বাসস দেশ-২০ ২১ : একুশ আগস্ট : নিজের পক্ষে যুক্তিতর্ক পেশ করলেন সালাম পিন্টু

152

বাসস দেশ-২০
২১ আগস্ট-যুক্তিতর্ক
একুশ আগস্ট : নিজের পক্ষে যুক্তিতর্ক পেশ করলেন সালাম পিন্টু
ঢাকা, ১ আগষ্ট, ২০১৮ (বাসস) : রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ভয়াবহ বর্বরোচিত ও নৃশংস গ্রেনেড হামলা মামলার আসামী আবদুস সালাম পিন্টু নিজের পক্ষে আজ যুক্তিতর্ক পেশ করেছেন।
মামলায় এ পর্যন্ত ৪৩ আসামীর পক্ষে যুক্তিতর্ক পেশ শেষ হয়েছে। পরবর্তী ধার্য তারিখে আসামী লৎফুজ্জামান বাবরের পক্ষে যুক্তিতর্ক পেশ শুরু হবে। এ আসামীর যুক্তিতর্ক পেশ শেষ হলে আসামীপক্ষে যুক্তিতর্ক পেশ সমাপ্ত হবে।
আজ এ মামলার যুক্তিতর্ক পেশ করার ১০৪ তম দিনে আসামী বিএনপি নেতা সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিণ্টুর পক্ষে তিনি নিজে নিজের পক্ষে যুক্তিতর্ক পেশ শেষ করেন । গতকাল তিনি তার পক্ষে যুক্তিতর্ক পেশ শুরু করেন। এর আগে তার পক্ষে আইনজীবী এস.এম শাহজাহান ও রফিকুল ইসলাম যুক্তিতর্ক পেশ করেন। আজ পিন্টুর পক্ষে সপ্তম দিনের মতো যুক্তিতর্ক পেশ করা হয়। পরবর্তী ধার্য তারিখে তার পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন আইনি পয়েণ্টে যুক্তি পেশ করবেন। এর মধ্যদিয়ে পিন্টুর পক্ষে যুক্তিতর্ক শেষ হবে।
রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালতে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা দুই মামলার একই সঙ্গে বিচার চলছে। মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য রয়েছে আগামীকাল ২, ৬, ৭ ও ৮ আগস্ট।
পিন্টু ২১ আগস্ট ঘটনায় কোনরূপ জড়িত নয় বলে দাবি করে তার পক্ষে আজ যুক্তি পেশ করেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে প্রধান কৌসুঁলি সৈয়দ রেজাউর রহামন, বিশেষ পিপি মো.আবু আব্দুল্লাহ্ ভ্ুঁইয়া, আকরাম উদ্দিন শ্যামল. এডভোকেট ফারহানা রেজা, আমিনুর রহমান প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
পৃথক মামলায় মোট আসামীর সংখ্যা ৫২ জন। এর মধ্যে ৩ জন আসামীর অন্য মামলায় মৃত্যুদন্ড কার্যকর হওয়ায় তাদেরকে মামলা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। এখন ৪৯ আসামীর বিচার চলছে। ১৮ জন এখনো পলাতক। আসামীদের মধ্যে ৪৫ জনের যুক্তিতর্ক পেশ হবে। ইতোমধ্যে ৪৩ জনের যুক্তিতর্ক শেষ হয়েছে।পলাতক চারজন আসামীর বিষয়ে “রাষ্ট্র নিযুক্ত” আইনজীবী নিয়োগ দেয়া হয়নি। তারা হচ্ছেন-আসামী সাবেক সেনা কর্মকর্তা এটিএম আমিন ও সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দার, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ওবায়দুর রহমান খান ও খান সাঈদ হাসান। এ ৪ আসামীর আইন অনুযায়ি সর্বোচ্চ সাজা তথা মৃত্যুদন্ড হতে পারে এমন কোন ধারায় অভিযোগ গঠন হয়নি। তাই তারা ‘স্ট্যাট ডিফেন্স বা রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী’ সুবিধা পাচ্ছেন না বলে জানায় রাষ্ট্রপক্ষ।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ২২৫ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেয়। আসামীপক্ষে সাক্ষীদের জেরা করেছে। গত বছরের ৩০ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আব্দুল কাহার আকন্দের জেরা শেষের মধ্য দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়।
২১ আগস্টের ওই নৃশংস হামলায় পৃথক দুটি মামলায় মোট আসামী ৫২ জন। মামলার আসামী বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপি নেতা সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ২৩ জন কারাগারে রয়েছে। অন্য দিকে তারেক রহমান, বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী, শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, মেজর জেনারেল (এলপিআর) এটিএম আমিন, লে. কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দারসহ ১৮ জন এখনো পলাতক। জামিনে থাকা আসামিরা হলেন- বেগম খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লে. কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, সাবেক আইজিপি মো. আশরাফুল হুদা, শহুদুল হক ও খোদা বক্স চৌধুরী এবং মামলাটির তিন তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি’র সাবেক বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, সিআইডি’র সিনিয়র এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান, এএসপি আব্দুর রশীদ, সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার আরিফুল ইসলাম।
বিএনপি-জামায়াতের জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের এক সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। ওই নৃশংস হামলায় ২৪ জন নিহত ও নেতাকর্মী-আইনজীবী-সাংবাদিকসহ পাঁচ শতাধিক লোক আহত হন। নিহতদের মধ্যে ছিলেন তৎকালীন মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের পতœী আইভি রহমান।
তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের প্রথম সারির অন্যান্য নেতা এই গ্রেনেড হামলা থেকে বেঁচে যান। এতে অল্পের জন্য শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও গ্রেনেডের প্রচন্ড শব্দে তার শ্রবণশক্তিতে আঘাতপ্রাপ্ত হয়।
বাসস/এএসজি/ডিএ/১৭৫০/এএএ