বাসস দেশ-৩৯ : মহালয়া উদযাপন, দেবী পক্ষের শুরু

212

বাসস দেশ-৩৯
মহালয়া- উদযাপন
মহালয়া উদযাপন, দেবী পক্ষের শুরু
ঢাকা, ১৭ সেপ্টে¤বর, ২০২০ (বাসস) : বিভিন্ন আচার ও আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে ধর্মীয় মর্যাদায় হিন্দু সম্প্রদায়ের শারদীয় দুর্গোৎসবের পুণ্যলগ্ন, শুভ মহালয়া উদযাপন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ভোর থেকে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরসহ সারাদেশে শুরু হয় মহালয়ার আচার। ঘট স্থাপন ও পূজার মধ্য দিয়ে চলে ‘মহাশক্তি, মহামায়া, দুর্গতিনাশিনী’ দেবী দুর্গাকে মর্ত্যে ‘নেমে’ আসার আবাহন। ভোর হতেই সকল পূজা মন্ডপে পুরোহিতের ভক্তিকণ্ঠে ‘যা দেবী সর্বভূতেষু মাতৃরূপেন সংস্থিতা-নম¯ৈতস্য নমস্তৈস্য নমোঃ নমোঃ’ মন্ত্র উচ্চারণ শোনা যায়।
শ্রীশ্রী চন্ডীপাঠের মধ্যদিয়ে দেবী দুর্গার আবাহনই মহালয়া হিসেবে পরিচিত। আর এই ‘চন্ডী’তেই আছে দেবী দুর্গার সৃষ্টির বর্ণনা এবং দেবীর প্রশস্তি। শারদীয় দুর্গাপূজার একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হলো এই মহালয়া। তবে এই বছরের পুজো অন্যান্য বছরের মত নয়। করোনা আতঙ্কের আবহেই এবার দেবীপক্ষের সূচনা হলো। আর মহামারির দুর্যোগ মাথায় নিয়েই এবার হলো মাতৃ বন্দনা। করোনাভাইরাসের প্রকোপ থেকে মুক্তি চেয়ে প্রার্থনা জানানো হয় ‘মাতৃরূপী’ দশভূজা দেবীর কাছে।
পুরাণমতে, এদিন দেবী দুর্গার আবির্ভাব ঘটে। এ দিন থেকেই দুর্গাপূজার দিন গণনা শুরু হয়। মহালয়া মানেই আর ৬ দিনের প্রতীক্ষা মায়ের পূজার। আর এই দিনেই দেবীর চক্ষুদান করা হয় । মহালয়া থেকে দুর্গাপূজার আগমনধ্বনি শুনতে পাওয়া গেলেও এবার ৬ দিন পরে পুজা অনুষ্ঠিত হবেনা। এবার দূর্গাপুজা শুরু হবে প্রায় ২১ অক্টোবর বুধবার থেকে।
বৃহস্পতিবার ভোরে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে মহালয়ার অনুষ্ঠানের সূচনা করেন বাংলাদেশে ভারতের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত রীভা গাঙ্গুলী দাস। এরপর ঢাকের বোলে চন্ডি পাঠে শুরু হয় মহালয়ার পর্ব। সকালে মহালয়ার মূল আচার-অনুষ্ঠান হিসেবে মঙ্গলঘট স্থাপন করে তাতে ফুল, তুলসী ও বেলপাতা দিয়ে পূজা করা হয়। বেলা ১১টা পর্যন্ত বিশেষ পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় দেশের বিশিষ্ট শিল্পীরা আবাহন ও ভক্তিমূলক সঙ্গীত পরিবেশন করেন।
রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠ মন্দিরেও ছিল অনুরূপ আনুষ্ঠানিকতা। সেখানে মিশনের অধ্যক্ষ চন্ডীপাঠ ও চন্ডীপূজা ছাড়াও আবাহন সঙ্গীত পরিবেশন করেন। গুলশান-বনানী সার্বজনীন পূজা উদযাপন পরিষদ বনানী পূজামন্ডপে ভোরে চন্ডীপাঠ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। স্বামীবাগের লোকনাথ মন্দির, রমনা কালীমন্দির ও মা আনন্দময়ী আশ্রম, সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির, মিরপুর কেন্দ্রীয় মন্দির, সিদ্ধেশ্বরী পূজামন্ডপ এবং খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণে সনাতন সমাজকল্যাণ সংঘের (সসকস) পূজামন্ডপসহ রাজধানীর অন্য মন্দির ও মন্ডপেও মহালয়ার অনুষ্ঠান ছিল।
মহালয়ার আর একটি দিক হচ্ছে এই মহালয়া তিথিতে যারা পিতৃ-মাতৃহীন তারা তাদের পূর্বপূরুষের স্মরণ করে তাদের আতœার শান্তি কামনা করে অঞ্জলি প্রদান করেন । সনাতন ধর্ম অনুসারে এই দিনে প্রয়াত আতœাদের মর্ত্যে পাঠিয়ে দেয়া হয়। প্রয়াত আতœার যে সমাবেশ হয় তাকে মহালয়া বলা হয় । মহালয় থেকে মহালয়া । পিতৃপক্ষেরও শেষদিন ছিল আজ। আগামী কাল থেকে শুরু দেবী পক্ষের।
বাসস/কেসি/২০১৫/-এএএ