঁটছেন। বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার সময় অর্থাৎ ১৯৭৫ সালে নদী ডেজিংয়ের জন্য বিআইডব্লিউটিএর বহরে মাত্র সাতটি ড্রেজার ছিল। বর্তমান সরকার গত একযুগে সেই বহরে যুক্ত করেছে নতুন ৩৮টি ড্রেজার এবং খুব শিগগির আরো ৩৫টি ড্রেজার যুক্ত হচ্ছে।
উচ্চ আদালত নদী রক্ষার পক্ষে একাধিক যুগান্তকারী রায় দিয়েছেন এবং সাধারণ মানুষও নদী বাঁচাতে ও নৌ যোগোযোগের উন্নয়ন চায় বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।
বাসস/সবি/কেসি/১৬২৫/-কেকে
Home 0সকল সংবাদ বাসস দেশ বাসস দেশ-১০ : নদী ও নৌখাত রক্ষায় সরকারের উদ্যোগ ইতিবাচক, আলোচনায় বিশিষ্টজনেরা