নেশন্স লিগ : বড় জয়ে স্পেনের হয়ে ফাতির রেকর্ড

244

মাদ্রিদ, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ (বাসস) : নেশন্স লিগে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ইউক্রেনকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে স্পেন। বড় এই জয়ে স্পেনের হয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন আনসু ফাতি। মাত্র ১৭ বছর ৩১১ দিন বয়সে জাতীয় দলের কনিষ্ট খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নেমে গোল করার নতুন রেকর্ড গড়েছেন বার্সেলোনার এই তরুণ ফরোয়ার্ড।
মাদ্রিদের আলফ্রেডো ডি স্টেফানো স্টেডিয়ামে ম্যাচের ৩২ মিনিটে স্পেনের হয়ে তৃতীয় গোলটি করেন ফাতি। এর আগে ম্যাচের তিন মিনিটেই তার আদায় করা পেনাল্টি থেকে গোল করে স্বাগতিকদের এগিয়ে দিয়েছিলেন সার্জিও রামোস। ২৯ মিনিটে ড্যানিয়েল ওলমোর এসিস্টে ব্যবধার দ্বিগুন করেন রামোস। এরপর ঐতিহাসিক গোলটি করেন স্পেনের হয়ে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মত মূল একাদশে খেলতে নামা ফাতি। এর মাধ্যমে তিনি ১৯২৫ সালে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ১৮ বছর বয়সে তিনটি গোল করে এতদিন পর্যন্ত সবচেয়ে কম বয়সী স্প্যানিশ খেলোয়াড় হিসেবে হুয়ান এরাজকুইনের রেকর্ডটি ভঙ্গ করেছেন।
ম্যানচেস্টার সিটির নতুন চুক্তিভূক্ত ফার্নান্দো তোরেস ৮৪ মিনিটে দলের হয়ে চতুর্থ গোলটি করেন। এর মাধ্যমে নেশন্স লিগের এ-লিগের গ্রুপ-৪’এ প্রথম জয় তুলে নিল স্পেন। লুইস এনরিকের দলটি বৃহস্পতিবার প্রথম ম্যাচে জার্মানীর সাথে ১-১ গোলে ড্র করেছিল। নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচেও সুইজারল্যান্ডের সাথে ১-১ গোলে ড্র করে গ্রুপের তৃতীয় স্থানে রয়েছে জার্মানী ।
জার্মানীর বিপক্ষে বদলী খেলোয়াড় হিসেবে দ্বিতীয়ার্ধে খেলতে নেমে নিজেকে প্রমান করেছিলেন ফাতি। ঐ ম্যাচের পর এনরিকের বিবেচনায় আক্রমনভাগকে শক্তিশালী করতে প্রথমবারের মত মূল একাদশে সুযোগ করে নেন ফাতি। আর প্রথম এই সুযোগেই কোচের আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন এই বার্সা তরুণ। তবে তার এই ইতিহাস সমর্থকরা মাঠে বসে উপভোগ করতে পারলো না।
ম্যাচ শেষে এনরিকে বলেছেন, ‘এই বয়সে একজন খেলোয়াড়কে নিয়ে পরীক্ষা করার সুযোগটা থাকে। কিন্তু ফাতি জানে কিভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে হবে এবং কোচের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হবে। তার মধ্যে অসাধারণ এক প্রতিভা আছে।’
জাতীয় দলের জার্সি গায়ে এই গোলের মাধ্যমে সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে ফাতি এখন তিনটি রেকর্ডের মালিক। স্পেন ছাড়াও লা লিগা ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও বার্সেলোনার হয়ে সবচেয়ে কম বয়সে গোলের রেকর্ড গড়েছেন। এনরিকে আরো বলেছেন, ‘আমরা যখন দল বাছাই করি তখন বয়সের দিকে তাকাই না। এর অর্থ এই নয় যে আমরা যে কোন খেলোয়াড়কে যাচাই না করেই দলভূক্ত করি। এই বয়সে ভুলের একটি সুযোগ থাকে। কিন্তু একইসাথে ম্যাচের অভিজ্ঞতা অর্জনও জরুরী। আত্মবিশ^াসটাও এর মাধ্যমে অর্জিত হয়।’
গিনি-বিসাউতে জন্ম নেয়া ফাতি খুব ছোট বয়সেই পরিবারের সাথে সেভিয়াতে চলে আসেন। মাত্র ১০ বছর বয়সে বার্সেলোনার লা মাসিয়া একাডেমীতে যোগ দেন। গত মৌসুমে মূল দলের হয়ে তার অভিষেক হয়। বার্সার ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ট খেলোয়াড় হিসেবে তিনি মূল দলে খেলার সুযোগ পান। ওসাসুনার বিপক্ষে বদলী বেঞ্চ থেকে উঠে এসে গোল করে লা লিগায় ইতিহাস রচনা করেন। এরপর সেপ্টেম্বরে ১৬ বছর বয়সে ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে প্রথম একাদশে সুযোগ পেয়েও গোল করেছিলেন। পরের দিন বার্সেলোনার দৈনিক মুনডো ডিপোর্তিভো তে লেখা হয়েছিল, ‘একজন তারকার জন্ম হয়েছে’। ডিসেম্বরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে গোল করে রেকর্ডে ধারা অব্যাহত রাখেন।
চলতি বছরের শুরুতেই স্পেনের হয়ে ফাতির অভিষেক হবার কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারনে আন্তর্জাতিক সূচি পিছিয়ে যাওয়াও কিছুটা দেরীতে হলেও জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়ালেন ফাতি।
তিন মিনিটে রামোসের পেনাল্টি থেকে গোলের পর ইউক্রেন আর ফিরে দাঁড়াতে পারেনি। নিয়মিত বিরতিতে গোল হজম করে তারা ম্যাচ থেকে ছিটকে যায়।