নেত্রকোনায় ট্রলারডুবিতে নিহতদের মধ্যে সুনামগঞ্জের ৯ জন

386

সিলেট, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০ (বাসস) : নেত্রকোনার কলমাকান্দায় যাত্রীবাহী ট্রলারডুবির ঘটনায় উদ্ধার হওয়া মরদেহের মধ্যে ৯ জনই সুনামগঞ্জ জেলার বাসিন্দা। নিহতের পরিবার প্রতি ২০ হাজার টাকা করে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
আজ বিকেল ৬ টা পর্যন্ত ট্রলার ডুবির ঘটনায় মোট ১০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে নেত্রকোনার ১ জন, সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা উপজেলার ২ জন ও মধ্যনগর উপজেলার ৭ জন রয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৫ জন শিশু, ৩ জন নারী ও ২ জন পুরুষের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে আছেন দুই পরিবারের ৬ জন। আর জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে ৫ জনকে। নিখোঁজ অন্যান্যদেরকে উদ্ধার করতে স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উদ্ধার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জের মধ্যনগর থেকে সকালে নেত্রকোনা সদরের ঠাকুরাকোণা ঘাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার পর সকাল ১১টার দিকে কলমাকান্দা উপজেলার বড়কাপন ইউনিয়নের রাজনগর এলাকার গুমাই নদীতে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বালুবাহী ট্রলারের ( ভলগেট) ধাক্কায় ডুবে যায় যাত্রীবাহি ওই ট্রলার। পরে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা বিকেল পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে মোট ১০ জনের লাশ উদ্ধার করেন।
দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা উপজেলার ইনাতনগর গ্রামের সাহেব আলীর স্ত্রী মজিদা আক্তার (৫০), মধ্যনগর এলাকার কামারউড়া গ্রামের আলমগীর হোসেনের ছেলে অনিক (৭), একই গ্রামের হাবিকুলের স্ত্রী লাকি আক্তার (৩০), তার দুই সন্তান টুম্পা আক্তার (৫) ও জাহিদ হোসেন (৩), ধর্মপাশা উপজেলার জামালপুর গ্রামের জোবাইরের ছেলে মোজাহিদ (৪), একই গ্রামের আব্দুল করিমের স্ত্রী সুলতানা আক্তার (৪৫), ইনাতনগর গ্রামের ওয়াহাব আলীর স্ত্রী লুৎফুন্নাহার ও তার আড়াই বছরের ছেলে ইয়াসিন। একই পরিবারের মনিরা (৫) নামের আরও এক শিশু নিখোঁজ রয়েছে। এছাড়া মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে নেত্রকোনা সদরের মেদনী গ্রামের আবুচানের স্ত্রী হামিদা খাতুনের (৪৫)।এছাড়া নিখোঁজ রয়েছেন, ইনাতনগরের আব্দুল হান্নানের ছেলে রতন মিয়া (৩৫), একই এলাকার ফাতেমা আক্তার (৩৫) ও মোফাজ্জল।
সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনার ২ জেলা প্রশাসক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ জানান, নৌ দুর্ঘটনায় নিহত ১০ জনের লাশ উদ্ধার হওয়ার পর পুলিশ তাদের সুরতহাল তৈরী করে নিহতদের স্বজনদের কাছ লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বিকেল নিহতদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিবারের সাথে দেখা করে সমবেদনা জানিয়ে নিহতদের জনপ্রতি তাৎক্ষনিক ভাবে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে নগদ ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। পরবর্তীতে নিহতের পরিবারের প্রয়োজন বিবেচনা করে সরকারের পক্ষ থেকে আরো সহায়তা দেয়া হবে বলে জানান তিনি। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় ধর্মপাশা ও মধ্যনগরের নিহতদের পরিবারে চলছে শোকের মাতম।
যাত্রীবাহি ট্রলারে ধাক্কা দেওয়া বালুবাহি ভলগেটকে আটক করে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। ভলগেট মালিকের বিরুদ্ধ মামলার প্রক্রিয়া চলছে।