বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (প্রথম কিস্তি) : ঢাকা আঙ্কারার সাথে সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহী : প্রধানমন্ত্রী

197

বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (প্রথম কিস্তি)

শেখ হাসিনা-তুরস্ক

ঢাকা আঙ্কারার সাথে সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহী : প্রধানমন্ত্রী

 

‘তিনি (বঙ্গবন্ধু) মানব কল্যাণে বিশ্বব্যাপী শান্তি ও নিরাপত্তার ওপর জোর দিয়েছিলেন। তাঁর নীতি- সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো প্রতি শত্রুতা নয়-আমাদের পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তি।’

বিশ্বব্যাপী বর্তমান করোনাভাইরাস মহামারী সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে বিশ্বজুড়ে বেশিরভাগ দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং অর্থনীতি বিপর্যস্ত হওয়ায় বিশ্ব একটি কঠিন সময় পার করছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশে আমরা সফলভাবে এ ভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছি। একই সাথে আমাদের সময়োপযোগী ও যথাযথ ব্যবস্থা এবং প্রণোদনা প্যাকেজগুলোও এ মারাত্মক রোগের বিপর্যয়কর প্রভাব হ্রাস করতে সক্ষম হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার এ পর্যন্ত দেশের জিডিপির ৪ দশশিক ০৩ শতাংশ সমতুল্য ১৩ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের একগুচ্ছ কোভিড -১৯ পুনরুদ্ধার প্যাকেজ ঘোষণা করেছে।

শেখ হাসিনা মারাত্মক মহামারী মোকাবেলায় সাফল্যের জন্য তুর্কি নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে এর চিকিৎসা সরবরাহ প্রেরণের উদ্যোগেরও আমিও প্রশংসা করি।’

বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বিকাশমান অর্থনীতি হিসাবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহামারীজনিত কারণে প্রাথমিকভাবে এক-দু’মাস কিছুটা মন্থরতা দেখানোর পরে জুলাই থেকে দেশের রফতানি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে।

তিনি বলেন, ‘দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন রেকর্ড ৩৯.৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আমরা এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হওয়ার সঠিক পথে রয়েছি।’

শেখ হাসিনা সরকার এবং তার নিজের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা সংকটসহ বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশকে সহায়তা প্রদানের জন্য তুরস্কের সরকার ও জনগণকে ধন্যবাদ জানান।

প্রধানমন্ত্রী তুর্কি ভাষায় প্রকাশিত বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীর ই-ভার্সন উদ্বোধন করেন।

তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার বক্তৃতায় বলেন, তুরস্ক এবং বাংলাদেশের ভ্রাতৃপ্রতীম সম্পর্কের শিকড় অনেক গভীরে প্রোথিত। তিনি বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে ভারত উপমহাদেশের মানুষের দ্ব্যর্থহীন সমর্থনের কথা আমরা সবসময় স্মরণ করি।’

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ব্যাপক সাফল্যের প্রশংশা করে চাভুসোগলু বলেন, একটি স্থিতিশীল অর্থনীতি নিয়ে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় একটি সাফল্যের গল্প। তিনি বলেন, শক্তিশালী অর্থনীতি এবং বিপুলসংখ্যক যুব জনসংখ্যা নিয়ে বাংলাদেশ হবে এশিয়ায় আমাদের অন্যতম প্রধান অংশীদার।

তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গার এক বিপুল জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশের বদান্যতার ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং তার ও তুরস্কের ফাস্ট লেডির রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনের কথা স্মরণ করেন।

তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায় তুরস্কের চ্যান্সেরি ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য ঢাকা সফরে বাংলাদেশ পররষ্ট্রমন্ত্রীর আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন।

আঙ্কারায় বাংলাদেশ চ্যান্সেরি কমপ্লেক্স নির্মাণ কাজ ৩ সেপ্টেম্বর সফলভাবে শেষ হয়।

কমপ্লেক্সটির মূল বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে রয়েছে চ্যান্সারি বিল্ডিং, দূতাবাসের আবাসিক ভবন, ২২৯ আসনের ‘বিজয় একাত্তর’ নামক হাইটেক অডিটোরিয়াম, স্বয়ংক্রিয় যান্ত্রিক ও বৈদ্যুতিক সিস্টেম, মসজিদ, জিমনেসিয়াম, বাংলাদেশী আইটেমের জন্য প্রদর্শন কেন্দ্র, বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ও আর্থ-সামাজিক বিকাশের ওপর রেফারেন্স বইসহ প্রন্থাগার।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসের প্রতিচ্ছবি হিসাবে কমপ্লেক্সে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি আবক্ষ ভাস্কর্য ও একটি শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়েছে।

এছাড়া, কমপ্লেক্সে ‘অজেয় বাংলাদেশ’ শিরোনামের একটি ৩৬ বর্গমিটার ম্যুরাল এবং পাশাপাশি বাংলাদেশের গ্রামীণ জীবন নিয়ে পোড়ামাটির কাজও করা হয়েছে।

বাসস/এসএইচ/অনু-এইচএন/২০৫৫/আরজি