বাসস প্রধানমন্ত্রী-৪ (তৃতীয় ও শেষ কিস্তি) : সামরিক অভিধান থেকে ‘মার্শাল ল’ শব্দটি বাদ দিন : প্রধানমন্ত্রী

179

বাসস প্রধানমন্ত্রী-৪ (তৃতীয় ও শেষ কিস্তি)
প্রধানমন্ত্রী-সশস্ত্র বাহিনী
সামরিক অভিধান থেকে ‘মার্শাল ল’ শব্দটি বাদ দিন : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পদোন্নতির ক্ষেত্রে যোগ্যতা, দক্ষতা, দেশপ্রেম, সততা, আনুগত্য, অভিজ্ঞতা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী এবং নেতৃত্বের গুণগত মান বিবেচনা করতে বলেন।
তিনি সশস্ত্র বাহিনীর সিনিয়র কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘সবার মধ্যে যাতে আস্থা বৃদ্ধি পায়, সেজন্য ন্যায্যতার ভিত্তিতে পদোন্নতি দিন। আমি জানি, পোস্ট সীমিত বলে বহু লোক এর জন্য যোগ্য হিসাবে বিবেচিত হতে পারে। তবু সকলকে পদোন্নতি দেওয়া সম্ভব হবে না। তা সত্ত্বেও যারা পদোন্নতির জন্য সত্যিকারের যোগ্য তাদেরই পদোন্নতি নিশ্চিত করা উচিত।’
তিনি বলেন, ভবিষ্যতে পদোন্নতি দেওয়ার সময় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস, পেশগত দক্ষতা, নেতৃত্ব, শৃঙ্খলা, সততা, সত্যবাদিতা, মাঠের অভিজ্ঞতা, আনুগত্য এবং কার্যকারিতা বিবেচনা করা উচিত।
তিনি আরো বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস ও দেশপ্রেমের পাশাপাশি বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও উন্নয়নে বিশ্বাসীদের দায়িত্ব প্রাপ্তি নিশ্চিত করুন, যাতে তারা আগামী দিনে দেশকে সঠিক দিকে নিয়ে যেতে পারে।’
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা শেখ হাসিনা বলেন, উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বুদ্ধিমত্তা, বিচার-বিবেচনা ও নিরপেক্ষতার বিষয়ে তার আস্থা রয়েছে এবং তারা পদোন্নতির জন্য যথাযোগ্য ব্যক্তিদের বেছে নেবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সেনাবাহিনীতে নারী অফিসার নিয়োগে তার উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, নারীরা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে খুবই ভালো করছেন এবং এভাবে সবার প্রশংসা অর্জন করছেন।
তিনি আরো বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য সত্যিই গর্বের বিষয় যে ২৭ জন নারী কর্মকর্তা প্যারাট্রোপিংয়ে সাফল্য অর্জন করেছেন।’ নারীরা সকল সেক্টরে তাদের দক্ষতা দেখাচ্ছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে বাংলাদেশের দুইজন মহিলা পাইলটের ছবি দেখে আমার মন আনন্দে ভরে উঠেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা দেশের মানুষ সর্বদা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করে।
কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যেও স্বাভাবিক সময়ের মতো প্রতিটি খাতে প্রয়োজনীয় তহবিল বা অর্থ বরাদ্দ রেখে সরকার জাতীয় বাজেট উপস্থাপন করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা সবাইকে এ বিষয়ে কৃচ্ছ্রতা বজায় রাখার আহ্বান জানান।
তিনি আরো যোগ করেন: ‘এটা সত্য যে আমরা একটি বিশাল বাজেট দিয়েছি। তবে, এখনই সমস্ত অর্থ ব্যয় করার কথা ভাবা উচিত নয়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার মহামারীর অর্থনৈতিক প্রভার কাটাতে বড় শিল্পকে ৩০ হাজার কোটি টাকা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে ২০ হাজার কোটি টাকা এবং আরএমজি কারখানাগুলোকে বেতন দেয়ার জন্য ১০ হাজার কোটি টাকা দিয়ে বিভিন্ন উদ্দীপনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা অর্থনীতির চাকা সচল রাখার লক্ষ্যে অন্যদের জন্যও প্যাকেজ ঘোষণা করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনভাইরাস প্রাদুর্ভাবের ফলে রেমিট্যান্স হ্রাস পাবে বলে অনেক মহলের আশঙ্কা সত্ত্বেও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ৩৯.৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার এ লক্ষ্যে প্রবাসীদের জন্য প্রণোদনা ঘোষণা করার কারণে দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ রেমিট্যান্স রয়েছে।
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারী জনিত কারণে বিশ্ব দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন হলে বাংলাদেশ যাতে খাদ্য সঙ্কটের মুখোমুখি না হয়, সেজন্য তাঁর সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে।
শেখ হাসিনা খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রতি খন্ড আবাদি জমি চাষ করার জন্য সকলকে অনুরোধ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিত করতে কৃষিতে উদ্দীপনা প্যাকেজ প্রদানসহ সকল ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। আমরা একটি বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছি যে সর্বশক্তিমান আল্লাহর রহমতে দেশে খাদ্য সংকট দেখা দেবে না।’
তিনি বলেন, তিনি ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এক ইঞ্চি জমিও যাতে অনাবাদি পড়ে না থাকে সে বিষয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
করোনা ভাইরাস মহামারী চলাকালীন জনগণকে সকল প্রকারের সহায়তা দেয়ার জন্য সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বড় কাজ হচ্ছে মানুষের জন্য কাজ করা এবং আপনারা সেই কাজটি দক্ষতার সাথে করে যাচ্ছেন।’
বাসস/এএইচজে-এসএইচ/অনু-এইচএন/২০৪০/আরজি