ফ্রেঞ্চ ওপেনে এক হাজার দর্শকের প্রবেশের অনুমতি মিলেছে

196

প্যারিস, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ (বাসস) : করোনাভাইরাস মহামারী ঠেকাতে রোলা গাঁরোতে প্রতিদিন সর্বোচ্চ এক হাজার দর্শকের অনুমতি দিয়েছে ফরাসি সরকার। চার মাসের বিরতির পর রোববার থেকে প্যারিসে শুরু হতে যাচ্ছে বছরের শেষ এই গ্র্যান্ড স্ল্যাম। আয়োজকরা আশা করেছিলেন করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে প্রতিদিন অন্তত হাজার পাঁচেক দর্শক স্টেডিয়ামে উপস্থিত হতে পারবে। ইতোমধ্যেই এই সংখ্যা ২০ হাজার এবং পরে সাড়ে এগার হাজার থেকে কমিয়ে আনা হয়েছিল।
ফরাসি প্রধানমন্ত্রী জিন কাস্টেক্স জানিয়েছেন দেশজুড়ে নতুন করে করোনার দ্বিতীয় ধাপ দেখা দেয়ায় যে সমস্ত এলাকাকে রেড জোনের আওতায় এনে স্বাস্থ্যবিধি কঠোর করা হয়েছে সেই একই বিধিনিষেধ রোলা গাঁরোর জন্যও প্রযোজ্য হবে। তিনি বলেন, ‘অন্যান্য জায়গার মতই রোলা গাঁরোতেও একই আইন আমরা অনুসরণ করবো। এ কারনেই ৫ হাজার থেকে কমিয়ে এই সংখ্যা এক হাজার করা হয়েছে।’
একটি সূত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে নিশ্চিত করেছে এই সংখ্যার মধ্যে টুর্নামেন্ট অফিসিয়াল, গণমাধ্যম, খেলোয়াড় ও স্টাফরা অন্তর্ভূক্ত নয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার ফ্রেঞ্চ ওপেন প্রধান গাই ফরগেট বলেছেন, তিনি ৫ হাজার দর্শকের উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিতের ব্যাপারে আশাবাদী। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই আয়োজক কমিটি দিনরাত পরিশ্রম করেছে। এ সম্পর্কে ফরগেট বলেন, ‘১২ হেক্টর এরিয়ার জন্য ৫ হাজার দর্শকের উপস্থিতি খুবই সীমিত। আমরা ১৫টি ফুটবল মাঠের সমান একটি মাঠে টুর্নামেন্টটি আয়োজন করে থাকি। সবাই এখানে মাস্ক পড়ে উপস্থিত হবে, এদের মধ্যে বল বয়, বল গার্ল এমনকি চেয়ার আম্পয়াররাও রয়েছেন।’
গত বছর যেখানে ৫ লাখ ২০ হাজার দর্শক রোলা গাঁরোতে উপস্থিত হয়েছিলেন সেখানে এক হাজার মানুষ ৩ শতাংশেরও কম। এ কারনে আর্থিকভাবেও দারুন ক্ষতিগ্রস্থ হবেন আয়োজকরা। ২০১৯ সালে ফ্রেঞ্চ টেনিস ফেডারেশনের প্রায় ৮০ শতাংশ আয় হয়েছিল এই টুর্নামেন্ট থেকে। সর্বমোট ৩২৫ মিলিয়নের মধ্যে শুধুমাত্র ফ্রেঞ্চ ওপেন থেকে তাদের আয় হয়েছিল ২৫৫.৪ মিলিয়ন ইউরো। টুর্নামেন্টে রাজস্বের ২০ শতাংশই এসেছিলে টিকিট বিক্রির অর্থ থেকে।
নিউ ইয়র্কে সদ্য সমাপ্ত ইউএস ওপেনে কোন দর্শকের উপস্থিতি ছিল না। দ্বিতীয় বিশ^যুদ্ধের পর প্রথমবারের মত বাতিল হয়ে গেছে উইম্বলডনের এবারের আসর।
প্রথম রাউন্ডের ম্যাচেই স্ট্যান ওয়ারিঙ্কার মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন টুর্নামেন্টের ওয়াইল্ড কার্ড পাওয়া বৃটিশ তারকা এন্ডি মারে। ২০১৭ সালে মারে ও ওয়ারিঙ্কা সেমিফাইনালে পাঁচ সেটের উত্তেজনাকর ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিলেন। ম্যাচটিতে অবশ্য ৩-২ সেটে জিতেছিলেন ২০১৫ সালের বিজয়ী সুইস অভিজ্ঞ তারকা ওয়ারিঙ্কা। বিশে^র সাবেক এক নম্বর তারকা ৩৩ বছর বয়সী মারে দীর্ঘদিনের কোমরের ইনজুরির কারনে কোর্টের বাইরে ছিলেন। ইনজুরির মাত্রা এতটাই গুরুতর ছিল যে একসময় মনে হয়েছিল তার ক্যারিয়ার হয়ত শেষ হয়ে যাচ্ছে। মারে ও ওয়ারিঙ্কা উভয়ই তিনটি করে গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপা জিতেছেন।
এদিকে বিশে^র এক নম্বর খেলোয়াড় নোভাক জকোভিচ ২০১৬ সালের পর ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় রোলা গ্যাঁরো শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে কোর্টে নামবেন। সব মিলিয়ে ক্যারিয়ারের ১৮তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের মিশনে তার প্রথম প্রতিপক্ষ ৮০তম র‌্যাঙ্কধারী সুইডিশ মাইকেল ইয়েমার।
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রাফায়েল নাদাল ক্যারিয়ারের ১৩তম ফ্রেঞ্চ ওপেন শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নামবেন। প্রথম রাউন্ডে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় বাছাই এই স্প্যানিশের প্রতিপক্ষ ৮৩তম র‌্যাঙ্কধারী বেলারুশের এগর জেরাসিমভ। সব কিছু ঠিক থাকলেও সেমিফাইনালে তার মুখোমুখি হতে পারে তৃতীয় বাছাই ও ইউএস ওপেন বিজয়ী ডোমিনিক থিয়েম। প্যারিসে শেষ দুটি ফাইনালে এই অস্ট্রিয়ানকে পরাজিত করেছিলেন ৩৪ বছর বয়সী নাদাল। থিয়েম প্রথর রাউন্ডে ২০১৪ ইউএস ওপেন বিজয়ী ও বিশে^র সাবেক তিন নম্বর খেলোয়াড় মারিন সিলিচের মুখোমুখি হবেন। রজার ফেদেরার যেহেতু খেলছেন না সে কারনে সেমিফাইনালে জকোভিচের সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ রাশিয়ান ডানিল মেডভেডেভ। এর আগের তিনটি মোকাবেলায় প্যারিসে একবারও জিততে পারেননি মেডভেডেভ।
স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারনে এ বছর নারীদের বিভাগে অংশ নিচ্ছেন না বিশে^র এক নম্বর খেলোয়াড় ও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন এ্যাশলে বার্টি। ইনজুরির কারনে ইউএস ওপেন বিজয়ী নাওমি ওসাকাও খেলছেন না। ২০১৮ চ্যাম্পিয়ন সিমোনা হালেপ শীর্ষ বাছাই হিসেবে কোর্টে নামবেন। প্রথম রাউন্ডে এই রুমানিয়ানের প্রতিপক্ষ স্পেনের ৭০তম র‌্যাঙ্কধারী সোরিবেস টোরমো।
তিনবারের বিজয়ী সেরেনা উইলিয়ামসের শেষ ১৬’তে সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ পুরোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ভিক্টোরিয়া আজারেঙ্কা।