বাংলাদেশে চীনের কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সহায়তা অব্যাহত থাকবে : চীনা দূত

234

ঢাকা, ১ আগস্ট, ২০১৮ (বাসস) : বাংলাদেশে জ্ঞানভিত্তিক শিল্পায়নের ধারা জোরদারে চীনের কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সহায়তা অব্যাহত থাকবে। শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর সঙ্গে চীনা রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জু আজ শিল্প মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক বৈঠককালে এ কথা জানান।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের রাসায়নিক সার, স্টিল, কেমিক্যাল, আইসিটি, চিনি, কাগজসহ মানুফ্যাকচারিং শিল্পখাতে চীনের উদ্যোক্তারা বিনিয়োগে আগ্রহী। ইতোমধ্যে চীনের একটি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের স্টীল সেক্টরে তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ এনামুল হক, বিসিকের চেয়ারম্যান মুশতাক হাসান মুহঃ ইফতিখার, বিসিআইসির চেয়ারম্যান শাহ মোঃ আমিনুল হকসহ শিল্প মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে বাংলাদেশ ও চীনের দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়েও আলোচনা হয়। এ সময় বাংলাদেশের শিল্পখাতে চীনা বিনিয়োগ বৃদ্ধি, প্রযুক্তি স্থানান্তর, চীনের অত্যাধুনিক কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তরসহ অন্যান্য বিষয় আলোচনায় স্থান পায়।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, ১৯৫২ ও ১৯৫৭ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চীন সফরের মাধ্যমে দু’দেশের মধ্যে অর্থবহ দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন সম্পর্কের সূচনা হয়। এর ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফর এবং চীনা রাষ্ট্রপতির শি জিংপিং’র বাংলাদেশ সফরের মাধ্যমে এ সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র ও দেশের বিভিন্ন জায়গায় সাতটি মৈত্রী সেতু নির্মাণ দু’দেশের মধ্যে বিরাজমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আমির হোসেন আমু বলেন, বাংলাদেশের শিল্পখাতের উন্নয়নে চীনা উদ্যোক্তারা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এ বিবেচনায় বর্তমান সরকার চীনা বিনিয়োগকারীদের জন্য চট্টগ্রামে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছে। এতে চীনের উদ্যোক্তারা পরিবেশবান্ধব ও উচ্চ প্রযুক্তির শিল্পস্থাপনে এগিয়ে আসতে পারে। তিনি চীনা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বাস্তবায়িত শাহ্জালাল ফার্টিলাইজার প্রকল্পের খুচরা যন্ত্রাংশ সরবরাহ এবং সাভার চামড়া শিল্পনগরীর কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগারের (সিইটিপি) নির্মাণ কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে চীনা রাষ্ট্রদূতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশকে চীন সব সময় ভাল প্রতিবেশী ও বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। ঐতিহাসিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কারণে চীন বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রতি সব সময় অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে। শিল্পখাতে উন্নয়নের চলমান ধারা অব্যাহত রাখতে তিনি যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়ন এবং দু’দেশের উদ্যোক্তাদের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি, সংলাপ ও নীতি সহায়তা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
চীনের রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার গৃহিত উন্নয়ন কর্মকান্ডের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, এরফলে বাংলাদেশ বিদেশি বিনিয়োগের আকর্ষণীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। দু’দেশের মধ্যে বর্তমানে উন্নয়ন ও শিল্পখাতের সহযোগিতার নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের শিল্পখাতের আধুনিকায়ন, জনবলের কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধি এবং এসএমইখাতের মানোন্নয়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেন।