বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি) : নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণের কারণ উদঘাটনের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

162

বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি)
প্রধানমন্ত্রী-নারায়ণগঞ্জ-বিস্ফোরণ
নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণের কারণ উদঘাটনের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

শোকপ্রস্তাবের ওপর বক্তব্যে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বর্তমান সংসদের দুই সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন ও মো. ইস্রাফিল আলমের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
‘দুঃখের বিষয় যে বিশেষ করে করোনভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পরে আমরা একের পর এক সংসদে সহকর্মীদের হারিয়েছি। আর এই সময়ের মধ্যে অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং নেতাকর্মীও মারা গেছেন।’
প্রধানমন্ত্রী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতদের জন্যও শোক প্রকাশ করেন এবং কোভিড-১৯ রোগীদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।
তিনি দেশের প্রথম মহিলা স্বরাষ্ট্র্রমন্ত্রী ও আ. লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহারা খাতুনের মৃত্যুকে দল ও জাতির জন্যও অপূরণীয় ক্ষতি হিসাবে বর্ণনা করেন।
তিনি বলেন, ‘তিনি (সাহারা খাতুন) একজন সৎ, সাহসী ও নিবেদিত রাজনীতিবিদ ছিলেন এবং এইচ এম এরশাদ ও খালেদা জিয়া সরকারের অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়েও সম্মুখ সারি থেকে সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন।’ সাহারা খাতুনের সাহসিকতার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদ্রোহ হওয়ার পরে তিনি বিডিআর সদর দফতরে যান (২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি) এবং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেক লোককে (বিডিআর বন্দীদশা থেকে) বাঁচান।
শেখ হাসিনা যোগ করেন, ‘সাহারা আপা আমাকে বলেছিলেন যে তিনি কোনো রকমে বিডিআর (সদর দফতর) থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন। কারণ তারা (বিডিআর বিদ্রোহীরা) তাকে আক্রমণ করতে চেয়েছিল। সাধারণ কারো পক্ষে এটা সম্ভব হতে পারে না।’
এই সময় যারা ক্ষমতায় আসতে পারেনি তারা এই হত্যাযজ্ঞের সাথে জড়িত থাকতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘একদিন এর সাথে জড়িতদের নাম (বিডিআর বিদ্রোহ) অবশ্যই প্রকাশিত হবে।’
ছয় বছরের প্রবাস জীবন কাটিয়ে ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে তিনি সবসময় সাহারা খাতুনকে তার পাশে পেয়েছিলেন স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সাহারা খাতুন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার পর জনগণকে নিরাপদ জীবন দিয়েছিলেন।’ সভায় প্রধানমন্ত্রী ই¯্রাফিল আলমের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, তার মৃত্যুতে দেশ একজন দক্ষ সংসদ সদস্যকে হারিয়েছে।
ভারতের সদ্যপ্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্ট হত্যাকা-ের পরে তাদের খারাপ সময়ে সর্বদা তাদের পাশে ছিলেন। শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের হত্যাযজ্ঞে সবকিছু হারিয়ে শরণার্থী হিসাবে ভারতে আশ্রয় নেয়ার পর তিনি উপমহাদেশের এই প্রবীণ রাজনীতিবিদ এবং তাঁর পরিবারকে তাদের নিকটতম ও প্রিয়জন হিসাবে পেয়েছিলেন।
তিনি বলেন, দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগে পদ্মাসেতু নির্মাণে তহবিল যোগান স্থগিত করার পর তিনি (প্রণব মুখার্জি) বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বাংলাদেশের পক্ষে লড়াই করেছেন।
প্রণব মুখার্জি অত্যন্ত মেধাবী ও প্রাজ্ঞ রাজনীতিবিদ ছিলেন এবং কংগ্রেসের নেতা হওয়া সত্ত্বেও সবাই তাকে সম্মান করত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর মৃত্যুতে উপমহাদেশ একজন সত্যিকারের নেতাকে হারিয়েছে।
জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের বড় মেয়ে শেখ হাসিনা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের দুই সেক্টর কমান্ডার মেজর জেনারেল (অব.) চিত্তরঞ্জন দত্ত (সিআর দত্ত নামে পরিচিত), বীর উত্তম এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) আবু ওসমান চৌধুরীর অবদানের কথা স্মরণ করে বলেন, ‘সিআর দত্ত ও আবু ওসমান চৌধুরী দুজনেই দেশের স্বাধীনতা অর্জনে সাহসিকতার সাথে বিরাট ভূমিকা পালন করেছিলেন।’
আলোচনায় অংশ নেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মুন্নুজন সুফিয়ান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, এমপি। এছাড়া বেগম মতিয়া চৌধুরী, এমপি, শাজাহান খান, এমপি, আবদুল মতিন খসরু, এমপি, বিরোধী দলের নেতা গোলাম মুহাম্মদ কাদের, এমপি, বিরোধী দলের চিফ হুইপ মো. মশিউর রহমান রাঙ্গা, এমপি, মো. শহীদুজ্জামান সরকার, এমপি, শামসুল আলম দুদু, এমপি, বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বাসস/এএইচজে/এসএইচ/অনু-এইচএন/২০২০/কেএমকে