দেশে করোনায় সুস্থতা আড়াই লাখ ছাড়িয়েছে

220

ঢাকা, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০ (বাসস) : দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ১৯৪তম দিনে এই ভাইরাস থেকে সুস্থ মানুষের সংখ্যা আড়াই লাখ ছাড়িয়েছে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ৫০ হাজার ৪১২ জন। এরমধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৪৪৩ জন। আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭২ দশমিক ৭৪ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৭২ দশমিক ৩৬ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ৩৮ শতাংশ বেশি।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৩ হাজার ৬৭৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৫৯৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ২২ জন কম শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল ১৩ হাজার ৩৬০ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৬১৫ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১১ দশমিক ৬৫ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ১২ দশমিক ০৯ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ৪৪ শতাংশ কম।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ১৭ লাখ ৮৩ হাজার ৭৭৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ লাখ ৪৪ হাজার ২৬৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৩০ শতাংশ। গতকাল এই হার ছিল ১৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩৬ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকালের চেয়ে আজ ১৫ জন বেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল মৃত্যুবরণ করেছেন ২১ জন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ৮৫৯ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪১ শতাংশ। গতকালও মৃত্যুর হার ছিল ১ দশমিক ৪১ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৩ হাজার ৭৬৯ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৩ হাজার ২৫৮ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৫১১টি নমুনা বেশি সংগ্রহ হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ৯৪টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৩ হাজার ৬৭৩ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৩ হাজার ২৫৮ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৩১৩টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২০২১ দশমিক ৪৪ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ১৪৭০ দশমিক ৩৬ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ২৮ দশমিক ৫৩ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ৩৬ জনের মধ্যে পুরুষ ২৮ জন, আর নারী ৮ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৩ হাজার ৭৮৮ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৭১ জন; শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৭ দশমিক ৯৬ শতাংশ, আর নারী ২২ দশমিক ০৪ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ৩৪ জন হাসপাতালে ও ২ জন বাসায় মৃত্যুবরণ করেছেন ।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৫ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৭ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ২১ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২১ জন; যা দশমিক ৪৩ শতংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৪১ জন; যা দশমিক ৮৪ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১১২ জন; যা ২ দশমিক ৩১ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৮৭ জন; যা ৫ দশমিক ৯১ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৬৩০ জন; যা ১২ দশমিক ৯৭ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৩২০ জন; যা ২৭ দশমিক ১৭ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ২ হাজার ৪৪৮ জন; যা ৫০ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ২০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪ জন, বরিশাল বিভাগে ৩ জন, খুলনা বিভাগে ২ জন রংপুর ও সিলেট বিভাগে ১ জন করে মারা গেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ২ হাজার ৩৬৯ জন; যা ৪৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ১৮ জন; যা ২০ দশমিক ৯৫ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৩২৮ জন; যা ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪১২ জন; যা ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ১৮৩ জন; যা ৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২১৮ জন; যা ৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ২২৯ জন; যা ৪ দশমিক ৭১ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১০২ জন; যা ২ দশমিক ১০ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৬ হাজার ১০৭টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৮৮৭ জন ও শয্যা খালি আছে ৪ হাজার ২২০টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩০৭টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ১৯১ জন ও শয্যা খালি আছে ১১৬টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৮২টি, ভর্তিকৃত রোগী ১৪৫ জন ও শয্যা খালি আছে ৬৩৭টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৯ জন ও শয্যা খালি আছে ২০টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৩৮৬টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ১ হাজার ২৩ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৩৬৩টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২০১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৯১ জন ও শয্যা খালি আছে ১১০টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১৪ হাজার ২৭৫টি, রোগী ভর্তি আছে ৩ হাজার ৫৫ জন এবং শয্যা খালি আছে ১১ হাজার ২২০টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৪৭টি, রোগী ভর্তি আছে ৩০১ জন এবং খালি আছে ২৪৬টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ৫৫টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৫২৮টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৩৪১টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ২ হাজার ৪৪৩ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৬৩ জন, রংপুর বিভাগে ৫২ জন, খুলনা বিভাগে ৩০৮ জন, বরিশাল বিভাগে ৪৯ জন, রাজশাহী বিভাগে ৬৪০ জন, সিলেট বিভাগে ১২৪ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থতা নেই।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৩৩১ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৪৬৬ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৭৮ হাজার ১৪০ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৬০ হাজার ৯৫৫ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৭ হাজার ১৮৫ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ১ হাজার ২২৩ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার ৭৭৮ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ২০ হাজার ৪৩৯ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৪ লাখ ৭২ হাজার ৭৩৯ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪৭ হাজার ৬৯১ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৭ হাজার ৯৮৮টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪২ হাজার ৬৮টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ২৪৫টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৫০ হাজার ৩০১টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ৬ লাখ ১৯ হাজার ১৪৬টি।
করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৪৯৮ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া ২৪ ঘন্টায় কোভিড বিষয়ক টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন ৪ হাজার ৩৯৩ জন। এ পর্যন্ত শুধু কোভিড বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেছেন ৩ লাখ ৫৫ হাজার ৮৯৭ জন। প্রতিদিন ৩৫ জন চিকিৎসক ও ১০ জন স্বাস্থ্য তথ্যকর্মকর্তা দুই শিফটে মোট ৯০ জন টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৩ হাজার ১৬৯ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৯ লাখ ৪০ হাজার ৬০৭ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫৬ লাখ ৬৩ হাজার ২৩১ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ৯৬ হাজার ৩৪৭ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২ কোটি ৯৪ লাখ ৪৪ হাজার ১৯৮ জন এবং ৯ লাখ ৩১ হাজার ৩২১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।