দেশে ২৪ ঘন্টায় কোভিড-১৯ এ মৃত্যু ২১ জন, সুস্থ ১,৫৯১

342

ঢাকা, ১ অক্টোবর, ২০২০ (বাসস) : দেশে গত ২৪ ঘন্টায় কোভিড-১৯ এ ২১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। আর সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৫৯১ জন।
গতকালের চেয়ে আজ ১১ জন কম মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ৩২ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ হাজার ২৭২ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ। গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৫৯১ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ৭৭ হাজার ৭৮ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭৫ দশমিক ৯১ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৭৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ১২ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১১ হাজার ৪২০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৫০৮ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ৭২ জন বেশি শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল ১৩ হাজার ৪০৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৪৩৬ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ২০ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ১০ দশমিক ৭১ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার ২ দশমিক ৪৯ শতাংশ বেশি।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ১৯ লাখ ৫৯ হাজার ৭৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ লাখ ৬৪ হাজার ৯৮৭ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ৬৩ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৮ দশমিক ৬৬ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১১ হাজার ৪১০ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৩ হাজার ১৫৫ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ১ হাজার ৭৪৫টি নমুনা কম সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ১০৮টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১১ হাজার ৪২০ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৩ হাজার ৪০৪ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ১ হাজার ৯৮৪টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২১৪৩ দশমিক ১২ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ১৬২৬ দশমিক ৯৪ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৩০ দশমিক ৯৬ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ২১ জনের মধ্যে পুরুষ ১৬ জন, আর নারী ৫ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ৭৯ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ১৯৩ জন। ২৪ ঘন্টায় ১৮ জন হাসপাতালে এবং ৩ জন বাসায় মৃত্যুবরণ করেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৬ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ১৪ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৪ জন; যা দশমিক ৪৬ শতংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৪২ জন; যা দশমিক ৮০ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১১৯ জন; যা ২ দশমিক ২৬ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৯৯ জন; যা ৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৬৭৯ জন; যা ১২ দশমিক ৮৮ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৪১৮ জন; যা ২৬ দশমিক ৯০ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ২ হাজার ৬৯১ জন; যা ৫১ দশমিক ০৪ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ১১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩ জন, রাজশাহী বিভাগে ৫ জন এবং রংপুর বিভাগে ২ জন করে মারা গেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ২ হাজার ৬৪২ জন; যা ৫০ দশমিক ১১ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ৭৮ জন; যা ২০ দশমিক ৪৫ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৩৫০ জন; যা ৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪৩৫ জন; যা ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ১৮৭ জন; যা ৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৩১ জন; যা ৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ২৩৯ জন; যা ৪ দশমিক ৫৩ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১১০ জন; যা ২ দশমিক ০৯ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ৪১৯টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৮০৪ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ৭১৫টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩১৪টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ২০১ জন ও শয্যা খালি আছে ১১৩টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৮২টি, ভর্তিকৃত রোগী ১১৪ জন ও শয্যা খালি আছে ৬৬৮টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৫ জন ও শয্যা খালি আছে ২৪টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৩৮৬টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৭৩৯ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৬৪৭টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২১১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৮৩ জন ও শয্যা খালি আছে ১২৮টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১১ হাজার ৬৮৭টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৬৫৭ জন এবং শয্যা খালি আছে ৯ হাজার ৩০টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৬৪টি, রোগী ভর্তি আছে ২৯৯ জন এবং খালি আছে ২৬৫টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১২ হাজার ৯৮৭টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৫৩৯টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৩৪৪টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd Gi CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ১ হাজার ৫৯১ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ৮৬৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৫৭ জন, রংপুর বিভাগে ৫৯ জন, খুলনা বিভাগে ১৯৩ জন, বরিশাল বিভাগে ২৭ জন, রাজশাহী বিভাগে ২০৫ জন, সিলেট বিভাগে ৭৫ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৭ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ১৫২ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৩৫১ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৮১ হাজার ৪৯৯ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৬৬ হাজার ৬৪১ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৪ হাজার ৮৫৮ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৫৬ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার ১০৩ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৩৪ হাজার ৩৯২ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৪ লাখ ৯১ হাজার ২৬২ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪৩ হাজার ১৩০ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৭ হাজার ৩৬৮টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৩৮ হাজার ৮২৩টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ১৬৬টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪৬ হাজার ৩৫৭টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ১২ লাখ ২৭ হাজার ৭৩২টি।
করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৪৯৮ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া ২৪ ঘন্টায় কোভিড বিষয়ক টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন ৪ হাজার ৬৮ জন। এ পর্যন্ত শুধু কোভিড বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেছেন ৪ লাখ ১৭ হাজার ৫৯৮ জন। প্রতিদিন ৩৫ জন চিকিৎসক ও ১০ জন স্বাস্থ্য তথ্যকর্মকর্তা দুই শিফটে মোট ৯০ জন টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৪ হাজার ২০৮ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৯ লাখ ৮৭ হাজার ৮৪৮ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬৯ লাখ ৮৬ হাজার ৬৫৪ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ১৪ হাজার ১৯৮ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩ কোটি ৩৫ লাখ ২ হাজার ৪৩০ জন এবং ১০ লাখ ৪ হাজার ৪২১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।