রাসেলকে আরো ২০ লাখ টাকা দিতে গ্রিন লাইনকে হাইকোটের্র নির্দেশ

253

ঢাকা, ১ অক্টোবর, ২০২০ (বাসস) : গ্রিন লাইন পরিবহনের বাস চাপায় পা হারানো প্রাইভেটকার চালক রাসেল সরকারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে আরো ২০ লাখ টাকা দিতে হাইকোর্ট আজ রায় দিয়েছেন।
বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের সমন্বয়ে গঠিত একটি ভার্চুয়াল হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ এ রায় দেন।
তিন মাসের মধ্যে এক সঙ্গে ২০ লাখ টাকা দিতে গ্রিন লাইনকে নির্দেশ দিয়ে এ রায় দেয়া হয়। রাসেলকে ওই অর্থ দিয়ে পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে নির্দেশ বাস্তবায়ন বিষয়ে সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে প্রতিবেদন দিবে গ্রিন লাইন কর্তৃপক্ষ।
ক্ষতিপূরণ প্রশ্নে ইতিপূর্বে দেয়া রুল নিষ্পত্তি করে এ রায় দেন হাইকোর্ট।
২০১৮ সালের ২৮ এপ্রিল যাত্রাবাড়িতে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে গ্রিন লাইন পরিবহনের বাসের চাপায় প্রাইভেটকার চালক রাসেলের বাম পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ঘটনার পর গ্রিন লাইন পরিবহনের বাসটি এবং তার চালককে পুলিশ আটক করে। রাসেল জানায়, বাসটি তার গাড়িকে ধাক্কা দিলে প্রতিবাদ জানাতে বাস থামাতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বাস চালক তার ওপর দিয়েই বাস চালিয়ে দেন। এতে রাসেলের বাম পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
গাইবান্ধার পলাশবাড়ির বাসিন্দা রাসেল রাজধানীর আদাবর এলাকার সুনিবিড় হাউজিংয়ে বাস করতেন এবং স্থানীয় একটি ‘রেন্ট-এ-কার’ প্রতিষ্ঠানের প্রাইভেট কার চালাতেন। রাসেলের পা হারানোর ঘটনার পর গত বছরের ১৪ মে ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী উম্মে কুলসুম। রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ক্ষতিপূরণ এবং রুলসহ আদেশ দেন। গত বছরের ১২ মার্চ পা হারানো রাসেলকে ৫০ লাখ টাকা দিতে অন্তবর্তীকালীন আদেশ দেন এ হাইকোর্ট বেঞ্চ। এ টাকা দিতে গ্রিন লাইনকে মাসিক হারে কিস্তিও করে দেন আদালত। রাসেল জানায়, আদালতের আদেশের পর গত বছর দুই দফায় ১০ লাখ টাকা দিয়েছে গ্রিন লাইন। আর চিকিৎসাবাবদ ৩ লাখ ৪২ হাজার টাকা দিয়েছে।
পরে হাইকোর্টের অন্তবর্তী আদেশটির বিষয়ে গ্রিন লাইনের আবেদনের প্রেক্ষিতে ক্ষতিপূরণ বিষয়ে হাইকোর্র্টের জারি করা রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত রাসেলকে ৫০ লাখ টাকা দিতে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ স্থগিত করেন আপিল বিভাগ। তবে গ্রিনলাইনের পক্ষ থেকে রাসেল সরকারকে ক্ষতিপূরণ বাবদ যে টাকা দেয়া হয়েছে তা এই স্থগিতাদেশের মধ্যে পড়বে না বলেও আদেশে উল্লেখ করা হয়।
হাইকোর্টে গত ৫ মার্চ রুলের ওপর শুনানি শেষ হয়। সেদিন আদালত গত ১৫ এপ্রিল রায়ের জন্য তারিখ ধার্য রেখেছিলেন। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণ জনিত কারণে আদালতে সাধারণ ছুটি থাকায় ধার্য তারিখে রায়টি ঘোষিত হয়নি। আজ বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণা করলো হাইকোর্ট।
আদালতে রিটের পক্ষে আইনজীবী খন্দকার শামসুল হক রেজা শুনানি করেন। গ্রিন লাইনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। বিআরটিএর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. মোয়াজ্জেম হোসেন।
এদিকে গ্রিন লাইন কর্তৃপক্ষের আইনজীবী বলেছেন মানবিক কারনে তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন না।