বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি) : দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য জোরদারে অর্থনৈতিক কূটনীতির প্রতি প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বারোপ

206

বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি)
প্রধানমন্ত্রী-অর্থনৈতিক কূটনীতি
দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য জোরদারে অর্থনৈতিক কূটনীতির প্রতি প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বারোপ

জাতির পিতার অসম্পন্ন কাজ সম্পন্ন করাই তাঁর একমাত্র লক্ষ্য উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের মধ্যদিয়ে জাতির পিতা এ দেশের মানুষকে যে মর্যাদার আসনে বসিয়েছিলেন, তাঁকে হত্যা করার মধ্যদিয়ে তা ভূলুণ্ঠিত হয়।
’৭৫ পরবর্তী প্রবাস জীবনে থাকতে বাধ্য হওয়া এবং আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর জোর করে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের কথা স্মরণ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘তখন দেশে কোনো গণতন্ত্র ছিল না, মানুষের অধিকার ছিল না, মুখে গণতন্ত্র ছিল। এদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে। সেই ভাগ্য পরিবর্তন করাই আমার লক্ষ্য ছিল। সেই লক্ষ্যেই আজও আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
কোভিড-১৯ মহামারী থেকে বিশ্বের মানুষের মুক্তি কামনা করে শেখ হাসিনা ভাষণে এজন্য বিশ^বাসীকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার ও আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘আবারও অর্থনীতির চাকা সচল হোক, সকল মানুষ সুন্দরভাবে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারুক, সেটাই আমরা চাই। সে জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। সারাবিশ্বকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী এ সময় করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সম্ভাব্য খাদ্য সংকটের বিষয়ে তাঁর সরকারের আগাম সতর্কতার বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বে হয়ত দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশে যেন কোনোমতে সেই দুর্ভিক্ষের ছোঁয়া না লাগে। তাই, আমরা যতটুকু পারি খাদ্য উৎপাদন করা, খাদ্য বিতরণ করা, দরিদ্র মানুষকে বিনা পয়সায় খাদ্য দেওয়া এবং খাদ্য নিশ্চয়তা দেবার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
দেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড ৩১ দফা নির্দেশনার মাধ্যমে সীমিত আকারে অব্যাহত রাখার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোভিডের কারণে আমাদের জিডিপির যেটা টার্গেট ছিল সেটা আমাদের পক্ষে অর্জন সম্ভব হয়নি। এবার ৫ দশমিক ২৪ শতাংশের মত জিডিপি অর্জন করতে পেরেছি। কিন্তু আমরা আশা করি আগামীতে আমাদের প্রবৃদ্ধি আমরা আরো বেশি অর্জন করতে সক্ষম হব এবং সেদিকে লক্ষ্য রেখেই কাজ করে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘প্রায় ৪০ শতাংশ থেকে দারিদ্রের হার কমিয়ে ২০ দশমিক ৫ শতাংশে এনেছি। আমরা এটা আরো কমাতে চাই। বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মানুষকে একটা সুন্দর জীবন আমরা উপহার দিতে চাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, প্রতিটি মানুষকে, যারা গৃহহীন, তাদের গৃহ নির্মাণ করে দেব। যারা ভূমিহীন, তাদের ভূমির ব্যবস্থা করে দেব। মুজিববর্ষে কেউ গৃহহীন থাকবে না।
তিনি বলেন, আমরা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পেরেছি। পুষ্টির নিশ্চয়তার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। করোনা ভাইরাস মোকাবেলা করার জন্য আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছি। পাশাপাশি, বিশেষ প্রণোদনা দিয়েছি। সব মানুষ যাতে এই প্রণোদনার সহযোগিতাটা পায়, সে ব্যবস্থাও আমরা করে দিয়েছি।
শেখ হাসিনা বিশ^ রাজনীতির প্রেক্ষাপটে দেশের পররাষ্ট্রনীতির প্রসঙ্গ টেনে দুর্যোগ মোকাবেলায় যৌথ উদ্যোগের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন,‘সকলের সহযোগিতা যেমন আমাদের একান্ত কাম্য তেমনি কাউকে কোন ধরণের সহযোগিতা করার প্রয়োজন হলে আমরা সেটা করতেও প্রস্তুত। কারণ, বাংলাদেশ সব সময় চায় সমগ্র বিশে^ শান্তি বজায় থাকুক।’
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিয়ে বিশে^র সংঘাতপূর্ণ এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী এবং পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা প্রত্যেকেই বিশেষ ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন বলে উল্লেখ করে তিনি এ সময় বিশ^ শান্তি প্রতিষ্ঠায় আত্মাহুতি দানকারি বাংলাদেশী সৈনিকদের রুহের মাগফেরাত ও কামনা করেন।
এ সময় প্রতিবছর তিনি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশগ্রহণের জন্য নিউইয়র্কে থাকলেও এ বছর করোনার জন্য যেতে না পারায় এবং বিশ^ নেতৃবৃন্দের মিলন মেলায় অংশগ্রহণ করতে না পারার আক্ষেপ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘আমি ১৬ বার জাতিসংঘে গিয়ে ভাষণ দিয়েছি কিন্তু ১৭ তম ভাষণ দেওয়ার সময় যেতে পারছি না, যেটা খুব দুঃখের। কারণ, সেখানে বিশে^র সব দেশের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং মতবিনিময়ের সুযোগ হয়। একে অপরের অভিজ্ঞতা জানা এবং বিনিময়ের যে সুযোগ সেটা এবার করোনাভাইরাসের কারণে হলোনা।’
বাসস/এএসজি-এফএন/১৮৩৮/আরজি