বাসস ক্রীড়া-৩ : প্রিমিয়ার লিগে লিভারপুল, ম্যান সিটি কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি

114

বাসস ক্রীড়া-৩
ফুটবল-প্রিমিয়ার লিগ
প্রিমিয়ার লিগে লিভারপুল, ম্যান সিটি কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি
লন্ডন, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ (বাসস) : লিভারপুর ও ম্যানচেস্টার সিটি গত তিন মৌসুমে নিজেদের যোগ্যতার প্রমান দিলেও পুন:জাগতির ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও চেলসিও যে আসন্ন লিগে শীর্ষ এই দুই দলকে ছেড়ে কথা বলবে না তা সহজেই অনুমেয়। শিরোপা দৌঁড়ে নিজেদের এগিয়ে নিয়ে যাবার লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই ট্রান্সফার মার্কেটে ইউনাইটেড ও চেলসি দক্ষতায় পরিচয় দিয়েছে।
৩০ বছর পর প্রথম লিগ শিরোপা জয়ের পর লিভারপুলের জন্য চ্যালেঞ্জটা অন্য যেকোন দলের তুলনায় কিছুটা হলেও ভিন্ন। ক্লাবটি এখন ইতিহাসের বোঝা থেকে রেহাই পেয়েছে। কিন্তু একইসাথে ২০২০-২১ মৌসুমে প্রত্যাশার চাপটাও বেড়ে গেছে। জার্গেন ক্লপের দলের জন্য টানা দুই মৌসুম নিজেদের শীর্ষ লড়াইয়ে টিকিয়ে রাখাটাই এখন মূল লক্ষ্য। গত দুই মৌসুমে লিভারপুল সব মিলিয়ে ১৯৬ পয়েন্ট অর্জন করেছিল।
লেফট-ব্যাক কোস্তাস টিসিমিকাসকে শুধুমাত্র দলে এখনো পর্যন্ত দলে ভিড়িয়েছে রেড ডেভিলসরা। এন্ডি রবার্টসনের ব্যাক-আপ হিসেবেই তিনি দলে এসেছেন। করোনাভাইরাসের কারনে আর্থিক ক্ষতির কারনে টিমো ওয়ার্নরকে দলে নেয়া হয়নি। তার পরিবর্তে এই জার্মান তারকা চেলসিতে যোগ দিয়েছেন। এর ফলে রবার্তো ফিরমিনো, মোহাম্মদ সালাহ ও সাদিও মানের উপরই এবারও ভরসা করতে হচ্ছে।
তবে একটি স্বস্তির বিষয় হলো নতুন মৌসুমকে সামনে রেখে ক্লপ এবার প্রস্ততির যথেষ্ঠ সময় পেয়েছেন। তার মূল তিন প্রতিদ্বন্দ্বী আগস্ট পর্যন্ত ইউরোপীয়ান প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত ছিল।
ম্যানচেস্টার সিটি লিওনেল মেসিকে দলে নিতে ব্যর্থ হলেও যেকোন ভাবেই পেপ গার্দিওলার দলকে ব্যর্থ মৌসুম শেষে নিজেদের ফিরিয়ে আনার পথ খুঁজতে হবে। লিভারপুলের তুলনায় আগের মৌসুমে ১৭টি গোল বেশী করলেও ১৮ পয়েন্টের ব্যবধানে সিটিকে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে থেকেই লিগ শেষ করতে হয়েছে। বোর্নেমাউথ থেকে ৪০ মিলিয়ন পাউন্ডে ন্যাথান একেকে দলে ভিড়িয়ে রক্ষনভাগ শক্তিশালী করেছেন গার্দিওলা। অক্টোবরে ট্রান্সফার উইন্ডো বন্ধ হবার আগে ইতিহাদ স্টেডিয়ামে আসার কথা রয়েছে এই তারকা ডিফেন্ডারের। লিওওে সানের স্থানে স্প্যানিশ ফেরান টরেসকে আক্রমনভাগে দেখা যাবে। তবে ডেভিড সিলভার প্রস্থানে ২০ বছর বয়সী ফিল ফোডেনের সামনে নিজেকে আরো ভাল করে প্রমানের সুযোগ এসেছে। গার্দিওলার শেষ মৌসুমে অন্তত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপাটা জয় করাই মূল লক্ষ্য সিটির। কাতালান এই কোচের সাথে এ বছরই চুক্তি শেষ হয়ে যাচ্ছে সিটিজেনদের। ইউরোপের শীর্ষ প্রতিযোগিতায় গত চার বছর যাবত কোয়ার্টার ফাইনালে গন্ডি পার হতে না পারায় গার্দিওলাকে প্রায়ই সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে।
গত মৌসুমের শেষ ভাগে নিজেদের দারুনভাবে লড়াইয়ে ফিরিয়ে এনে তৃতীয় স্থানে থেকে লিগ শেষ করেছিল ইউনাইটেড। জানুয়ারিতে ব্রুনো ফার্নান্দেসকে দলে ভেড়ানোর পর টানা ১৪ ম্যাচ অপরাজিত রয়েছে ওলে গানার সুলশারের দল। আক্রমনভাগে তিন তরুন মার্কোস রাশফোর্ড, এন্থনি মার্শাল ও ম্যাসন গ্রীনউড ও মধ্যমাধে নতুন আসা ডনি ফন বিককে নিয়ে এবার লিভারপুল, সিটি ও চেলসিকে কঠিন পরীক্ষায় ফেলতে প্রস্তুত ইউনাইটেড। যদিও সুলশারের দলটি মধ্য আগস্টে তাদের মৌসুম শেষ করেছে। ইউরোপা লিগের সেমিফাইনালে সেভিয়ার কাছে পরাজিত হয়ে বিদায় নিতে হয়। যে কারনে খেলোয়াড়রা কিছুটা হলেও পরিশ্রান্ত অবস্থায় রয়েছে। আগামী নয় মাস তাই খেলোয়াড়দের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জই অপেক্ষা করছে।
ট্রান্সফার উইন্ডোতে এবার সবচেয়ে সড়ব ছিল ব্লুজরা। করোনা মহামারী সত্তেও ট্রান্সফার মার্কেটে ইতোমধ্যেই প্রায় ২০০ মিলিয়ন ইউরো ব্যয় কওে ফেলেছে চেলসি। ওয়ার্নার, কেই হাভার্টজ, হাকিম জিয়েচ ও বেন চিলওয়েল ছাড়াও ফ্রি ট্রান্সফার সুবিধায় পিএসজির বিদায় ব্রাজিলিয়ান অধিনায়ক থিয়াগো সিলভাকে দলে ভিড়িয়েছে। আরো কয়েকজনের নাম শোনা যাচ্ছে, যাদের মধ্যে অন্যতম হলেন রেনের গোলরক্ষক এডুয়ার্ডো মেন্ডি।
কোচ ফ্র্যাংক ল্যাম্পার্ড তার প্রথম বছরেই চেলসিকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জায়গা করে দিয়ে যোগ্যতার প্রমান দিয়েছেন। যদিও তার মেয়াদেই রিয়াল মাদ্রিদের কাছে এডেন হ্যাজার্ডকে ছাড়তে হয়েছে। এবারের মৌসুমে ল্যাম্পার্ডের ওপর প্রত্যাশার চাপ আরো বেশী। বিশেষ করে গত মৌসুমে ৫৪ গোল হজম করা চেলসির রক্ষনভাগ নিয়ে নতুন করে পরিকল্পনা করাই ল্যাম্পার্ডেও সামনে মূল চ্যালেঞ্জ।
বাসস/নীহা/১৫৪৫/স্বব