শেখ হাসিনা এদেশের মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন ও মমতার আধার : ওবায়দুল কাদের

379

ঢাকা: ২৮ সেপ্টম্বর, ২০২০ (বাসস) : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এদেশের মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন।
আজ সোমবার বিকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের পূর্বে দেওয়া সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজ আমাদের জাতীয় জীবনের এক স্মরণীয় দিন। শৈশব থেকে আজ অবধি সুদীর্ঘ পথপরিক্রমা কখনোই কুসুমাস্তীর্ণ ছিলোনা। দেশের মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার এক অতন্ত্রপ্রহরি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।
জন্মবার্ষিকীতে এদেশের গণমানুষের পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা, শ্রদ্ধা এবং ভালবাসা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সময়ের পরিক্রমায় পিতা মুজিবের হাত ধরে যিনি দেশকে চিনেছেন, দেশের মাটিকে ভালবেসেছেন। ভালবেসে আঁকড়ে ধরেছেন ৫৫ হাজার বর্গমাইলের এ সবুজ-শ্যামল বাংলা। মানুষের ভাগ্য ফেরাতে জেনারেল জিয়াউর রহমানের সামরিক শাসনের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে মুজিব কন্যা ফিরে এসেছিলেন পিতা মুজিবের বাংলায়।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, স্বজন হারানোর এক সাগর কষ্ট বুকে নিয়ে যিনি বাংলার দু:খি মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর কঠিন কাজ শুরু করেছিলেন। আজ সে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে তাঁর অনন্য নেতৃত্ব এবং সাহসি পদক্ষেপে। যে-দেশ এনে দিয়েছিলেন তাঁর পিতা, সে-দেশ সাজিয়ে তুলছেন তিনি। বঙ্গবন্ধু এদেশের ভৌগলিক মুক্তির রোল মডেল আর তাঁর সুযোগ্য কন্যা এদেশের অর্থনৈতিক মুক্তির রোলমডেল।’
তিনি বলেন, উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধিতে আজ বাংলাদেশ বিশ্বের বিস্ময়। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, যতদিন থাকবে বঙ্গোপসাগরের কোলে পদ্মা-মেঘনা-যমুনা-কর্নফূলীর পলি-বিধৌত বদ্বীপ বাংলা, যতদিন আকাশ তার নীলিমা ছড়াবে, থাকবে পাখির কলকাকলি, ততদিন বঙ্গবন্ধু পরিবারের অবদান মানুষের মনের গহীন থেকে মাটির গভীরে থাকবে প্রোজ্জ্বল। ছড়াবে হিরন্ময় আভা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, পিতার পাঠশালায় রাজনীতির পাঠ নেয়া কন্যা ইডেন কলেজের নির্বাচিত ভিপি হওয়ার মধ্য দিয়ে প্রবেশ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সে ধারাবাহিক পথপরিক্রমায় আজ হয়ে উঠেছেন পিতার ছায়া, আদর্শিক উত্তরাধিকার। এদেশের কোটি মানুষের হুদয়ের স্পন্দন।’
তিনি বলেন, এ অর্জিত আস্থার গহীনে নেই কোন কোনো ম্যাজিক। সূত্র বলি আর উৎস বলি, এ অর্জনের পেছনের রহস্য তিনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা। তিনি ভালবাসেন দেশের প্রতি ইঞ্চি মাটি। তিনি অসহায়, দরিদ্র মানুষের ভালবাসার ঠিকানা। উদার আকাশের মতো বিস্তৃত যার হৃদয়। তাঁর শক্তি-তাঁর সততা, পরিশ্রম, মানবিকতা আর পিতার মত দেশের মানুষের প্রতি অপার ভালবাসা। তাইতো তিনি আজ দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিশ্বনেতাদের কাতারে, মর্যাদার আসনে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় তাঁর দক্ষতা এবং দূরদর্শিতার প্রশংসা করে যাচ্ছে বিশ্ব সম্প্রদায়। সীমান্ত খুলে দিয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে মানবিক নেতৃত্বের এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন তিনি। স্বীকৃতি পেয়েছেন ’মাদার অভ হিউম্যানিটি”র। তাঁর উদাহরণ তিনি নিজেই। এদেশে তাঁর জনপ্রিয়তা এখন সবার শীর্ষে। তিনি দলের চেয়েও অধিক জনপ্রিয়।
তিনি বলেন, মহান ¯্রষ্ঠা বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন পিতার অসম্পূর্ণ স্বপ্ন বাস্তবায়নে। তিনি দক্ষতার সাথে এগিয়ে চলেছেন রাজনীতির সর্পিল আর কন্টকময় পথ মাড়িয়ে। তিনি বেঁচে আছেন বলেই ’৭৫ এর খুনীদের বিচার হয়েছে, জাতি কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। যুদ্বাপরাধীদের বিচার হয়েছে। জাতির বুক থেকে নেমেছে স্বৈরশাসনের জগদ্দল পাথর। ঘাতকের বুলেট তাকে বার বার তাড়া করেছে। কমপক্ষে ২০বার হত্যার অপচেষ্টা করা হয়েছে। জেল, জুলুম, গৃহবন্দি জীবন কাটিয়েছেন তিনি। সময়ের কষ্টিপাথরে পরীক্ষিত এক নেতৃত্ব শেখ হাসিনা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনা নিছক কোন সরকার প্রধান নয়। তিনি একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক। যার ভাবনায় পরবর্তি নির্বাচন নয়, তাঁর ভাবনার আকাশ জুড়ে পরবর্তি জেনারেশন। তাই গ্রহণ করেছেন শত বছরের বদ্বীপ পরিকল্পনা। তিনি নিছক কোনো শাসক নন, নিজেকে দেশের সেবক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন।
তিনি বলেন, এদেশের রাজনীতিতে সততা আর স্বচ্ছতার অনুপম উদাহরণ বঙ্গবন্ধু পরিবার। সরকার প্রধান হয়েও অতিসাধারণ জীবন যাপন তাঁকে করে তুলেছে অসাধারণ একজন। বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা জীবনের সাথে লড়াই করেই এগিয়ে নিচ্ছেন জীবন। তাঁদের জীবন যাপনের মাঝেই আছে অন্যদের জন্য শিক্ষা। তিনি একজন গর্বিত মাতা। তাঁর সন্তানরা গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসানো প্রধানমন্ত্রীর সন্তান নন। পরিশ্রম, মেধা ও যোগ্যতায় তারাও দীপ্যমান তারকাসম। নির্মাণ করেছেন আন্তর্জাতিক মানের ক্যারিয়ার। বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ট কণ্যার সন্তানরাও নিজ নিজ আসনে প্রতিষ্ঠিত।
দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, ড. আবদুর রাজ্জাক, আবদুল মতিন খসরু, শাজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান. তথ্যমন্ত্যী ও আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারন সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক,মির্জা আজম ও এসএম কামাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ও উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।