দেশে ২৪ ঘন্টায় কোভিড-১৯ এ মৃত্যু ২৮ জন, সুস্থ ২,১৩৯

275

ঢাকা, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০ (বাসস) : দেশে গত ২৪ ঘন্টায় কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে ২৮ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। আর সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ১৩৯ জন।
গতকালের চেয়ে আজ ৯ জন কম মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ৩৭ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ হাজার ৭২ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। গতকালও মৃত্যুর হার ছিল ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ১৩৯ জন। গতকালের চেয়ে ২৪ জন কম সুস্থ হয়েছেন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ৬৫ হাজার ৯২ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৭৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ০৫ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১২ হাজার ৯০০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৬৬৬ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ১২৪ জন কম শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল ১৪ হাজার ১৫০ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৬৬৬ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১১ দশমিক ৯৪ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ১১ দশমিক ৭৭ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ১৭ শতাংশ বেশি।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ১৮ লাখ ৭৫ হাজার ৫৩৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ লাখ ৫৫ হাজার ৩৮৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৮ দশমিক ৯১ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১২ হাজার ৩৮২ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৩ হাজার ৯৭৭ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ১ হাজার ৫৯৫টি নমুনা কম সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ১০৩টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১২ হাজার ৯০০ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৪ হাজার ১৫০ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ১ হাজার ২৫০টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২০৮৬ দশমিক ৭৩ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ১৫৫৬ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ২৯ দশমিক ৭৮ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ২৮ জনের মধ্যে পুরুষ ২১ জন, আর নারী ৭ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৩ হাজার ৯৩৫ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ১৩৭ জন; শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৭ দশমিক ৫৮ শতাংশ, আর নারী ২২ দশমিক ৪২ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ২৮ জনের সবাই হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন ।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৬ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ১৭ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৪ জন; যা দশমিক ৪৭ শতংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৪২ জন; যা দশমিক ৮৩ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১১৮ জন; যা ২ দশমিক ৩৩ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৯৪ জন; যা ৫ দশমিক ৮০ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৬৫৫ জন; যা ১২ দশমিক ৮৯ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৩৭৭ জন; যা ২৭ দশমিক ১৫ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ২ হাজার ৫৬৩ জন; যা ৫০ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ১৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৬ জন, খুলনা বিভাগে ২ জন, রাজশাহী, সিলেট ও রংপুর বিভাগে ১ জন করে মারা গেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ২ হাজার ৫০৭ জন; যা ৪৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ৫০ জন; যা ২০ দশমিক ৭০ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৩৩৫ জন; যা ৬ দশমিক ৬০ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪২৭ জন; যা ৮ দশমিক ৪২ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ১৮৬ জন; যা ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২২৪ জন; যা ৪ দশমিক ৪২ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ২৩৬ জন; যা ৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১০৭ জন; যা ২ দশমিক ১১ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৫ হাজার ৪৫০টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৭১৭ জন ও শয্যা খালি আছে ৩ হাজার ৭৩৩টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ২৯২টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ১৮৬ জন ও শয্যা খালি আছে ১০৬টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৮২টি, ভর্তিকৃত রোগী ১৫৪ জন ও শয্যা খালি আছে ৬২৮টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৭ জন ও শয্যা খালি আছে ২২টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৩৮৬টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৭৯৭ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৩৮৯টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২০১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৮১ জন ও শয্যা খালি আছে ১২০টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১৩ হাজার ৬১৮টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৬৬৮ জন এবং শয্যা খালি আছে ১০ হাজার ৯৫০টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৩২টি, রোগী ভর্তি আছে ২৮৪ জন এবং খালি আছে ২৪৮টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১২ হাজার ৮৬৭টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৫১৯টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৩৪১টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ২ হাজার ১৩৯ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ১২৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩৩১ জন, রংপুর বিভাগে ৩৮ জন, খুলনা বিভাগে ২৭০ জন, বরিশাল বিভাগে ৯২ জন, রাজশাহী বিভাগে ২১৪ জন, সিলেট বিভাগে ৬১ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১০ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ২৪৩ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৪৩৮ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৮০ হাজার ৫৯ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৬৪ হাজার ৭৩ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৫ হাজার ৯৮৬ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৯১২ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার ২৮৩ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ২৮ হাজার ২৯৭ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৪ লাখ ৮২ হাজার ১৩০ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪৬ হাজার ১৬৭ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৮ হাজার ১০৮টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪৫ হাজার ৪৯২টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ১৮৫টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৫৩ হাজার ৭৮৫টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ৯ লাখ ৬৭ হাজার ৩০৮টি।
করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৪৯৮ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া ২৪ ঘন্টায় কোভিড বিষয়ক টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন ৪ হাজার ৫৯৬ জন। এ পর্যন্ত শুধু কোভিড বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেছেন ৩ লাখ ৮৬ হাজার ২৭৯ জন। প্রতিদিন ৩৫ জন চিকিৎসক ও ১০ জন স্বাস্থ্য তথ্যকর্মকর্তা দুই শিফটে মোট ৯০ জন টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৩ হাজার ৫৩০ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৯ লাখ ৬২ হাজার ৭৫৭ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬৩ লাখ ৪১ হাজার ৬৩৫ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৫ হাজার ৫১৫ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩ কোটি ১৪ লাখ ২৫ হাজার ২৯ জন এবং ৯ লাখ ৬৭ হাজার ১৬৪ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।