শ্রীলংকা সফর নিয়ে এখনো আশাবাদী বিসিবি

417

ঢাকা, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ (বাসস) : কোয়ারেন্টাইন ইস্যুতে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের শ্রীলংকা সফর এখনো অন্ধাকারে। তবে এখনই আশাহত হচ্ছে না বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। শ্রীলংকা সফরের ব্যাপারে আশাবাদি বিসিবি। আগের নির্ধারিত সময়ে শ্রীলংকায় যাওয়া হচ্ছে না টাইগারদের। নির্ধারিত সময়ে যেতে না পারলেও, আগামী মাসের ৭ থেকে ১০ অক্টোবর দল শ্রীলংকা যাবে বলে জানালেন বিসিবির অপারেশন্স চেয়ারম্যান আকরাম খান।
শ্রীলংকা সফরের জন্য আগামীকাল দেশ ছাড়ার কথা ছিলো বাংলাদেশ দলের। কিন্তু কোয়ারেন্টাইন নিয়ে এখনো সমঝোতায় পৌঁছাতে না পারায়, কাল দেশ ছাড়া হচ্ছে না বলে নিশ্চিত করেছেন আকরাম।
তিনি আরও জানান, গত রোববার শুরু হওয়া ক্যাম্পে থাকা জাতীয় দলের খেলোযাড়দের তিন দিনের বিশ্রাম দেয়া হয়েছে।
ক্যাম্পে ডাক পাওয়া ২৭জন খেলোয়াড় জৈব-সুরক্ষা পরিবেশে অনুশীলন করেছে।
আকরাম বলেন, ‘আগামীকাল আমাদের শ্রীলংকার ফ্লাইট ছিল। কিন্তু আমরা যেতে পারছি না। আমাদের পরিকল্পনা নিয়ে আমরা প্রধান কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো, নির্বাচক ও প্রধান নির্বাহি নিজামুদ্দিন চৌধুরির সাথে আলোচনা করেছি। আমরা তিন দিনের বিরতি নিয়েছি। তিনদিন পর আবারো বাংলাদেশ দল আবার অনুশীলন শুরু করবে। আশা করছি, দুই-তিনদিনের মধ্যে শ্রীলংকা থেকে আমরা সংশোধিত গাইডলাইন পেয়ে যাবো।’
তিন দিনের বিরতিতে পরিবারের সাথে থাকতে পারবে না খেলোয়াড়রা। তবে ফেরার পর আবারো করোনা পরীক্ষা দিতে হবে তাদের। এরপর বিসিবির জৈব-সুরক্ষা পরিবেশে আবারো অনুশীলন শুরু করবেন তারা।
আগামী মাসে শ্রীলংকা সফর হবে বলে আশাবাদি বিসিবি। আকরাম বলেন, ‘যদি সবকিছু ইতিবাচকভাবে হয়, তাহলে হয়তো আমরা আগামী মাসের ৭-১০ তারিখের মধ্যে শ্রীলংকা যেতে পারি। যেহেতু তাদের একটি ঘরোয়া টি-টুয়েন্টি টুর্নামেন্ট ছিল যা এখনো নিশ্চিত না। তাই তাদের ও আমাদের হাতে সময় আছে।’
‘ওরা চেষ্ট করছে। ওরা চাচ্ছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ট্যুরটা করতে। আমার মনে হয় ওরা ইতিবাচক আছে। আজকে বা কালকে ওদের বন্ধ। আশা করছি সোমবার বা মঙ্গলবার চূড়ান্ত কিছু চলে আসবে। যদি ইতিবাচক হয় আমরা আগামি মাসের ৭-১০ তারিখের মধ্যে যেতে পারি। ওদের যে ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি হওয়ার কথা ছিল সেটা এখন নিশ্চিত না।অতএব ওদের কাছে সময় আছে। আমরা এটি নিয়ে চিন্তিত নই বলে উল্লেখ করেন আকরাম।
সফরে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে এবং এ সময় অনুশীলন করা যাবেনা বলে বিসিবিকে জানিয়েছিলো লংকা বোর্ড। কিন্তু এমন নিয়মে নারাজ বিসিবি। ৭ দিনের কোয়ারেন্টাইনের সাথে অনুশীলন করতে চায় বিসিবি। কিন্তু বিসিবির সিদ্বান্তে রাজি নয় শ্রীলংকাও। তাই বাংলাদেশের শ্রীলংকা সফর অনিশ্চিতায় পড়ে যায়।
গত বৃহস্পতিবার রাতে এসএলসির প্রধান নির্বাহি অ্যাশলে ডি সিলভা স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমকে জানান, ‘কোভিড টাস্কফোর্স থেকে আমরা যে বার্তাই পাই না কেন, সেটা আমরা বিসিবিকে পাঠাবো। টাস্কফোর্সের নির্দেশিকা যদি বিসিবি মানতে প্রস্তুত না থাকে, তাহলে এ বছর সিরিজটি আমাদের স্থগিত করতে হবে। তবে আগামী বছর বা পরের বছর সিরিজটি আয়োজনের চিন্তা করবো।‘
শ্রীলংকা করোনা পরিস্থিতি সামলাতে সরব আছে সেদেশের সেনাবাহিনী। তাই সেনাবাহিনীর দেয়া নিয়মের বাইরে যেতে চায় না এসএলসি। তবে সিরিজ নিয়ে এখনো আশাবাদি এসএলসির সচিব মোহন ডি সিলভা। তিনি বলেন, ‘আশা করছি, কোভিড টাস্কফোর্সের দেয়া স্বাস্থ্য নির্দেশিকায় রাজি হবে বিসিবি। আমরা বিসিবির সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। কঠোর স্বাস্থ্য নির্দেশিকা মানতে পারায় আমরা এ দেশে মহামারি নিয়ন্ত্রণ করতে সফল হয়েছি। আশা করছি, বিসিবির সাথে শিগগির সমোঝতা করতে পারবো।‘
আকরাম জানান, এসএলসির পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোন বিবৃতি পাননি। তিনি বলেন, ‘আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে কোন চিঠি ও মেইল এখনো পাইনি। আনুষ্ঠানিকভাবে কোন কিছু না আসলে, বাইরে কি হচ্ছে, সে সর্ম্পকে আমি কিছুই বলতে পারবো না।’
আকরাম জানান, এই সফর নিয়ে তারা মরিয়া নন। তার চেয়ে খেলোয়াড়দের সেরা পারফরমেন্সের জন্য সবকিছুই করবেন তারা।
তিনি বলেন, ‘আমরা এই সফর নিয়ে মরিয়া নই। তাদের হাতে সময় আছে, আমাদেরও সময় আছে। তারা বারবার অনুরোধ করছে, কিছু দিনের মধ্যেতারা আমাদের সবকিছু । বিষয়টি এমন নয় যেতারা চায় না, এমন কিছু নয়, কিন্তু আমরা চাপ দিচ্ছি।’
আকরাম আরও বলেন, ‘আমরা যদি যেতেই চাইতাম, তাহলে তাদের শর্ত মেনেই চলে যেতে পারতাম। কিন্তু আমাদের কাছে কোনো তাড়াহুড়ো নেই। আমাদের কাছে প্রথম অগ্রাধিকার হচ্ছে খেলোয়াড়দের স্বাচ্ছ্যন্দে রাখা যাতে তারা মানসিকভাবে ক্লান্ত না থাকে। এভাবে তাদের কাছ থেকে পারফরম্যান্সটা বের করে আনা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমরা গিয়েই যেন ভালো পারফরম্যান্স করতে পারি, তার জন্য যা যা করা দরকার তাই করবো।’