চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ১০ প্রকল্পের অগ্রগতি জানালেন চেয়ারম্যান

673

চট্টগ্রাম, ১২ সেপ্টেম্বর , ২০২০ (বাসস) : চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) গ্রহণ করা ১০টি চলমান প্রকল্পের অগ্রগতি জানিয়েছেন সংস্থার চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ।
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি নিয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন তিনি।
এম জহিরুল আলম দোভাষ বলেন, তিনি দায়িত্ব নেয়ার সময় চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত সিটি আউটার রিং রোড প্রকল্পের সড়কটি ছিলো পুরো মাটির। সড়কটি এখন কার্পেটিং করে টোল রোড দিয়ে গাড়ি চলাচলের উপযোগী করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ৯২ শতাংশ কাজ শেষ হয়ে গেছে এই প্রকল্পের। বাকি কাজ ৬ মাস থেকে ১ বছরের মধ্যে শেষ হবে।
তিনি বলেন, কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক কাম বাঁধ নির্মাণের একটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই প্রকল্পের প্রায় ২৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে তৈরির প্রকল্প নেয়া হয়। মাঝখানে সেটা আটকে যায়। তিনি দায়িত্ব নেয়ার পর আবার কাজ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় প্রাথমিক কাজ শেষ হয়েছে। সবমিলিয়ে এই প্রকল্পের অগ্রগতি প্রায় ৩৬ শতাংশ।
সিডিএ চেয়ারম্যান বলেন, চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল পুন: খনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়নের কাজ চলছে। সিডিএ’র মাধ্যমে প্রকল্পটি সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর করছে। এ প্রকল্পে ৩৫ শতাংশ আর্থিক অগ্রগতি এবং ৫০ শতাংশ ভৌত অগ্রগতি হয়েছে। ‘এই কাজটিও বন্ধ ছিলো। আমি দায়িত্ব নেয়ার পর আবার শুরু করেছি। গত এক বছরে আমরা অনেকদূর এগিয়ে গেছি। যার কারণে এবার চট্টগ্রাম শহরে জলাবদ্ধতা হয়নি। কিছু জায়গায় জোয়ারের পানি উঠেছে। স্লুইজ গেট বন্ধ করে দিলে সেটার সমাধানও হয়ে যাবে। ’
দোভাষ বলেন, বায়েজিদ বোস্তামি থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত বাইপাস সড়ক হয়েছে। এই কাজের আর্থিক অগ্রগতি ৮১ শতাংশ। ভৌত অগ্রগতি ৯০ শতাংশ। এছাড়া বাকলিয়া এক্সেস রোড নির্মাণ প্রকল্পের কাজে ৮৩ শতাংশ ভৌত অগ্রগতি হয়েছে। আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৬০ শতাংশ।
সিডিএ চেয়ারম্যান বলেন, রাজস্ব খাত থেকে আমরা সল্টগোলায় একটি শপিং মলসহ আধুনিক বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করছি। এই শপিং মলের ৯৭ শতাংশ ভৌত অগ্রগতি শেষ হয়েছে। আর্থিক অগ্রগতি প্রায় ৯০ শতাংশ।
তিনি বলেন, নাসিরাবাদে একটি সিডিএ স্কয়ার ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্পের কাজ চলছে। লটারির ভিত্তিতে এখানে ফ্ল্যাট দেয়া হবে। এই প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি ২৭ শতাংশ। আর ভৌত অগ্রগতি ৪৫ শতাংশ। এছাড়াও দেওয়ান হাট পোস্তার পাড় এলাকায় একটি ১০ তলা বিশিষ্ট ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্পের কাজ চলছে। এই প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি ৮৩ শতাংশ। আর ভৌত অগ্রগতি ৮৪ শতাংশ।
দোভাষ বলেন, অনন্যা উপশহর এলাকা তৈরি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। সেটা আমাদেরকেই বাস্তবায়ন করতে হবে। আমরা ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলে টাকা পেলে, জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ভূমি অধিগ্রহণ করবো। এখন জায়গা অধিগ্রহণ করার জন্য যৌথ জরিপ চলছে।
চট্টগ্রাম শহর নিয়ে সিডিএ নতুন মাস্টার প্ল্যান তৈরি করছে জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ বলেন, চট্টগ্রাম শহর নিয়ে মাস্টার প্ল্যান তৈরির কাজ শিগগির শুরু হবে। মাস্টার প্ল্যান তৈরির কাজ এখন প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনসট্রাকশন বিগ্রেডের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক কর্নেল আবুল হাসনাত মো. সায়েম, সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি শাহীনুল ইসলাম খান। এ সময় সিডিএ’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।